Naya Diganta

ইউক্রেনে কি দীর্ঘ মেয়াদী যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া?

ইউক্রেনে কি দীর্ঘ মেয়াদী যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া?

ইউক্রেন রাশিয়ার হামলা প্রতিরোধে আরো আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র পেতে পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে আবেদন জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণা সংস্থা জানিয়েছে, রাশিয়া তাদের অর্থনীতিতে এমন কিছু পরিবর্তন আনছে যা দেখে মনে হচ্ছে, তারা ইউক্রেনে একটি দীর্ঘ মেয়াদী যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্সটিটিউট অব ওয়ারের গবেষণায় বলা হয়েছে, ইউক্রেনে দীর্ঘ সময় ধরে সংঘাত চালিয়ে যাওয়ার ধকল যেন সামলানো যায় সেজন্য রাশিয়া নিজেদের অর্থনীতিতে পরিবর্তন আনছে।

ইউক্রেন যুদ্ধ সম্পর্কে ইন্সটিটিউট অব ওয়ার তাদের সর্বশেষ পর্যালোচনায় জানায়, ক্রেমলিন এমন কিছু আইন করার প্রস্তাব করছে, যা মানুষকে রাতের বেলায় বা কেন্দ্রীয় সরকারের ছুটির দিনেও কাজ করতে বাধ্য করবে।

ইন্সটিটিউট আরো জানিয়েছে, রুশ কর্তৃপক্ষ ইউেক্রেনের যাপোরিঝিয়া পরমাণু শক্তি কেন্দ্র রাশিয়ার জ্বালানি ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করতেও ব্যবস্থা নিচ্ছে।

এদিকে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরের লক্ষ্যবস্তু টার্গেট করে রাশিয়া দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অব্যাহত রেখেছে।

বন্দর শহর ওডেসা থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরের মিকোলাইভ শহর একের পর এক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে।

এ সময় শহরে এয়ার রেড সাইরেন, অর্থাৎ বিমান হামলার সতর্ক সঙ্কেত শোনা গেছে।

মেয়র আলেকজান্ডার সেনকেভিচ টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে শহরের বাসিন্দাদের উদ্দেশে লেখেন, "আপনারা আশ্রয় কেন্দ্রের ভেতরে থাকুন, শহরের শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটছে।"

শুক্রবার এই মিকোলাইভ থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে ওডেসার কাছে একটি বহুতল ফ্ল্যাটবাড়িতে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ২১ জন নিহত হয়েছে। তারপর মিকোলাইভে এই ঘটনা ঘটেছে।

কেন এই বিস্ফোরণ ঘটছে তা পরিষ্কার নয়, তবে রাশিয়া জানিয়েছে, তারা ওই অঞ্চলে ইউক্রেনের আর্মি কমান্ড পোস্টগুলোতে হামলা চালাচ্ছে। কিন্তু ইউক্রেন সরকার দাবি করেছে, মস্কো এখন যুদ্ধক্ষেত্র থেকে অনেক দূরের লক্ষ্যবস্তুগুলোতেও মিসাইল হামলা জোরদার করেছে।

অন্যদিকে রাশিয়ার দাবি, তারা সামরিক স্থাপনাতেই হামলা করছে, বেসামরিক লোকদেরকে তারা টার্গেট করেনি।

ওডেসাতে শুক্রবারের হামলায় একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক মাটিতে ধসে গেছে। এর আগে সোমবার ক্রেমেনচুকে একটি শপিং মলে হামলায় নিহত হয়েছে ১৯ জন।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করছে, তারা মিকোলাইভে এবং পূর্ব ডনবাস অঞ্চলে ইউক্রেনের সামরিক ফাঁড়িগুলো ধ্বংস করেছে। সেখানে তারা নিখুঁত লক্ষ্যভেদী অস্ত্র ব্যবহার করেছে।

এদিকে পূর্বের লুহানস্ক অঞ্চলের লিসিচানস্ক শহরের পরিস্থিতি খুবই গুরুতর বলেই মনে হচ্ছে। রুশ সমর্থিত ইউক্রেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বলেছে, তারা এখন লিসিচানস্ককে চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে।

রাশিয়ার তাস বার্তা সংস্থা একজন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকে উদ্ধৃত করেছে, যিনি দাবি করছেন, তাদের মিলিশিয়া এবং রুশ বাহিনী মিলে শহরটির সর্বশেষ কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাটিও দখল করে নিয়েছে।

লিসিচানস্ক ছিল পুরো লুহানস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনিয়ানদের সর্বশেষ দুর্গ। মনে হচ্ছে, ক্রমাগত রুশ হামলার মুখে এর পতন আসন্ন।

লুহানস্কের গভর্নর সেরহি হাইদাই বলেন, সেখানে হামলার শিকার গ্রামগুলোর বাড়িতে বাড়িতে আগুন জ্বলছে, গোলা হামলার মুখে মানুষ তাদের বাড়ির আগুন পর্যন্ত নেভাতে পারছে না।

সূত্র : বিবিসি