Naya Diganta

চলন্ত বাসে ধর্ষণ : ৪ জনের স্বীকারোক্তি, ৬ জনের রিমান্ড

চলন্ত বাসে ধর্ষণ : ৪ জনের স্বীকারোক্তি, ৬ জনের রিমান্ড

টাঙ্গাইলে চলন্ত বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের মামলায় গ্রেফতার ১০ জনের মধ্যে চারজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকি ছয় আসামির প্রত্যেককে তিন দিনের রিমান্ড দেয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে আসামিদের টাঙ্গাইল আদালতে হাজির করা হয়। এর আগে গত রোববার র‌্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১২-১৪-এর যৌথ অভিযানে ঢাকা, গাজীপুর ও সিরাজগঞ্জে অভিযান চালিয়ে চক্রের মূল হোতা রতনসহ এই ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সোমবার তাদের টাঙ্গাইলে আনা হয়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাদের গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
রাজধানীর কাওরানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে গতকাল সোমবার দুপুরে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে আসামিদের বিষয়ে নানা তথ্য তুলে ধরেন বাহিনীটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

র‌্যাব জানায়, বাসের হেলপারের ছদ্মবেশে ২০১৮ সাল থেকে যাত্রীবাহী বাসসহ বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি করে আসছিল মাহমুদুল হাসান মুন্না ওরফে রতন হোসেন। তিনি এ চক্রের দলনেতা। তার অধীনে ১৩ থেকে ১৫ জন্য সদস্য রয়েছে। ডাকাতির ঘটনায় দুই দফার কারাভোগও করেছেন তিনি। দ্বিতীয় দফায় ৯ মাস কারাভোগের পর জামিনে বের হয়ে আসেন এবং পুনরায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি করে দলনেতা হন রতন হোসেন।

টাঙ্গাইলের কোর্ট ইন্সপেক্টর তানবীর আহাম্মেদ জানান, মঙ্গলবার আসামিদের বিরুদ্ধে সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে হাজির করে পুলিশ। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা হাসানাত ছয়জনের বিরুদ্ধে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সোহাগ মন্ডল (২০), খন্দকার হাসমত আলী ওরফে দীপু (২৩), বাবু হোসেন ওরফে জুলহাস (২১), মো: জীবন (২১), আব্দুল মান্নান (২২) ও নাঈম সরকার মুন্না (১৯)।

এছাড়া বাকি চার আসামি আদালতে নিজেদের দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন। তারা হলেন- ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী রতন হোসেন (২১), মো: আলাউদ্দিন (২৪), রাসেল তালুকদার (৩২) ও আসলাম তালুকদার ওরফে রায়হান (১৮)।

এই মামলায় সবমিলিয়ে ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে গ্রেফতারকৃত তিনজন রাজা মিয়া, আওয়ালা ও নুরনবী আদালতে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বর্তমানে তারা জেলহাজতে রয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ২ আগস্ট মঙ্গলবার রাতে ঈগল এক্সপ্রেসের একটি বাস কুষ্টিয়া থেকে ২৪ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিল। পথে যাত্রীবেশে ডাকাত দল বাসে উঠে। বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর ডাকাতরা বাসের নিয়ন্ত্রণ নেন। পরে অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের জিম্মি করে লুটে নেন নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালঙ্কারসহ সবকিছু। ডাকাতিতে বাধা দেয়ায় চলন্ত বাসেই তারা এক নারী যাত্রীকে দলবেঁধে ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে ডাকাতদল বাসের গতিপথ পরিবর্তন করে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের সামনে বাসটি ফেলে রেখে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা যাত্রীদের উদ্ধার করেন। ওই বাসের যাত্রী হেকমত মিয়া বাদি হয়ে মধুপুর থানায় বাস ডাকাতি ও ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।