Naya Diganta

কুষ্টিয়ায় স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যার মামলায় স্বামীর যাবজ্জীবন

কুষ্টিয়ায় স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যার মামলায় স্বামীর যাবজ্জীবন

কুষ্টিয়ার মিরপুরের ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকর্মী এবং দুই সন্তানের জননী ডলি খাতুনকে গলাটিপে হত্যার মামলায় স্বামী আসাদুজ্জামান কামাল কবিরাজকে (৪২) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসাথে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

আজ বুধবার (১৭ আগস্ট) বেলা দেড়টার সময় কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম এই রায় ঘোষণা করেন।

রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আসাদুজ্জামান কামাল কবিরাজ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কড়া পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসাদুজ্জামান কামাল কবিরাজ মিরপুর উপজেলার শামুখিয়া গ্রামের হান্নান ওরফে সন্টু কবিরাজের ছেলে।

কুষ্টিয়া জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পশ্চিম চুনিয়াপাড়া গ্রামের বহুরুল ইসলামের মেয়ে ডলি খাতুনের সাথে ১৪ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় একই উপজেলার শামুখিয়া গ্রামের হান্নান ওরফে সন্টু কবিরাজের ছেলে আসাদুজ্জামান কামাল কবিরাজের সাথে।

বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ডলির সাথে কামালের কলহ লেগে থাকতো। এর মধ্যেই ডলি মিরপুর থানার তালবাড়িয়া পরিবার পরিকল্পনা অফিসে স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকুরি পায়। চাকুরি পাওয়ার পর থেকে ডলি খাতুনের উপর তার স্বামী কামাল নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল সকালে আসাদুজ্জামান কামালের সাথে তার স্ত্রী ডলির কথাকাটাকাটি এবং ধস্তাধস্তি হয়। এর এক পর্যায়ে কামাল তার স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যা করে।

এরপর স্ত্রী ডলি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছে বলে ডলির বাবা বহুরুল ইসলামকে খবর দেয় কামাল। খবর পেয়ে বহুরুল ইসলাম ডলির লাশ দেখে সন্দেহ হলে একই দিন তিনি মিরপুর থানায় ডলির স্বামী আসাদুজ্জামান কামাল কবিরাজ, তার বাবা সন্টু কবিরাজ ও মা আমেনা খাতুনকে আসামি করে মিরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এই মামলায় গ্রেফতারের পর স্ত্রীকে ডলিকে গলাটিপে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন আসাদুজ্জামান কামাল কবিরাজ।

মামলায় দীর্ঘ তদন্ত শেষে আসাদুজ্জামান কামালকে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালে ২৬ জুন মামলার চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই আবু বক্কার।

পরে দীর্ঘ শুনানি শেষে ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।