Naya Diganta

পুঁজিবাজারে সূচকের সাথে বেড়েছে লেনদেন

টানা দুই কার্যদিবস দরপতনের পর সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। এতে দুই বাজারেই বেড়েছে মূল্যসূচক। সেই সাথে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণও। মূল্যসূচক ও লেনদেন বাড়লেও ডিএসইতে তিন ডজনের বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়েছে। লেনদেনের প্রায় পুরো সময় এই প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য অবস্থায় ছিল। এতে দিনের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, এ দিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের প্রথম ঘণ্টাজুড়ে ধারাবাহিকভাবে বাড়ে সূচক। এতে লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ৫০ পয়েন্টের ওপরে বেড়ে যায়। আর দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায় ৭০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান।
তবে লেনদেনের শেষদিকে এসে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে যায়। এতে কমে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাও। দিনভর ডিএসইর লেনদেনে অংশ নেয়া ১৬০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৯টির। আর ৬৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখানো প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে তিনটির শেয়ারদাম দিনের সর্বোচ্চ পরিমাণ বেড়েছে। বিপরীতে ৩৮টির দাম দিনের সর্বনিম্ন পরিমাণ কমেছে।
এরপরও প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৫ পয়েন্ট বেড়ে ছয় হাজার ৩৭২ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৭ পয়েন্ট বেড়ে দুই হাজার ৩০১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৩৮৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি বাজারটিতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৯৬০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৬৬২ কোটি ৬১ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ২৯৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৯৫ কোটি এক লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রবির ২৬ কোটি ২৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৪৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে তিতাস গ্যাস।
এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে ফু-ওয়াং ফুড, গ্রামীণফোন, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ইন্ট্রাকো, শাইনপুকুর সিরামিক, ফরচুন সুজ ও জেএমআই হসপিটাল অ্যান্ড রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং।
অন্য দিকে, সিএসইতে সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৭৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪০ কোটি ৪১ টাকা। লেনদেন অংশ নেয়া ৩০১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৬টির এবং ৪২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
পাওনাদারদের অর্থ প্রদান শুরু : বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নির্দেশেনা অনুযায়ী ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্য তিন ব্রোকারেজ হাউজের পাওনাদারদের ব্যাংক হিসেবের মাধ্যমে প্রাপ্য অর্থ প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
ব্রোকারেজ হাউজ তিনটি হলো : ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ লিমিটেড, বাংকো সিকিউরিটিজ লিমিটেড এবং তামহা সিকিউরিটিজ লিমিটেড। এই তিন ব্রোকারেজ হাউজের যেসব বিনিয়োগকারী চলতি বছরের ১৫ মের মধ্যে ডিএসইতে অভিযোগ দাখিল করেছেন তাদের নিজ নিজ বিও হিসাবে উল্লিখিত ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে আনুপাতিক হারে প্রাপ্য অর্থ (যাচাই-বাছাইপূর্বক) প্রদানের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এরই অংশ হিসেবে গত ২৯ জুন থেকে বাংলাদেশ ইলেকট্রিক ফান্ড ট্রান্সফার নেটওয়ার্কের (বিইএফটিএন) মাধ্যমে ৪৩১ বিনিয়োগকারীকে ৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে। ডিএসই আশা করছে যথাসম্ভব দ্রুতগতিতে বিইএফটিএর মাধ্যমে বাকি অর্থ প্রদান করা হবে।
ডিএসই জানিয়েছে, ডিএসই সব পাওনা পরিশোধের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্রোকারদের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। আর এ ধরনের ঘটনা যেন ভবিষ্যতে না ঘটে সে বিষয়েও সতর্ক রয়েছে ডিএসই।