Naya Diganta
শিক্ষক উৎপল হত্যা

আদালতে স্বীকারোক্তি দিলো জিতু

শিক্ষক উৎপল হত্যা

সাভারে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছে প্রধান আসামি আশরাফুল ইসলাম জিতু। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গতকাল জিতু স্বীকার করে, বীরত্ব দেখানোর জন্য তার শিক্ষককে ক্রিকেট খেলার স্টাম্প দিয়ে পিটিয়েছে।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে জিতু বলে, ক্যাম্পাসে এক মেয়ের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে ঘোরাফেরা করার জন্য এই শিক্ষক আমাকে সতর্ক করায় আমি ক্ষুব্ধ হই। এ ছাড়াও তিনি প্রায়ই আমাকে বিভিন্ন কারণে বকাঝকা করতেন।
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক ও তদন্তকারী কর্মকর্তা এমদাদুল হক জিতুকে ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব হাসানের চেম্বারে আনার পর তিনি তার বক্তব্য রেকর্ড করেন। বক্তব্য গ্রহণের পর ম্যাজিস্ট্রেট জিতুকে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠান।
হাজী ইউনুস আলী স্কুল ও কলেজের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জিতু তার বক্তব্যে আরো জানায়, ঘটনার কয়েকদিন আগে কলেজ প্রাঙ্গণে এক মেয়ের সাথে ঘনিষ্ঠ হয়ে বসার কারণে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার তাকে সতর্ক করেন। এতে সে রাগান্বিত হয়ে ওই শিক্ষককে পেটানোর পরিকল্পনা করে। জিতু জানায়, তিনি তার চেয়ে বয়সে বড় বান্ধবীর কাছে নিজের বীরত্বের প্রমাণ রাখার জন্য এই পরিকল্পনা করে। এরপর ২৫ জুন জিতু স্কুলে একটি ক্রিকেট খেলায় ব্যবহৃত স্টাম্প নিয়ে আসে। শিক্ষক উৎপল নারী শিক্ষার্থীদের ক্রিকেট প্রতিযোগিতা চলাকালীন মাঠের এক কোনায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেখানে জিতু তার ওপর হামলা করার কথা স্বীকার করে।
অন্য দিকে আসামি আশরাফুল ইসলাম জিতুর বাবা মোহাম্মদ উজ্জ্বল গত মঙ্গলবার ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী আশরাফুজ্জামান উজ্জ্বলের কাছে স্বীকারোক্তি দেন। স্বীকারোক্তিতে উজ্জ্বল বলেন, নিহত শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার শিক্ষার্থীদের কঠোর শাসন করায় তার ছেলে আশরাফুল ইসলাম জিতু তার ওপর রেগে তাকে পিটিয়ে আহত করে। জবানবন্দীতে উজ্জ্বল আরো বলেন, পুলিশ জিতুকে গ্রেফতারের জন্য খোঁজা শুরু করলে তিনি তাকে প্রথমে আশুলিয়ায় একটি বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছিলেন। পরে তিনি ছেলেকে পাবনায় পাঠান এবং নিজে গ্রেফতার এড়াতে কুষ্টিয়ায় আত্মগোপন করেন। ৩০ জুন মামলায় জিতুকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।
গত ২৫ জুন আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণীর ছাত্র জিতু বেলা ২টার দিকে মাঠের পাশে ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে শিক্ষক উৎপলকে আঘাত করে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত উৎপলকে এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ঘটনার পরদিন নিহতের ভাই অসীম কুমার সরকার বাদি হয়ে আশুলিয়া থানায় হামলাকারীসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। গত ২৯ জুন গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকা থেকে জিতুকে গ্রেফতার করে র্যাব। পরের দিন তাকে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালতে পাঠানো হয়।