Naya Diganta

ভিয়েতনাম ও ভারত থেকে চাল কেনা হচ্ছে

ভারত ও ভিয়েতনাম থেকে জিটুজি পর্যায়ে তিন লাখ ৩০ হাজার টন সেদ্ধ ও আতপ চাল ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এ ছাড়া দুবাই-সৌদি আরব থেকে সার, রাশিয়া থেকে পাঁচ লাখ টন গম ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে । গতকাল বুধবার দুপুরে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এসব ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো: আব্দুল বারিক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
আব্দুল বারিক বলেন, ভারত থেকে আনা প্রতি টন চালের দাম পড়বে ৪৪৩.৫০ ডলার। ভিয়েতনামের প্রতি টনের দাম পড়বে সেদ্ধ ৫২১ ডলার এবং আতপ চাল ৪৯৪ ডলার। তিনি জানান, ক্রয় কমিটির টেবিলে ১৫টি প্রস্তাব উপস্থাপিত হয়। সবগুলো প্রস্তাবই অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় ভারত থেকে এক লাখ টন নন-বাসমতী সেদ্ধ চাল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৪১৭ কোটি ৫ লাখ টাকা। ৭০ হাজার টন লটের চাল আসবে পোর্টের মাধ্যমে। প্রতি কেজি চালের দাম পড়বে ৪২. ১৩২৫ টাকা। ৩০ হাজার টন লটের চাল ল্যান্ডে আসবে। এতে প্রতি কেজি ৪০.৭০ টাকা আর প্রতি টনের দাম পড়বে ৪৪৩.৫০ ডলার।
তিনি জানান, ভিয়েতনাম থেকে দুই লাখ টন থাই নন-বাসমতী চাল এবং ভারত থেকে ৩০ হাজার টন আতপ চাল আমদানির প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। নন-বাসমতী চাল প্রতি কেজি ক্রয়মূল্য ৪৯.৪৯ টাকা এবং আতপ চাল ৪৬.৯৩ টাকা। সুপারিশকৃত দরদাতা প্রতিষ্ঠান ভারতের সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট কনজুমার করপোরেশন সোসাইটি লিমিটেড। নন-বাসমতী প্রতি টন ৫২১ ডলার।
৩০ হাজার টন আতপ চাল প্রতি টন ৪৯৪ ডলার। মোট ১ কোটি ২৮ লাখ ৫০ হাজার ডলার। সর্বমোট দুই লাখ ৩০ হাজার টন চাল আমদানিতে খরচ হবে ১১ কোটি ৯০ লাখ ২০ হাজার ডলার। বাংলাদেশী মুদ্রায় এক হাজার ১৩০ কোটি ৬৯ টাকা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ২১ কোটি ৫০ লাখ ডলার (দুই হাজার ৪২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) ব্যয়ে রাশিয়া থেকে পাঁচ লাখ টন গম আমদানি করা হবে। একই সাথে ভারত ও ভিয়েতনাম থেকে তিন লাখ ৩০ হাজার টন সিদ্ধ ও আতপ চাল আমদানি করা হবে।
অতিরিক্ত সচিব আব্দুল বারিক বলেন, টেবিলে উত্থাপিত প্রস্তাবের মধ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় রাশিয়া থেকে পাঁচ লাখ টন গম আমদানির প্রস্তাব। প্রতি কেজি গমের মূল্য ধরা হয়েছে ৪০.৮৫ টাকা। রাশিয়ার একটি কোম্পানিকে সুপারিশ করা হয়েছে। এতে ব্যয় হবে দুই হাজার ৪২ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
কোন কারেন্সিতে কেনা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের প্রস্তাবে টাকার অঙ্ক দেয়া হয়েছে। মিটিংয়ে কোন কারেন্সিতে কেনা হবে সে বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে ডলারে কেনা হবে। সে হিসাবে ২১ কোটি ৫০ লাখ ডলার। প্রতি ডলার ৯৫ টাকা ধরে করা হয়েছে। প্রতি টন ৪৩০ ডলার।
সভায় বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) দেশব্যাপী ডিজিটাল টেরিস্ট্রিয়াল সম্প্রচারের জন্য ১৪৭ কোটি ৬৫ লাখ ৭ হাজার টাকার যন্ত্রপাতি ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ যন্ত্রপাতি সংগ্রহ ও সংস্থাপনের কাজ পেয়েছে বেলজিয়ামের স্টুডিওটেক ও ইতালির গ্রিন পাওয়ার সিস্টেম এসআরএল। এ জন্য ৮১ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ৮৪৩ টাকার ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। একই প্রকল্পের দ্বিতীয় লটের আওতায় যন্ত্রপাতি সংগ্রহ ও সংস্থাপনে স্টুডিওটেকের কাছ থেকে ৩৬ কোটি ৬২ লাখ ৮৭ হাজার ৯২০ টাকার ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রকল্পের তৃতীয় লটের আওতায় যন্ত্রপাতি সংগ্রহ ও সংস্থাপনে ইতালির গ্রিন পাওয়ার সিস্টেম এসআরএলের কাছ থেকে ২৯ কোটি ৬৫ লাখ ১৮ হাজার ১৭৭ টাকার ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
সারের জোগান মেটাতে দুবাই ও সৌদি আরব থেকে এক হাজার ২৮৭ কোটি ৪৫ লাখ ৪১ হাজার টাকা ব্যয়ে এক লাখ ৬০ হাজার টন এমওপি (মিউরেট অব পটাশ) ও ইউরিয়া সার কিনবে সরকার। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মাধ্যমে দুবাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ফেকলো জেনারেল ট্রেডিং এলএলসি নামক প্রতিষ্ঠান থেকে এক লাখ টন এমওপি সার সরাসরি ক্রয় চুক্তির মাধ্যমে ৯৩১ কোটি ৪৯ লাখ টাকার আমদানি প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
পাশাপাশি শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) মাধ্যমে সৌদি আরবের এসআইআইজি অ্যাগ্রি নিউট্রিশন কোম্পানি থেকে ষষ্ঠ লটে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ে ১৭৭ কোটি ৯৮ লাখ ২০ হাজার ৭৫৫ টাকার আমদানিতে অনুমোদন দেয়া হয়।
এ ছাড়া বিসিআইসির মাধ্যমে এসআইআইজি অ্যাগ্রি নিউট্রিশন কোম্পানি থেকে সপ্তম লটে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ে ১৭৭ কোটি ৯৮ লাখ ২০ হাজার ৭৫৫ টাকার আমদানিতে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।