Naya Diganta

সম্পদ বাজেয়াপ্ত নিয়ে সতর্ক করল রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রকে

ইউক্রেনের বন্দর থেকে একদিনে ১৫ হাজার টন শস্য নিয়ে ছেড়ে গেছে আরো দু’টি জাহাজ। এ বিষয়ে তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাহাজ দু’টিতে সূর্যমূখীর বীজ ও ভুট্টা রয়েছে। যুদ্ধে রাশিয়ার অবরোধের কারণে দীর্ঘদিন ইউক্রেন থেকে শস্যবাহী জাহাজ ছেড়ে যেতে পারেনি। এতে খাদ্য সঙ্কট দেখা দেয়। তবে দীর্ঘ অচলাবস্থা কাটতে গত ২২ জুলাই জাতিসঙ্ঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় একটি চুক্তিতে উপনীত হয় কিয়েভ ও মস্কো। এরই অংশ হিসেবে ধারাবাহিকভাবে ইউক্রেন থেকে শস্যবাহী ছেড়ে যাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। আলজাজিরা।
গতকাল শনিবার চোরনোমর্স্ক বন্দর থেকে বার্বাডোস পতাকাবাহী জাহাজ ফুলমার এস ১২ হাজার টন ভুট্টা নিয়ে তুরস্কের ইস্কেন্ডারুনের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। অন্যটি মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ পতাকাবাহী থো। চর্নমোর্স্ক বন্দর থেকে তিন হাজার টন সূর্যমুখী বীজ নিয়ে তুরস্কের উত্তর-পশ্চিম তেকিরদাগের উদ্দেশে যাত্রা করেছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। হামলার শুরুর পর থেকেই ইউক্রেনের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ বন্দরগুলো অবরুদ্ধ করে ফেলে রুশ বাহিনী। এতে ইউক্রেনে উৎপাদিত বিপুল শস্য আটকা পড়ে।
ইউক্রেন বিশ্বের চতুর্থ খাদ্যশস্য রফতানিকারক দেশ। বিশ্বের ৪২ ভাগ সূর্যমুখী তেল উৎপাদন হয় এই দেশটিতে। এ ছাড়া মোট ভুট্টার ১৬ শতাংশ এবং গমের ৯ শতাংশ উৎপাদন করে দেশটি। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধের জেরে বিশ্বে গমের সবচেয়ে বড় রফতানিকারক রাশিয়া থেকেও রফতানি কমে গেছে।
এ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের তরফে রাশিয়ার কোনো সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হলে ওয়াশিংটনের সাথে মস্কোর সম্পর্কের ইতি ঘটবে। এমন সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছে রাশিয়া। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক রুশ সম্পদের যেকোনো সম্ভাব্য জব্দের ঘটনা দুই দেশের সম্পর্ককে সম্পূণরূপে ধ্বংস করে দেবে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা বিভাগের প্রধান আলেকজান্ডার দারচিভ সংবাদমাধ্যম তাস-কে বলেন, ‘আমরা এই ধরনের কর্মকাণ্ডের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে আমেরিকানদের সতর্ক করছি।
এটি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। আর সেটি ওয়াশিংটন কিংবা মস্কো কারও স্বার্থের অনুকূলে যাবে না।’ যুক্তরাষ্ট্রের হাতে রাশিয়ার ঠিক কোন সম্পদ জব্দ হওয়ার আশঙ্কার কথা বলছেন সেটি অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট করেননি রুশ পররাষ্ট্র দফতরের এই কর্মকর্তা। তবে তিনি ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততার সমালোচনা করেছেন। আলেকজান্ডার দারচিভ বলেন, ‘ইউক্রেনের ওপর মার্কিন প্রভাব এমন মাত্রায় বেড়েছে যে, আমেরিকানরা ক্রমবর্ধমান সঙ্ঘাতে সরাসরি পক্ষ হয়ে উঠছে।’
এর ক’দিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রকে আর রুশ পরমাণবিক অস্ত্রসম্ভার পরিদর্শনের সুযোগ না দেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল মস্কো। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এ সংক্রান্ত চুক্তিতে ‘বিশেষ পরিস্থিতি’ উল্লেখ করে যে শর্ত রাখা হয়েছিল সেটি ব্যবহার করেই এই চুক্তি তারা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে।