Naya Diganta
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর

শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিষ্পত্তির আগেই পদোন্নতির তোড়জোড়

ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর

নানা অনিয়মের অভিযোগে প্রশাসনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের তৎকালীন উপপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে। কিন্তু অদৃশ্য কারণে সেই নির্দেশনার ফাইলটি ধামাচাপা পড়ে যায়। পরবর্তীতে একই নির্দেশনা আবারো দেয়া হয়। কিন্তু সেই ফাইলটিও আলোর মুখ দেখেনি। অভিযোগ উঠেছে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার পরিবর্তে নানা অনিয়মের মাধ্যমে মোস্তাফিজুর রহমানকে পরিচালক চলতি দায়িত্ব (চ: দা:) হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে তাকে পরিচালক পদে পদোন্নতির জন্য তোড়জড় করা হচ্ছে। অথচ নিয়ম অনুযায়ী কারো বিরুদ্ধে বিভাগীয়সহ অন্যান্য অভিযোগ থাকলে তা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পদোন্নতি হওয়ার কথা নয়।
অভিযোগ রয়েছে, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের স্মারক নং-ডিজিডিএ/১-২৮/২০০৩/৩১২, তারিখ: ০৩-০৪-২০২২ ইং অনুসারে মোস্তফিজুর রহমানের পদোন্নতির জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। যা প্রচলিত আইন ও বিধিসম্মত নয়। অথচ মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগে অধিদফতরের স্মারক নং-ডিজিডিএ/শৃঙ্খলা-১/০৮/৬৩৯, তারিখ ১২-০১-২০১৭ ইং তারিখে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি দেয়া হয়। কিন্তু অদৃশ্য কারণে সেই চিঠির কোনো সুরাহা হয়নি। পরবর্তীতে ২০২০ সালে ই-মেইলের মাধ্যমে ফের তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথা বলা হলেও সে ব্যাপারেও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ। যার কারণে অভিযোগটির অদ্যাবধি কোনো নিষ্পত্তি হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, পরিচালক (চ: দা:) মো: মোস্তাফিজুর রহমানের দাখিলকৃত বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদনগুলো (এসিআর) সন্তোষজনক না হওয়ায় তিনি ব্যক্তিগত তদবির ও উৎকোচের বিনিময়ে এসিআরগুলোর সংশোধন করে থাকেন। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ওষুধ প্রশাসনের-০১ শাখার স্মারক নং-৪৫.০০.০০০০.১৮২.১৫.০৩৩.১৫-১৯৯, তারিখ: ৩১-০৫-২০২০ ইং অনুযায়ী মোস্তাফিজুর রহমানের ২০১৬, ২০১৭ এবং ২০১৮ সালের বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন (এসিআর) বিধিসম্মত না হওয়ায় ফের এসিআর উপস্থাপনা করতে বলা হয়। ২০২২ সালের এসিআরে ঝামেলা সৃষ্টি হওয়ায় মহাপরিচালক সেখানে অনুস্বাক্ষর ও প্রতিস্বাক্ষর করেননি বলে জানা যায়।
নিয়ম অনুযায়ী নন-ক্যাডার কর্মকর্তা ও কর্মচারী (জ্যেষ্ঠতা ও পদোন্নতি) বিধিমালা, ২০১১ এর ধারা ৫ অনুযায়ী- কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার অভিযোগনামা দাখিল বা দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক দায়েরকৃত মামলায় চার্জশিট দাখিল, ফৌজদারি মামলা দায়েরের সরকারি মঞ্জুরি প্রদান করা হলে অথবা উক্তরূপ কারণে কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী গ্রেফতার হলে ওই মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তার পদোন্নতির জন্য বিবেচিত হওয়ার সুযোগ নেই। অথচ মোস্তাফিজুর রহমানের বিষয়টি নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই তার পদোন্নতির জন্য সুপারিশ করা হয়েছে, যা নিয়ে অধিদফতরে চলছে নানা গুঞ্জন ও ক্ষোভ।
এ ব্যাপারে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের পরিচালক (চ: দা:) মো: মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে খুদেবার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।