Naya Diganta

ইরানের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধের প্রস্তুতি

ইরানের সেনাবাহিনী

যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল ও সৌদি আরব ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পরিকল্পনা করছে মর্মে মিডিয়ায় জোর আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে গত ১৪ জুলাই জেরুসালেমে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ ঘোষণা এমনই পূর্বাভাস দেয়। বাইডেনের চার দিনের মধ্যপ্রাচ্য সফরের এটি ছিল প্রধান পর্ব। বাইডেন ও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী ইয়ার লাপিদ তেহরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনে বিরত রাখতে যুক্ত ঘোষণায় স্বাক্ষর করেন। বিবৃতিতে বলা হয়, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া রুখতে যুক্তরাষ্ট্র তার ‘জাতীয় শক্তির সব উপাদান’ ব্যবহার করবে এবং ইসরাইলে মার্কিন সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখবে।

উল্লেখ্য, ট্রাম্পের শেষের দিনগুলোতেও নেতানিয়াহু ইরানে একটি টোটাল ওয়্যার শুরুর প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিল। যদিও শেষ মুহূর্তে ট্রাম্প রাজি হননি। ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরাইলের আচরণের প্রসঙ্গে বাইডেন ইসরাইলি চ্যানেল ১২ নিউজকে বলেছেন, ‘ইসরাইল একটি গণতন্ত্র, ইসরাইল আমাদের মিত্র। ইসরাইল আমার বন্ধু এবং আমি ক্ষমা চাইছি না।’

২০১৫ সালে ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র চুক্তি বা জয়েন্ট ক¤িপ্রহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ), যা ডোনাল্ড ট্রাম্প বিনষ্ট করেছিলেন, সেটি বর্তমান চলমান আলোচনায় পুনরুজ্জীবিত হওয়ার আশা দেখা যাচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড যদি তেহরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য প্রস্তুত মনে করে তখন হামলা চালানোর পন্থা ও বিকল্পগুলো পর্যালোচনা করা হবে। ইসরাইল চলমান মার্কিন-ইরান পারমাণবিক আলোচনার বিরোধী।

বহুদিন ধরে, সৌদি আরব, ইসরাইল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে একটি ত্রয়ী হিসেবে কাজ করছে। ইসরাইলি সরকার সৌদি আরবের সাথে গোপন একটি ঘনিষ্ঠ জোট তৈরি করেছে বলে জানা যায়। সৌদি আরব সালাফি জিহাদিবাদ, আলকায়েদা, তালেবান, লস্করই তৈয়বার মতো গোষ্ঠীগুলো থেকে অনেক বাছাই করা যোদ্ধা সংগ্রহ করে কমান্ডো বাহিনী গঠন করেছে যারা যেকোনো পরিস্থিতিতে শিয়াইজমের বিরুদ্ধে লড়তে পারে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, সৌদি আরবের পক্ষ নেয়ার কারণ হলো শিয়াইজম ও সালাফিজমের দ্ব›দ্ব। পশ্চিমা ও ইহুদিবাদীরা শিয়া-সুন্নি বিরোধ যুদ্ধের ময়দানে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য ইরাককে সৌদি আরব ২৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। ১৯৯১ সালের ১৫ জানুয়ারি, সৌদি বাদশাহ ফাহাদকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স এই তথ্য ফাঁস করে।

এই তিনটি দেশ মিসরে ২০১৩ সালের সামরিক অভ্যুত্থান সমর্থন করে, যখন জেনারেল আব্দেল ফাত্তাহ আল-সিসি মিসরের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত মুরসি সরকারকে উৎখাত করেছিল। সিসি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগে সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীসহ হাজার হাজার সরকারি সমালোচককে কারারুদ্ধ করে, গাজার সাথে মিসরের সাধারণ সীমান্ত ফিলিস্তিনিদের জন্য বন্ধ করে ইসরাইলের সাথে সহযোগিতা করে, ফিলিস্তিনিদের গাজা স্ট্রিপে আটকে দেয়।

ইসরাইল মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। দেশটি ইরানের পরমাণু স্থাপনা ও পরমাণু বিজ্ঞানীদের হামলা এবং হত্যা পরিচালনা করে বহুদিন থেকে ছায়াযুদ্ধ চালিয়ে আসছে। ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে চার ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করে ইসরাইলের মোসাদ। ২০২০ সালের জুলাইয়ে ইরানের নাতানজ পারমাণবিক স্থাপনায় আগুন লাগিয়ে দেয়। নভেম্বরে রিমোট কন্ট্রোল মেশিনগান ব্যবহার করে ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করে। একই বছর জানুয়ারিতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের অভিজাত কুদস ফোর্সের প্রধান, জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যা করে। তখন বাগদাদের বিমানবন্দরের কাছে কনভয়ে এমকিউ-৯ রিপার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র। ২২ মে তেহরানে নিজের বাসায় রিপাবলিকান গার্ডের কর্নেল সাইয়েদ খোদাইকে হত্যা করা হয়। মোসাদ নেটওয়ার্ক সদস্যরা অত্যাধুনিক সরঞ্জাম ও শক্তিশালী বিস্ফোরক নিয়ে ইরাকের কুর্দিস্তান হয়ে ইরানে প্রবেশ করে গত সপ্তাহে। তবে ইরান তাদের গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়। চলতি ২৩ জুলাই বিষয়টি মিডিয়ায় প্রকাশ পায়।

গত ৭ জুলাই ইরান ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সিকে (আইএইএ) জানায়, তারা আইআর-৬ সেন্ট্রিফিউজ ব্যবহার করছে, যাতে ‘সংশোধিত সাবহেডার’ রয়েছে। এর ভূগর্ভস্থ সুবিধায় সমৃদ্ধকরণ প্রক্রিয়ার ঘোষিত ২০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম আইসোটোপ তৈরি করা হয়। অস্ত্র-গ্রেড ইউরেনিয়াম তৈরির জন্য ৯০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম দরকার, যা উৎপাদন করেনি ইরান।

ইসরাইল ইরানের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য হামলার জন্য ১.৬ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছে এবং জুনের প্রথম সপ্তাহে ভ‚মধ্যসাগরে ও লোহিত সাগরে বড় আকারের সামরিক মহড়ার আয়োজন করেছে। লকহিড মার্টিন এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানসহ ডজন ডজন যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ইরানের পারমাণবিক সাইটগুলোতে আক্রমণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইসরাইলের জন্য ১০ বছরে ৩৮ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সমঝোতা প্যাকেজে স্বাক্ষর করেছিলেন। ইসরাইল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইসরাইলি লবি ইরানের সাথে পারমাণবিক কর্মসূচি পর্যবেক্ষণের আলোচনা বন্ধ করতে পেছনের দরজায় কাজ করছে। ইরান পরমাণু বোমা বাদ দিয়ে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির পর ট্রাম্প ইরানের ওপর অবরোধের স্রোত বইয়ে দেয়।

২০১৬ সালে ইরানের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে রিয়াদ। আরব বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করতে চায় সৌদি আরব, রিয়াদের শিয়া ধর্মীয় নেতা শেখ নিমর আল-নিমরের মৃত্যুদণ্ডের পর তেহরানে সৌদি দূতাবাস বিক্ষোভকারীদের হামলার শিকার হয়। সৌদি আরব, চীনা সহায়তায়, ইউরেনিয়াম আকরিক প্রক্রিয়াকরণের জন্য কারখানা তৈরি করে ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করে। সৌদি আরব ২০১৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বেশ কয়েকটি সামরিক সমঝোতা স্বাক্ষর করে যেখানে দ্রুত ১১০ বিলিয়ন ডলার ও পরবর্তী দশকে ৩৫০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কেনার কথা রয়েছে।

ইরানের সাথে যদি যুদ্ধ হয় তবে তা হবে অকল্পনীয় বিপর্যয়। এ যুদ্ধ দ্রুত পুরো অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়বে। মধ্যপ্রাচ্যের শিয়ারা ইরানের ওপর হামলাকে শিয়াদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় যুদ্ধ হিসেবে দেখবে। সৌদি আরবের ২০ লাখ শিয়া, যারা তেলসমৃদ্ধ পূর্ব প্রদেশে বেশি কেন্দ্রীভূত নতুনভাবে অস্ত্র হাতে নেবে; ইরাক শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ, তারা মোটেই বসে থাকবে না। বাহরাইন, পাকিস্তান ও তুরস্কের শিয়া সম্প্রদায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যোগ দেবে । তখন মধ্যপ্রাচ্য আরেকটি আফগানিস্তান বা ইউক্রেনে পরিণত হবে।

ইরান জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, রকেট ও বোমাসজ্জিত স্পিডবোট, সাবমেরিন, মাইন, ড্রোন এবং উপক‚লে মাটিতে লুকিয়ে রাখা আর্টিলারি ব্যবহার করে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেবে। এটি বিশ্বের ২০ শতাংশ তেল ও তরল গ্যাস সরবরাহের করিডোর। পেন্টাগনের হিসাবে এটি আছে। সম্ভবত তারা সেখানে গণবিধ্বংসী অস্ত্র ফেলবে, উপসাগরের তেল উৎপাদন কেন্দ্রগুলো ধ্বংস করবে। ইরান ও তার মিত্ররা ইসরাইলের পাশাপাশি মার্কিন স্থাপনায় হামলা চালাবে, এতে শত শত, হয়তো হাজারও মানুষের মৃত্যু হবে।

ইরানি তেল, যা বিশ্বের জ্বালানি সরবরাহের ১৩ শতাংশ, বাজার থেকে সরিয়ে নেয়া হবে। তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৫০০ ডলারেরও উপর লাফিয়ে উঠবে। এমনকি তা ৭৫০ ডলারও ছাড়িয়ে যেতে পারে। তখন পেট্রোলিয়াম-ভিত্তিক অর্থনীতি-রাজনীতি-কূটনীতি অচল ও অসার হয়ে পড়বে।

বাইডেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় সৌদি আরবকে প্যারিয়াহ বা নীচ জাতি বলে অভিহিত করেছিলেন। ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গোল্ডামায়ারও আরবদের ‘অসভ্য ও আনকালচারড’ বলতেন। বাইডেন খাসোগি হত্যার জন্য সৌদি আরবকে ‘মূল্য চুকাতে’ বাধ্য করার অঙ্গীকার করেন। কিন্তু তেলের দাম বাড়ার সাথে সাথে, তিনি এই হত্যাকাণ্ডকে হোয়াইটওয়াশ করছেন। পাশাপাশি সৌদিরা ইয়েমেনে যে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে, সেখানে সৌদিদের আউটপুট বাড়ানোর অনুরোধ করছেন! তবে প্রিন্স সালমান এই আবেদন গ্রহণ করেননি।

একজন বৃদ্ধ ও অসুস্থ চিকিৎসাধীন ব্যক্তি আইমান আল জাওয়াহিরিকে মিসাইলের আঘাতে হত্যা করে বাইডেন সহাস্যে টেলিভিশনে ঘোষণা দিয়েছেন। ট্রাম্পও একইভাবে ইরানি কমান্ডার কাসেম সোলেইমানিকে হত্যা করে সহাস্যে বুক ফুলিয়ে ভাষণ দিয়েছিলেন। ওবামা ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করে বিশ্ববাসীকে জানিয়েছিলেন এবং দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচন কনফার্ম করেছিলেন। বুশ সাদ্দামকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিলেন। ফ্রান্সের বিমান গাদ্দাফিকে হত্যা করে, ইরানের খোমেনিকে ধরার জন্য জিমি কার্টার অপারেশন শুরু করে ব্যর্থ হন। যুগে যুগে বিভিন্ন মুসলিম দেশে এই আগ্রাসন যেন এক রুটিন ওয়ার্ক।

তবু কাউকে জবাবদিহির আওতায় আনা হয় না। ইরাক যুদ্ধে মিথ্যা বলার জন্য টনি ব্লেয়ারের বিরুদ্ধে তদন্ত করে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। কিন্তু বুশের বিরুদ্ধে কিছুই হয়নি। সিআইএ তার নির্যাতন কর্মসূচির সমস্ত তদন্ত বন্ধ করে দেয়, গুরুত্বপূর্ণ নির্যাতনের ও জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিওটেপ ধ্বংস করা হয় এবং গোয়েন্দা সম্পর্কিত সিনেট সিলেক্ট কমিটির ছয় হাজার ৯০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনের প্রায় সবটুকু ক্লাসিফাই করা হয়েছে যাতে সিআইএর নাইন-ইলেভেন পরবর্তী আটক, নির্যাতন এবং বন্দীদের অন্যান্য অপব্যবহারের প্রোগ্রাম ও ডকুমেন্ট রয়েছে।

১৯৯১ সালে, মার্কিন নেতৃত্বাধীন একটি জোট ইরাকের বেশির ভাগ বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করে, যার মধ্যে রয়েছে পানি পরিশোধনের সুবিধা- এতে দেশের পানীয় জল দূষিত হয়ে পড়ে। তারপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফরাসি বিমান হামলার কয়েক বছর পর তাদের সুবিধার জন্য ‘নো ফ্লাই জোন’ চালু করে। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত, এই নিষেধাজ্ঞাগুলো কেবল পাঁচ বছরের কম বয়সী এক লাখ থেকে দুই লাখ ২৭ হাজার ইরাকি শিশুকে হত্যা করেছিল বলে অনুমান করা হয়, যদিও সঠিক পরিসংখ্যান বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০০৩ সালে ইরাকে পরবর্তী আগ্রাসনের সময় ইরাকি শহর কেন্দ্রগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘শক অ্যান্ড অ্যাওয়ে’ বোমা হামলার আওতায় বেসামরিক এলাকায় তিন হাজার বোমা ফেলা হয়েছিল, যুদ্ধের প্রথম দুই মাসে সাত হাজারের বেশি অযোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছিল। এক অনুমান অনুযায়ী, ইতিহাস বিশ্লেøষকরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে প্রায় ২০ মিলিয়ন মানুষকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে হত্যা করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছে।

ইরানের ওপর চাপিয়ে দেয়া ‘ইরাক-ইরান যুদ্ধ’ কোনো অগ্রগতি ছাড়া শেষ হলেও যুদ্ধের বিশাল ব্যয় ইরানকে একটি স্বাধীন স্থানীয় ক্ষেপণাস্ত্র শিল্প স্থাপনে বাধ্য করেছিল। ফলে ইরান নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে ক্ষেপণাস্ত্রের প্রধান ক্রেতা থেকে প্রধান উৎপাদক হয়ে ওঠে। বর্তমানে ইরানের দূরপাল্লøার ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনের সক্ষমতা বৈশ্বিক শক্তিগুলোর সমান। ক্ষেপণাস্ত্রই একমাত্র প্রচলিত অস্ত্র নয় যা ইরান তৈরি করছে। ফাইটার জেট, ট্যাঙ্ক, আর্টিলারি, সাবমেরিন, ড্রোন এবং স্পিডবোটগুলো অন্যান্য উচ্চ-প্রযুক্তির সামরিক সরঞ্জাম রয়েছে যা তৈরি করছে ও দিন দিন উন্নয়ন ঘটাচ্ছে। লেবাননের হিজবুল্লাহ, ফিলিস্তিনে হামাস ও ইয়েমেনের হুথিদের মতো গ্রুপগুলো ইরানি সামরিক অভিজ্ঞতায় উল্লেখযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র শক্তি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে এবং ইসরাইল, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে মোকাবেলায় একটি নির্ণায়ক ভ‚মিকা পালন করেছে। ইরান বৈশ্বিক সহায়তার জন্য চীন ও রাশিয়ার সাথে সামরিক চুক্তি করেছে এবং আঞ্চলিক অনেক দেশের সাথে বিভিন্ন জোট করে নিজের স্বার্থ মজবুত করার চেষ্টা করছে।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব ও গ্রন্থকার