Naya Diganta

আশুগঞ্জে ধর্মঘটে ধান বেচাকেনা বন্ধ

আশুগঞ্জে ধর্মঘটে ধান বেচাকেনা বন্ধ

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ বন্দর ও শিল্প নগরীতে টানা তিন দিন ধরে চলছে ট্রাক ধর্মঘট। এতে পরিবহন সঙ্কটে আশুগঞ্জ মোকামে ধান বেচাকেনা বন্ধ হয়ে গেছে।

শুক্রবার মধ্যরাতে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে শনিবার থেকে ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে ট্রাক মালিকরা ধর্মঘট শুরু করেন। সোমবার পর্যন্ত নিজেদের দাবিতে অনড় রয়েছেন তারা। এতে করে একদিকে ট্রাক শ্রমিকেরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে আর অন্যদিকে পরিবহন সঙ্কটে ধান বেচাবেনাও বন্ধ হয়ে গেছে।

সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সম্প্রতি ভারত থেকে চাল আমদানির ফলে আশুগঞ্জ মোকামে ধানের বেচাকেনা প্রায় ৩০ শতাংশ কমেছে। এছাড়া জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে লোকসানের কারণ দেখিয়ে মোকাম থেকে ধান পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছেন ট্রাক মালিকেরা।

প্রতি বস্তা ধান পরিবহনে তিন টাকা ৬৫ পয়সা থেকে ছয় টাকা ৯০ পয়সা করার দাবিতে ধর্মঘট করছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, ধর্মঘটের কারণে ধান পরিবহন বন্ধ থাকায় মোকামে বেচাকেনা বন্ধ রয়েছে। এতে করে বিভিন্ন এলাকা থেকে ধান নিয়ে আসা প্রায় দুই শতাধিক নৌকা আটকে আছে। এতে একদিকে ধান নিয়ে আসা ব্যাপারীরা যেমন দুর্ভোগে পড়েছেন, তেমনি বেকার হয়ে পড়েছেন মোকামে খেটে খাওয়া শ্রমিকরা।

আশুগঞ্জ উপজেলা ট্রাক মালিক সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি আশরাফ আলী জানান, বর্তমানে যে ট্রাক ভাড়া আছে তাতে এমনিতেই আমাদের লোকসান দিতে হয়। এখন জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার ফলে ট্রাক চালানো দায় হয়ে পড়েছে। ট্রাক ভাড়া না বাড়ানো পর্যন্ত ধর্মঘট অব্যাহত থাকারম কথাও জানান তিনি।

মোকামের ধান-চাল ব্যবসায়ীদের দাবি, ট্রাক মালিকদের সাথে আলোচনা করেও কোনো সমঝোতায় পৌঁছানো করা যায়নি। ট্রাক মালিকদের দাবি অনুযায়ী ভাড়া বাড়ালে চালের বাজারে প্রভাব পড়বে বলেও জানান তিনি।

আশুগঞ্জ উপজেলা অটো রাইস মিল মালিক সমিতির সদস্য হাসান ইমরান বলেন, ট্রাক মালিকদের সাথে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তাদের চাহিদানুযায়ী ট্রাকের ভাড়া বাড়ালে চালের বাজারে নতুন সঙ্কট তৈরি হবে।

উল্লেখ্য, মেঘনা নদীর তীরবর্তী আশুগঞ্জ ধানের মোকামে প্রতি মৌসুমে দৈনিক প্রায় এক লাখ মণ ধান বেচাকেনা হয়। যা থেকে জেলার ২৫০ রাইস মিলে ধানের যোগান দেয়া হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাড়াও কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের হাওর এলাকায় উৎপাদিত ধান আসে আশুগঞ্জ মোকামে।