Naya Diganta
নি ত্যো প ন্যা স

ছায়ারূপ

নি ত্যো প ন্যা স

পঞ্চাশ.
দিনটা সবার চোখে চোখেই কাটিয়ে দিলাম। এমনকি বাথরুমে গেলেও মা বাইরে দাঁড়িয়ে পাহারা দিয়েছে। পুকুরে গোসল করিনি, টিউবওয়েলেই করে নিয়েছি। দুপুরে এসে আব্বা ভিটামিন টাইপের কি সব ট্যাবলেট খাইয়েছে। কোনো রকম শরীর খারাপ করেনি, ভয় পাইনি দেখে আব্বা স্বস্তির নিঃশ^াস ফেলেছে নিজ কাজে মন দিয়েছে।
সন্ধ্যের সময় হাত মুখ ধুয়ে হ্যারিকেনের সামনে ঢুলে ঢুলে পড়তে বসা নিয়ম। স্কুলে যাইনি এবং একটা ট্রমার ভেতর দিয়ে গেছি বলে পড়া মাফ, আপু হ্যারিকেনের সামনে বসে একাগ্রচিত্তে মেট্রিকের জন্য পড়ছে। মা মাগরিবের নামাজ শেষে জায়নামাজে বসেই দোয়া দরুদ পড়ছেন। মিনুখালা হাস মুরগি গরু ছাগল সব যার যার জায়গায় তুলে দিয়ে ঘরে ঘরে সন্ধ্যে বাতি দিয়ে রান্নাঘরে রাতের রান্নায় ব্যস্ত।
আপু বারান্দায় বই নিয়ে পড়তে বসেছে। আমি কেরোসিনের ল্যাম্প হাতে নিয়ে রান্নাঘরের পাশের ঘরটায় এলাম। এই ঘরের আমার আপুর বই খাতা জামা কাপড় সব থাকে। বাসায় আত্মীয় স্বজন এলে এই ঘরে ঘুমায়। আমার খেলার সব সরঞ্জাম এই ঘরে। পড়ব না বলে একটা খেলনা নিতেই এ ঘরে এসেছি। পাশের ঘরে ল্যাম্প জ্বালিয়ে মিনুখালা রান্না করছে। ভয় কি!
ঘরে ঢুকতেই কেমন জানি পোড়া পোড়া একটা গন্ধ পেলাম। কাপড়চোপড় পুড়তে লাগলে সুতো পোড়া গন্ধ যেমন হয়! মনে হলো কেরোসিন ল্যাম্পের সুতোয় আগুন লেগে গেছে বা ল্যাম্প কোনো কাপড়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। ভালো করে ল্যাম্পের দিকে তাকাব তখনই কে যেন ফুঁ দিয়ে আমার চোখের সামনেই ল্যাম্পটা নিভিয়ে দিলো। তখনো আমার হাতে ধরা ল্যাম্প। আর সেই অবস্থাতেই আমার মনে হয় ঘরের মাঝখানের বাঁশের আড়া ধরে কালোমতো কী একটা উল্টো দিক থেকে ঝুলে আছে। (চলবে)