Naya Diganta

‘১৮০ নয়তো ১০০ তে অলআউট’

বাংলাদেশের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন

টি-২০তে বাংলাদেশের খেলার ধরন নিয়ে অনেক প্রশ্ন। নেতিবাচক অ্যাপ্রোচ, ডট বলের চাপ সামলাতে না পেরে প্রায়ই ভুগতে হয় দলকে। টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন এখন থেকে চান সাহসী ক্রিকেট। তার কথা বড় রান করতেই হবে, বড় পুঁজির চেষ্টায় গিয়ে অল্প রানে গুটিয়ে গেলেও আপত্তি নেই। এখন পর্যন্ত ১৪০-১৫০ রানকেই জুতসই পুঁজি ধরে এসেছে দল। তবে এখান থেকে সাহসী ও আগ্রাসী ক্রিকেট খেলে টার্গেট থাকতে হবে কমপক্ষে ১৮০। এটা করতে যদি দল ১০০তে অলআউট হয় তাহলেও চিন্তা নেই।
এশিয়া কাপের পর নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ। এরপর অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বকাপ। তাই সবাইকে তেড়েফুঁড়ে খেলার বার্তা দিচ্ছেন খালেদ, ‘আন্তর্জাতিক টি-২০তে আপনাকে ১৮০ রান করতে হবে। অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে ১৮০ করেই ম্যাচ জিততে হবে। ১৮০ করতে গিয়ে যদি ১২০ রানে গুটিয়ে যান আমি কিছু মনে করব না।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচে অ্যাপ্রোচ ঠিক থাকলেও শেষ ম্যাচে ১৫৭ রান তাড়া করতে নেমে ১০ রানে হারে বাংলাদেশ। গতকাল গণমাধ্যমে সুজন সমালোচনা করেন, ‘বারবার আমরা বলছি ভয়ডরহীন ক্রিকেট। জিম্বাবুয়েতে প্রথম দুই ম্যাচে সেটা থাকলেও তৃতীয় ম্যাচে মনে হয় না প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলেছি।’
তিনি যোগ করেন, ‘সাকিব আগ্রাসী অধিনায়ক, সুতরাং আমরা চাইব ওই রকম ক্রিকেট খেলতে। বলছি না হুট করে বদলে গিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবো। তবে পথটা ধরতে চাই কিভাবে আমরা খেলব। ১২০ বলের খেলা। রানের সাথে পাল্লা দিয়ে খেলতে হবে।’
দলে যারা এখন ১০০ স্ট্রাইকরেটে রান করছে। তাদের দিয়ে হবে না। এখানেই উঠে মাহমুদুল্লাহর প্রসঙ্গ। গত ১৪টি টি-২০ ম্যাচে তার গড় ১৭.৪১, স্ট্রাইকরেট মাত্র ১০০.৪৮। তবু এই অভিজ্ঞ তারকাকে দলে রাখা হয়েছে উপায় না দেখে, ‘আমাদের হাতে কিন্তু এত ক্রিকেটার নেই। হুট করে একটা দল বদলানো যাবে না। অনেক কঠিন। এরপর চোটের শঙ্কা। বেশ ক’জন ইনজুরিতে। এই সংস্করণে অনেক অভিজ্ঞ রিয়াদ, ১২০টির মতো ম্যাচ খেলেছে। পজিশন আমি নির্দিষ্ট করে দিচ্ছি না। হয়তো ওপরে না হয় সাত-আটেও করতে পারে।’
সাকিব-মুশফিক হতে পারে ওপেনার
এশিয়া কাপের দলে আছেন ১৭ ক্রিকেটারের মধ্যে ওপেনার দু’জন। এনামুল হক বিজয় কিছুটা অভিজ্ঞ হলেও ইমন একেবারেই নবীন। সে ক্ষেত্রে সাকিব, মিরাজ, মুশফিকরা ওপেনিং করতে পারেন বিজয়ের সাথে। গতকাল এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন টিম ডিরেক্টর। শেখ মেহেদীও ওপেন করতে পারে।’ মূলত লিটন দাস ইনজুরিতে পড়ায় বড় বিপাকে বাংলাদেশ। সাথে জিম্বাবুয়ে সফরের দল থেকে বাদ দেয়া হয়েছে ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুনিম শাহরিয়ারকে।
রিয়াদও যা সাকিবও তা
রিয়াদকে সরিয়ে আবার সাকিবকে টি-২০-এর নেতৃত্বে বসিয়েছে বিসিবি। সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে দুইজনের সাথে আলোচনা করেই। ক্রিকেটের স্বার্থে এমন সিদ্ধান্ত জানালেন সুজন। তিনি জানান, এখানে কোনো পক্ষপাতিত্ব নেই। গতকাল মিরপুরে সংবাদমাধ্যমকে সুজন বলেন, ‘রিয়াদ ও সাকিবের সাথে কথা হয়েছে। সাকিব এই ফরম্যাটে বেশি অভিজ্ঞ, ওর অনেক ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার অভিজ্ঞতা আছে, পারফরম্যান্স সব মিলিয়ে মনে হয়েছে সেই-ই সেরা পছন্দ। বিষয়টা এমন না যে রিয়াদ খারাপ। দিন শেষে আমরা সবাই বিসিবিতে কাজ করি। এখানে আমাদের কোনো স্বার্থ নেই, সাকিবও আমার কিছু না রিয়াদও আমার কিছু না। আমরা চাই বাংলাদেশ দলের সাফল্য।’
মুশফিকের জায়গায় আফিফ
টি-২০তে আফিফ হোসেনের পজিশন আরো উপরে হওয়া উচিত কি না, এই নিয়ে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টকে অনেকবারই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। মুশফিক দলে না থাকলে আফিফ খেলেন চার-পাঁচে। মুশফিক থাকলে নিচে নামতে হয়। এশিয়া কাপে মুশফিক থাকলে মিডল অর্ডারে চার-পাঁচ নম্বর পজিশনেই থিতু করা হবে আফিফকে।
সুজন পরিষ্কার জানিয়ে দেন, আফিফকে নির্দিষ্ট জায়গায় রেখেই এগোবেন তারা। হি ইজ আওয়ার ডায়নামো। আত্মবিশ্বাসী একটা ছেলে, গত দুটো ওয়ানডেতেও ভালো খেলেছে। সবচেয়ে বড় কথা সে আগ্রাসী।’