Naya Diganta

সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন ফিরেছে ৩ হাজার কোটি টাকা

টানা দরপতনের পর গত সপ্তাহে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা পেয়েছে দেশের শেয়ারবাজার। সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি বেড়েছে মূল্যসূচক। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন তিন হাজার কোটি টাকার ওপরে বেড়ে গেছে। এর আগে, নতুন অর্থবছরের (২০২২-২৩) প্রস্তাবিত বাজেটের পর থেকেই শেয়ারবাজারে টানা দরপতন দেখা দেয়। গত সপ্তাহের আগের দুই সপ্তাহের টানা পতনে ডিএসইর বাজার মূলধন আট হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা কমে যায়।
এ পরিস্থিতিতে গত সপ্তাহে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা পায় শেয়ারবাজার। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়ায় পাঁচ লাখ ১৭ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে যা ছিল পাঁচ লাখ ১৪ হাজার ৩১৬ কোটি টাকা; অর্থাৎ গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে তিন হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা।
বাজার মূলধন বাড়ার পাশাপাশি গত সপ্তাহে ডিএসইতে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ২৬৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৪টির। আর ৩১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৯ দশমিক ২৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৯৮ দশমিক শূন্য ৮ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ৫৪ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ।
প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচকও বেড়েছে। গত সপ্তাহে এ সূচকটি বেড়েছে ৩ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ২৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ২০ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ১০ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৭৪ শতাংশ।
অন্য দিকে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহেও কমেছে। গত সপ্তাহজুড়ে এই সূচকটি কমেছে ৩ দশমিক শূন্য ১ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ১৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ২৯ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২৬ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ২৪ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট বা ১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।
গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৭৭১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৭৬৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে সাত কোটি পাঁচ লাখ টাকা বা শূন্য দশমিক ৯২ শতাংশ। আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে তিন হাজার ৮৫৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় তিন হাজার ৮২২ কোটি ১৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ৩৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা বা শূন্য দশমিক ৯২ শতাংশ।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৫৪ কোটি ৩৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৪ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা শাইনপুকুর সিরামিকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৪৮ কোটি ৭৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। ১১৮ কোটি ৮৭ লাখ ৫৯ হাজার টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফু-ওয়াং ফুড।
এ ছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑ আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, ওরিয়ন ফার্মা, স্যালভো কেমিক্যাল, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স ও বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।