Naya Diganta

পরিস্থিতি যত কঠিনই হোক ময়দানে থাকতে হবে : নূরুল ইসলাম বুলবুল

নূরুল ইসলাম বুলবুল

পরিস্থিতি যত বড় কঠিনই হোক না কেন ময়দান ত্যাগ করা যাবে না। সর্বাবস্থায় ঈমানী দৃঢ়তা রাখতে হবে। সংগঠনের রুকনদের আল্লাহর সাথে করা চুক্তি মৃত্যু পর্যন্ত লালন করতে হবে। একইসাথে জীবনের সব ধরনের পরীক্ষাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে আল্লাহর রঙে নিজেদের রঙ্গিন করতে হবে বলেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জননেতা নূরুল ইসলাম বুলবুল।

শুক্রবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের খিলগাঁও দক্ষিণ থানার ষান্মাসিক রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, রুকনগণ (সদস্য) সংগঠনের মূল প্রাণ বা চালিকাশক্তি। আমরা যারা শপথ গ্রহণ করেছি বুঝে শুনেই করেছি। এজন্য একজন রুকনকে রুকনিয়াতের অনুভূতি সর্বাবস্থায় লালন করতে হবে। যারা রাসূল সা:-এর হাতে শপথ গ্রহণ করেছিলেন, প্রকৃতপক্ষে তারা আল্লাহর কাছেই শপথ গ্রহণ করেছিলেন। যারা শপথের উপরে টিকে থাকবে তার সুফল তার উপরেই পড়বে এবং যারা শপথের উপরে টিকে থাকতে পারবে না তার কুফল তার উপরেই পড়বে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের মনের আকুতি ও অবস্থান সম্পর্কে জানেন।

নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, রুকনেরা সংগঠনের শপথের বা কমিটমেন্টের জনশক্তি। সুতরাং সংগঠনের স্বার্থে যেকোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে রুকনদের তৎপর ভূমিকা পালন করতে হবে। আমাদেরকে সংগঠনে নির্ধারিত সময় পরিকল্পিতভাবে কাজে লাগাতে হবে। বর্তমান সময়ের দাবি হিসেবে একজন রুকনকে অবশ্যই তথ্য প্রযুক্তির জ্ঞানে সমৃদ্ধ হতে হবে এবং নিজের ম্যানেজমেন্ট কোয়ালিটিকে আরো সমৃদ্ধ করতে হবে। পেশাগত ও ব্যাক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে যেসব কর্মসূচি আসবে সেগুলোতে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে হবে। যাতে করে নিজেকে মানবসম্পদে পরিণত করার মধ্য দিয়ে দুনিয়ার পরিবর্তন সাধন করার যোগ্যতা অর্জন এবং পাশাপাশি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব হয়।

এ সময় তিনি শপথের কর্মী হিসেবে আল্লাহর গোলামী করার জন্য আত্মনিবেদিত ও কুরআনের বিধানের আলোকে নিজেকে তৈরি করে দেশ সমাজ ও জাতি গঠনে আত্মনিয়োগের আহ্বান জানান।

তিনি আরো বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার বাংলাদেশকে দেউলিয়া রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। জনজীবন আজ মারাত্মক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। দেশে জ্বালানি তেল, গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও ইসলামী নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরকারের গ্রেফতার, হয়রানী, মিথ্যা মামলাসহ সকল প্রকার নির্যাতন নিপীড়ন ও ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। জামায়াত নেতৃবৃন্দসহ আলেম-ওলামাদের কারাগারে বন্দি করে রেখেছে। আজ গোটা দেশের মানুষই তাদের জুলুমের শিকারে পরিণত হয়েছে। এ সময় তিনি দেশের স্বার্থে গ্রেফতারকৃত সকল আলেম-ওলামাদের মুক্তির দাবি জানান।

নির্বাচনের বিষয়ে নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জনগণের মুক্তির জন্য অবিলম্বে কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থার অধীনে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় দেশের জনগণ নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিয়ে হলেও আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে বিদায় নিশ্চিত করবে। দেশবাসী এসব নৈরাজ্য ও ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিবে।

সভাপতির বক্তব্যে আশরাফুল আলম ইমন বলেন, রুকনদের কথা ও কাজ দ্বারা পুরো আন্দোলন পরিচালিত হয়। ফলে রুকন ভাইদেরকে সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে দায়ী ইল্লাল্লাহর ভূমিকা পালন করতে হবে। দ্বীনকে জীবনোদ্দেশ্য হিসেবে গ্রহণ করে জাহেলী সমাজের দূর্গ ভেঙ্গে ইসলামের সুমহান আদর্শকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য ও খিলগাঁও দক্ষিণ থানা আমির আশরাফুল আলম ইমনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি সাজেদুর রহমান শিবলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত রুকন সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশের শূরা সদস্য, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও খিলগাঁও জোনের পরিচালক মাওলানা আবু ফাহিম, খিলগাঁও জোনের সহকারী পরিচালক এস এম জুয়েল, মহানগরী মজলিসে শূরা সদস্য মোহাম্মদ শাহজাহান, ইলিয়াস মৃধা ও মাহমুদুর রহমান।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন পল্টন থানা সেক্রেটারি মুজিবুর রহমান, খিলগাঁও দক্ষিণ থানার কর্মপরিষদ সদস্য জহিরুল হক সেলিম, শেখ মোহাম্মদ, কুদরাতুল ফাত্তাহ আজমল, মাওলানা শফিকুল ইসলাম, আবিদুর রহমান, ইসহাক মিয়া, মাহমুদুল হাসান প্রমুখ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি