Naya Diganta

ঈদের ছুটি কাটাতে বেনাপোল চেকপোস্টে উপচে পড়া ভিড়

ঈদের ছুটি কাটাতে বেনাপোল চেকপোস্টে উপচে পড়া ভিড়

ঈদের ছুটি কাটাতে ভ্রমণপিপাসু মানুষের বেনাপোল চেকপোস্টে উপচে পড়া ভিড়। হাজার হাজার বাংলাদেশী যাত্রী বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যাচ্ছে। কেউ যাচ্ছে বেড়াতে, কেউ যাচ্ছে ডাক্তার দেখাতে, কেউ যাচ্ছে স্বজনের বাড়িতে। তাদের বেশির ভাগই তাদের পরিবার নিয়ে যাচ্ছে। ভ্রমণে যাওয়া যাত্রীরা পেট্রাপোল, বেনাপোল ইমিগ্রেশন ও প্যাসেনজার টার্মিনালে নানা হয়রানির শিকার হচ্ছে।

বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন দুই-আড়াই হাজার যাত্রী দু’দেশের মধ্যে চলাচল করে থাকে। অন্য বছরের মতো এবারো ঈদের ছুটিতে বাংলাদেশী যাত্রীদের ভারতে যাওয়ার সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। অন্য সময়ের তুলনায় এখন দ্বিগুনের চেয়ে বেশি যাত্রী ভারতে যাচ্ছে। প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ হাজার যাত্রী বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যাচ্ছে।

জানা গেছে, গত তিন দিনে এ চেকপোস্ট দিয়ে প্রায় ১৮ হাজার যাত্রী আসা যাওয়া করেছে। তবে চলাচলে যাত্রীরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে। একজন পাসপোর্ট যাত্রীকে নো-ম্যান্স ল্যান্ডে পৌঁছাতে বাংলাদেশ সাইডে সাত জায়গায় লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। যাত্রীরা বেনাপোল ইমিগ্রেশনে প্রবেশ করতে প্রথমে সোনালী ব্যাংক ও প্যাসেনজার টার্মিনালে আনসার গেটে লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে।

এ ছাড়াও ইমিগ্রেশনে কাজ ধীরগতিতে হওয়ায় প্রতিদিন টার্মিনালের সামনে ফাঁকা রাস্তার ওপর এক কিলোমিটার দীর্ঘ লাইন তেরি হচ্ছে। সারা রাত জেগে আসা যাত্রীরা রোদ-বৃষ্টিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে চিকিৎসা করতে যাওয়া যাত্রীরা।

আবার যাত্রী প্রতি ৫০০ টাকা দিলে একই গেট দিয়ে প্রবেশ করতে এক মিনিট সময় লাগছে। আর এসব নিয়ন্ত্রণ করছে প্যাসেনজার টার্মিনালে কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা। আনসার সদস্যরা যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে অন্য একটি লাইন তৈরি করে ইমিগ্রেশনে যাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে। এ সময় অন্য যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে। ইমিগ্রেশনে প্রবেশের পর সেখানে শুরু হচ্ছে আরেকটা লাইন।

ভারত ও বেনাপোল ইমিগ্রেশনে ধীরগতিতে পাসপোর্ট চেকিং ও সিল করায় নো-ম্যান্স ল্যান্ড এলাকায় দীর্ঘ লাইনের সৃষ্টি হচ্ছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে এ লাইনের মাত্রা আরো বাড়তে থাকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে এসব পাসপোর্ট যাত্রীদের। রোদ বৃষ্টি আর গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে যাত্রীরা। বিশেষ করে শিশু ও রোগীদের নিয়ে মহাবিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের। উভয় চেকপোস্টে জনবল থাকলেও ধীরগতির কারণে যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।

ঢাকা কোলকাতা বাস সার্ভিসের ম্যানেজার বাবলুর রহমান জানান, ‘আমাদের পরিবহনব্যবসা হলো সেবামূলক কাজ। কিন্ত ওই সেবাটা এখন আমরা করতে পারছি না। আগে যাত্রীরা বেনাপোল ইমিগ্রেশনে প্রবেশ করার সময় আমাদের প্রতিনিধি সেখানে উপস্থিত থেকে ইমিগ্রেশনের কাজ করিয়ে দিত। তখন ইমিগ্রেশনের যাত্রীরা কোনো হয়রানির শিকার হতো না। বর্তমানে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আমাদের কোনো প্রতিনিধিকে চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে না দেয়ায় ভারত ভ্রমণে যাওয়া যাত্রীরা আনসার থেকে শুরু করে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের কাছে নানা হয়রানির শিকার হচ্ছে। ইমিগ্রেশনের নানা অনিয়ম নিয়ন্ত্রণ করছে কয়েকজন বহিরাগত। বহিরাগতদের সহযোগিতায় যাত্রীদের অকারণে হয়রানি করে অর্থ আদায় করছে ইমিগ্রেশন পুলিশ।

বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজু আহম্মেদ বলেন, ঈদের ছুটির কারণে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যাওয়ার যাত্রী ব্যাপক হারে বেড়েছে। অন্য সময়ের চেয়ে এখন দ্বিগুণ যাত্রী ভারতে যাচ্ছে। তবে ভারত ভ্রমণে যাওয়া যাত্রীরা যেসব অভিযোগ করছে সেটা সঠিক নয়। যাত্রীদের সুবিধার জন্য বেনাপোল ইমিগ্রেশনে জনবল বাড়ানো হয়েছে এবং রোগীদের জন্য অতিরিক্ত চারটি ডেস্ক করা হয়ছে।