Naya Diganta

লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত সিলেট

লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত সিলেট।

ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছে সিলেট। তেল ও গ্যাস সঙ্কটে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) কর্মকর্তারা।

তারা বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তেল সঙ্কট দেখা দেয়ায় তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বিবিয়ানা গ্যাস প্ল্যান্ট শাটডাউন করায় গ্যাসের অভাবে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। এতে চাহিদার থেকে এক হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম উৎপাদন হচ্ছে। এ ঘাটতি পূরণে সিলেটের মতো সারা দেশে লোড ভাগ করে দেয়া হচ্ছে।

এক ঘণ্টা পরপর লোডশেডিং করে ৩০ মিনিট করে বিদ্যুৎ দেয়া হচ্ছে। এ কারণে লাখ লাখ গ্রাহককে লোডশেডিংয়ের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। একটানা লোডশেডিংয়ে ও আষাঢ়ের ভ্যাপসা গরমে বৃদ্ধ ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এছাড়া বিদ্যুতের অভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব ক্ষেত্রে স্থবিরতা বিরাজ করছে।

সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন। সিলেটে প্রতিদিন কমপক্ষে সাত থেকে আট ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর লোডশেডিং বেশি হয়। শহর থেকে গ্রাম, সবখানে ভয়াবহ লোডশেডিং। গ্রামে রাত-দিন সমানতালে চলে লোডশেডিং।

এদিকে শহরের বিভিন্ন এলাকাগুলো পিডিবি’র অধীনে থাকায় অনেকটা রুটিন করে লোডশেডিং করা হয়। তবে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অধীনে থাকা গ্রামীণ জনপদের মানুষকে কঠিন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গ্রামে ২৪ ঘণ্টার বেশিরভাগ সময় বিদ্যুৎহীন থাকে বলে অভিযোগ করেন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দারা। রোববার থেকে লোডশেডিংয়ের মাত্রা আরো বেড়ে গেছে বলেও জানিয়েছেন গ্রামীণ জনপদের লোকজন।

এ বিষয়ে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বিতরণ বোর্ড সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদের বলেন, এখন চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। তাই ঘাটতি থাকার কারণে ৩৩ হাজার কেভি লাইনও বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এ কারণে বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। সিলেট ও সুনামগঞ্জে পাঁচ লাখ গ্রাহকের চাহিদা পিক আওয়ারে ৪৫০ এবং অফপিক আওয়ারে ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। সে তুলনায় সরবরাহ কম রয়েছে।

তিনি বলেন, লোডশেডিংয়ের এ সমস্যা শুধু সিলেটে নয়, দেশের সবখানে। জ্বালানি সঙ্কটের কারণে তেলের পাওয়ার স্টেশনগুলো পুরোপুরি বন্ধ। সিলেটের কুমারগাও এইচ.এফ ফুয়েলে চলা ৫০ মেগাওয়াট আগে থেকে বন্ধ রয়েছে। বিশেষ করে সিলেটে প্রায় ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে জাতীয় গ্রিডে যায়। সেখান থেকে চাহিদা অনুপাতে বণ্টন করা হয়।