Naya Diganta

দান করে খোঁটা দেয়া যাবে না

দান করে খোঁটা দেয়া যাবে না

দান করা উত্তম ইবাদত। এর মাধ্যমে সমাজের ধনী-গরিবের মাঝে সম্পর্ক বৃদ্ধি পায়। তবে এক্ষেত্রে দানকারী ও দানগ্রহীতার বিশেষ দায়িত্ব থাকে। ধনীদের কর্তব্য হলো- আল্লাহর কৃতজ্ঞতাস্বরূপ সম্পদ ব্যবহার করা এবং গরিবদের দান-সদকা করা। পক্ষান্তরে গরিবদের দায়িত্ব হলো- আল্লাহর সিদ্ধান্তে খুশি থেকে ধৈর্যধারণ করা।

সমাজে ধনী ও গরিব উভয় শ্রেণির লোকই আল্লাহ তাআলা সৃষ্টি করেছেন। সম্পদের মালিক হওয়া এবং মালিক না হওয়া উভয়টিই আল্লাহর পরীক্ষা। তাই উভয় শ্রেণির লোকদেরই নিজ নিজ কর্তব্য পালন করতে হবে। কিন্তু সমাজে এমন কিছু ধনী লোক রয়েছেন, যারা দান-সদকা করার পর গরিবদের কাছ থেকে এর প্রতিদান আশা করেন। তারা ভাবেন- আমি তাকে এত কিছু দিলাম, সে আমার অধীনে থাকবে, আমার পক্ষে কথা বলবে, আমাকে সমর্থন করবে। যদি ধনীদের সে আশা পূরণ না হয়, তখন গরিবের মুখোমুখি হয়ে বলতে থাকে, আমি তোমাকে এত কিছু দিলাম আর তুমি আমার এইটুকু কাজ করতে পারলে না। ইসলামে এরূপ করাকে খোঁটা দেয়া বলে।

খোঁটা দেয়া মারাত্মক গর্হিত কাজ। পবিত্র কুরআনে এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। যখন কোনো ব্যক্তি তার দানের খোঁটা দেয়, তখন তার সব দান বাতিল হয়ে যায়। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা খোঁটা ও কষ্ট দেয়ার মাধ্যমে তোমাদের দানসমূহ বাতিল কোরো না। সে ব্যক্তির মতো, যে তার সম্পদ ব্যয় করে লোক দেখানোর উদ্দেশে এবং বিশ্বাস করে না আল্লাহ ও কেয়ামত দিবসের প্রতি। অতএব তার উপমা এমন একটি মসৃণ পাথর, যার ওপর রয়েছে মাটি। এরপর তাতে প্রবল বৃষ্টি পড়ল, ফলে তাকে একেবারে পরিষ্কার করে ফেলল। তারা যা অর্জন করেছে তার মাধ্যমে তারা কোনো কিছু করার ক্ষমতা রাখে না।’ (সূরা বাকারা: ২৬৪) অর্থাৎ, বৃষ্টির কারণে পাথরের মাটি যেমন পরিষ্কার হয়ে যায়, তেমনি খোঁটা দেয়ার কারণে দানের সওয়াব বাতিল হয়ে যায়। তাই দানকৃত বস্তুর খোঁটা দেয়া উচিত নয়; বরং একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই আমরা দান করব। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন। আমীন