Naya Diganta

পাঠ্যবইয়ে ছড়া কবিতার হারানো পথ

পাঠ্যবইয়ে ছড়া কবিতার হারানো পথ

ছোটকালে বৈঠকখানার বারান্দায় বিছানার ওপর বসে হারিকেনের আলোতে পড়তে হতো। এই অভিজ্ঞতা আমার মতো বয়সের সকলের আছে। সেকালে ছোটবেলায় বিদ্যুতের কথা শুনিনি। শহর থেকে অর্ধশত কিলোমিটার দূরে গহিন গ্রামে যেভাবে একটা ছোট শিশু বেড়ে ওঠে আমিও ঠিক সেভাবেই বেড়ে উঠি। সন্ধ্যাবেলায় সকল প্রকার খেলাধুলা শেষ করে মাগরিবের নামাজের পরেই বই নিয়ে অধ্যয়ন শুরু করতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে আব্বার শাসন থেকে বাঁচার পথ ছিল না। আব্বা মাতব্বর প্রকৃতির মানুষ হওয়ার কারণে বিকেল বেলা গ্রামের মধ্যে বিভিন্নজনের অভাব-অভিযোগ শুনে সেগুলোর সমাধান করে তবেই বাড়িতে ফিরতেন। রাস্তাঘাট কাঁচা ও অন্ধকারের কারণে সহজে কেউ সন্ধ্যার পর বাড়ির বাইরে বের হতো না। আব্বা সাধারণত সন্ধ্যার পর বাড়িতে ফিরতেন এবং জিজ্ঞেস করতেন ওরা কখন পড়তে বসেছে? আমার মাকে মিথ্যা কথা বলতে শুনিনি। মা বলতেন ঠিক সময়েই বসেছে। মানুষ সিংহকে যে ভয় করে আমার আব্বাকে আমার ভাই বোনেরা তার চেয়ে বেশি ভয় করতাম। সাধারণত বিকেল বেলা গা-দ-ল, হা-ডু-ডু, ছি-বুড়ি, অথবা পুকুরে ডুব দিয়ে খেলে বাড়িতে ফিরতাম। কখনো কখনো খড় পেঁচিয়ে বড় করে দাড়ি দিয়ে বেঁধে বল বানিয়ে খেলতাম, সেকি আনন্দের খেলা যা এখন ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। চামড়ার বল আমাদের চিন্তাজগতের বাইরে। খেলাধুলার শেষে পুকুরে গোসল সেরে তবেই বই নিয়ে পড়া এক নিত্য অভ্যাস। বাড়িতে বছর চুক্তি চাকরি করত কাছির উদ্দিন কাকু, কালু আহমেদ কাকু, ময়েন উদ্দিন কাকু নয়তো ছদের আলী কাকু,আব্দুল্লাহ, আনিছার, তাছেড় নামের অথবা অন্য কেউ। তারা আমাদের বিছানার পাশে পাউই অর্থাৎ বাঁশের খুঁটির সাথে পাটের গোছা বেঁধে টারকাশে অথবা ঢাড়িতে দড়ি পাকিয়ে জড়ো করতেন। এটা ছিল কাজের লোকের সন্ধ্যাবেলার দায়িত্ব। সারা বছরের যত দড়ি লাগে তারা সন্ধ্যার অবসরে সেটা বানিয়ে রাখতেন। পড়তে বসে প্রথমে উচ্চস্বরে বাংলা ছড়া বা কবিতা পড়ে অভিভাবককে জানাতে হবে যে আমরা পড়ায় ফাঁকি দিচ্ছি না। আমরা কি কি পড়ি তা আমাদের কাকুরা অবলোকন করতেন এবং মনযোগ দিয়ে শুনতেন। বাংলায় ছড়া তারা মনযোগ দিয়ে শুনে মুখস্ত করে ফেলতেন। তাছির উদ্দিন নামে যে ছেলেটি আমাদের বাড়িতে চাকরি করত তার মেধা ছিল প্রখর। একবার বা দুইবার শুনলে কবিতা তার মুখস্থ হয়ে যেত। পরের দিন পড়তে বসলে কাকুরা আগের দিনের কবিতা মুখস্থ শুনিয়ে দিতেন। দেখতাম এসব কবিতা তাদের মনে দাগ কেটে দিতো। তারা কবিতা আপন মনে গুনগুন করে আবৃতি করে যেত।

বিশেষ করে বাড়ির সকলেই এসব উচ্চস্বরে কবিতা পাঠ শুনতো এবং নিজেরা এসব কবিতার মর্মার্থ নিয়ে আলোচনা করত। আব্বা মাঝে মধ্যে পড়ার বিছানায় বসে এসব অর্থপূর্ণ কবিতার মর্মার্থ ব্যাখ্যা করতেন। মা, বোন, ভাবী, ভাই, বোন সকলেই দেখতাম এসব কবিতার বিষয় নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করত এবং অনেকেই ঠুনকো কথা কাটাকাটিতে এসব কবিতার উদ্ধৃতি দিতো। বিশেষ করে শিক্ষকের মর্যাদা ছিল এরকম একটি ‘হট’ কবিতা। আজকে আমরা আধুনিকতার ছোঁয়ায় হাঁপিয়ে উঠেছি। সকলের মুখে শুনি ‘আর পারি না সামলাতে’। চার দিকে রব উঠেছে পরিবেশ গেল গেল বলে। আজকে আর গ্রামগঞ্জে হাটে বাজারে মানুষ একে অন্যকে বিশ^াস করে না। সকল জায়গাতে এক অবিশ^াসের কালোছায়া যেন আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে আমাদের। পিতা-পুত্র, স্বামী- স্ত্রী, ভাই-বোন পাড়াপ্রতিবেশীর মধ্যে যেন এক অলিখিত দ্বন্দ্ব ও অবিশ^াস কাজ করছে। কোনো ক্রেতাই আর বিক্রেতাকে বিশ^াস করে না। এক দোকান থেকে মালামাল ক্রয় করে অন্য দোকানে গিয়ে পুনরায় মাপ দেখে নেয় যেন মাপে ঠকে গেলাম নাকি এই শঙ্কায়। সুদ ঘুষের সয়লাব বয়ে যাচ্ছে সমাজ এবং সারা দেশ। কর্জে হাসানা সেই কবে উঠে গেছে ওয়াদা ভঙ্গ ও অবিশ^াসের কারণে। নির্বাচন প্রক্রিয়া যেন আধুনিক ফটকাবাজি হয়েছে। রাজা বিশ^াস করে না প্রজাকে, নাগরিকরা বিশ^াস করে না রাজাকে। এখন আর একজন অন্যের বিপদে এগিয়ে আসে না পেছনে আবার কোনো ঝামেলায় না পড়ে সে শঙ্কায়। সব জায়গাতে এক অবিশ^াস ও আস্থাহীনতা কাজ করছে। আমি ভাবনাচিন্তা করে যে কারণ পেয়েছি তার সাঙ্গে অনেকেই একমত হতেও পারে আবার নাও হতে পারে। আমার ধারণা যে নাগরিক চরিত্র আমরা উপভোগ করছি তার কারণ হলো, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে সংশোধন ও আধুনিকীকরণ করতে গিয়ে আধুনিক প্রগতিশীল নাগরিক তৈরির মানসে তেঁতুল গাছ, শোষকুরি গাছ, মাকাল গাছ রোপণ করে আমরা মিষ্টি আম, কাঁঠাল, জাম প্রাপ্তির আশা করেছি। অর্থাৎ আগাছা রোপণ করেছি আর আম-জাম লিচু কাঁঠাল কলা পেতে চাচ্ছি। এর চাইতে বড় আহম্মকি আর কী হতে পারে! আমি মনে করি শিক্ষাব্যবস্থার সাহিত্য অংশে নাগরিকের চরিত্র তৈরির মূল উপাদান থাকে। স্বাধীনতার পরে আমাদের শিক্ষা নির্মাতারা মনে করলেন পাঠ্যসূচির সাহিত্য অংশে যেসব কবিতা গল্প লিপিবদ্ধ করা আছে সেসব কবিতা ও গল্পের দ্বারা প্রতিক্রিয়াশীল, ধর্মান্ধ নাগরিক তৈরি হয় যা স্বাধীন দেশের জন্য উপযোগী নয়। ওই সব কবিতা গল্প পাকিস্তানি শাসকরা তাদের দেশের প্রয়োজনে সিলেবাসভুক্ত করেছিল। এখন দেশ স্বাধীন হয়েছে সুতরাং আমাদের দেশের উপযোগী কবিতা গল্প সিলেবাসভুক্ত করতে হবে। স্বাধীন দেশের স্বাধীন বুদ্ধিজীবীর দ্বারা নির্বাচিত কবিতা ও গল্প পাঠ করে যে স্বাধীন নাগরিক তৈরি হচ্ছে তার ফল আমরা হাতে হাতে পাচ্ছি। ঠিক এমনিভাবে বিজ্ঞান ও সমাজ অংশের মধ্যে দেখানো হয়েছে যে আধুনিক মানুষের পূর্ব-পুরুষ ছিল বানর। অর্থাৎ আমরা বানর থেকে রূপান্তরিত রূপ। এভাবে আমরা নিজেরাই নিজেদের ধ্বংস করেছি। দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের মতে আধুনিককালে কোনো জনপদে শিক্ষার লক্ষ্য সম্পর্কে তিনটি ভিন্ন মতবাদ প্রচলিত আছে। প্রথম মতবাদে বলা হয়েছে শিক্ষার লক্ষ্য হলো ব্যক্তির শ্রীবৃদ্ধির জন্য সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করা। দ্বিতীয় মতবাদে বলা হয়েছে শিক্ষার লক্ষ্য হলো ব্যক্তিকে সংস্কৃতিবান এবং রুচিশীল মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। তৃতীয় মতবাদে বলা হয়েছে শিক্ষাকে ব্যক্তিগত সৌকর্য বৃদ্ধি নয় বরং সার্বিকভাবে সমগ্র সম্প্রদায়ের শ্রীবৃদ্ধির মাধ্যম হিসেবে দেখা উচিত যেন শিক্ষার মাধ্যমে জনসমষ্টি যোগ্য এবং দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে। ব্যক্তির শ্রীবৃদ্ধি না ঘটলে সামাজিক অগ্রগতির পথ সুগম হয় না। জ্ঞানের মর্যাদা এবং পরিশ্রমের মূল্য দিতে না শিখলে কোনো কিছুই অর্জন হয় না। ঘোড়াকে যথাযথভাবে প্রশিক্ষিত করতে হলে যেমন চাবুকের প্রয়োজন হয় তেমনিভাবে শিশু-কিশোরদের উপযুক্তভাবে গড়ে তুলতে হলে প্রয়োজন হয় শিক্ষার উপযুক্ত ছড়ি। শিক্ষাব্যবস্থার সাহিত্য অংশে থাকে সেই উপযুক্ত শিক্ষার ছড়ি উপাদান। আমরা এখানে পাঠকের সুবিবেচনার জন্য সাহিত্যের কয়েকটি কবির নামসহ কবিতা তুলে ধরছি। যেমন উত্তম অধম- সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত।


১. ‘কুকুর আসিয়া এমন কামড়/দিল পথিকের পায়/ কামড়ের চোটে বিষদাঁত ফুটে বিষ লেগে গেল তায়/ঘরে ফিরে এসে রাত্রে বেচারা/বিষম ব্যথায় জাগে/মেয়েটি তাহার তারি সাথে হায়/জাগে শিয়রের আগে।/বাপেরে সে বলে ভর্ৎসনা ছলে/কপালে রাখিয়া হাত/তুমি কেন বাবা ছেড়ে দিলে তারে/তোমার কি নাই দাঁত?/কষ্টে হাসিয়া আর্ত কহিল/তুইরে হারালি মোরে/ দাঁত আছে বলে কুকুরের পায়ে/দংশি কেমন করে? /কুকুরের কাজ কুকুর করেছে/কামড় দিয়েছে পায়/তা বলে কুকুরে কামড়ান কি রে/মানুষের শোভা পায়?’
২. সঙ্কল্প- কাজী নজরুল ইসলাম ‘থাকব না কো বদ্ধ ঘরে/দেখব এবার জগৎটাকে-/কেমন করে ঘুরছে মানুষ/যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে।/দেশ হতে দেশ দেশান্তরে/ ছুটছে তারা কেমন করে/কিসের নেশায় কেমন করে/ মরছে যে বীর লাখে লাখে/কিসের আশায় করছে তারা/ বরণ মরণ যন্ত্রণাকে।/হাউই চড়ে চায় যেতে কে/চন্দ্রলোকের অচিনপুরে;/ শুনব আমি, ইঙ্গিত কোন/ মঙ্গল হতে আসছে উড়ে/পাতাল ফেড়ে নামব নিচে/ উঠব আবার আকাশ ফুড়ে/বিশ^ জগৎ দেখব আমি/ আপন হাতের মুঠোয় পুরে।’
৩. বড় কে?- ঈশ^রচন্দ্র গুপ্ত ‘আপনাকে বড় বলে বড় সেই নয়/লোকে যারে বড় বলে/বড় সেই হয়।/বড় হওয়া সংসারেতে/কঠিন ব্যাপার/সংসারেতে সে বড় হয়/বড় গুণ যার।/ হিতাহিত না জানিয়া/মরে অহঙ্কারে/নিজে বড় হতে চায়/ছোট বলি তারে।/গুণেতে হইলে বড়/বড় বলে তারে।/বড় যদি হতে চাও/ছোট হও তবে।’
৪. আমার পণ -মদনমোহন তর্কালঙ্কার ‘সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি/ সারা দিন আমি যেন ভালো হয়ে চলি।/আদেশ করেন যাহা মোর গুরুজনে/আমি যেন সেই কাজ করি ভালো মনে।/ ভাইবোন সকলেরে যেন ভালোবাসি/একসাথে থাকি যেন সবে মিলেমিশি।/ভালো ছেলেদের সাথে মিশে করি খেলা/পাঠের সময় যেন নাহি করি হেলা।/সুখী যেন নাহি হই আর কারো দুখে/মিছে কথা কভু যেন নাহি আসে মুখে।/সাবধানে যেন লোভ সামলিয়ে থাকি/কিছুতে কাহারে যেন নাহি দিই ফাঁকি।/ ঝগড়া না করি যেন কভু কারো সনে/সকলে উঠিয়া এই বলি মনে মনে।’
৫. আমাদের গ্রাম- বন্দে আলী মিঞা ‘আমাদের ছোট গায়ে ছোট ছোট ঘর/থাকি সেথা সবে মিলে নাহি কেহ পর।/পাড়ার সকল ছেলে মোরা ভাই ভাই/একসাথে খেলি আর পাঠশালায় যাই।/হিংসা ও মারামারী কভু নাহি করি/পিতা-মাতা গুরুজনে সদা মোরা ডড়ি।/ আমাদের ছোট গ্রাম মায়ের সমান /আলো দিয়ে বায়ু দিয়ে বাঁচাইছে প্রাণ।/মাঠভরা ধান আর জলভরা দীঘি /চাঁদের কিরণ লেগে করে ঝিকিমিকি।/আমগাছ জামগাছ বাঁশ ঝাড় যেন/মিলে মিশে আছে ওরা আত্মীয় হেন।/সকালে সোনার রবি পুব দিকে ওঠে /পাকি ডাকে বায়ু বয় নানা ফুল ফোটে।’
৬. কাজের আনন্দ- নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্য ‘মৌমাচি মৌমাচি/কোথা যাও নাচি নাচি/ দাঁড়াও না একবার ভাই।/ওই ফুল ফোটে বনে/ যাই মধু আহরণে/দাঁড়াবার সময় তো নাই।/ছোট পাখি ছোট পাখি/কিচিমিচি ডাকি ডাকি/কোথা যাও বলে যাও শুনি। /এখন না কব কথা/আনিয়াছি তৃণলতা/আপনার বাসা আগে বুনি।’
৭. শিক্ষকের মর্যাদা-কাজি কাদের নেওয়াজ, ‘বাদশাহ আলমগীর, /কুমারে তাহার পড়াইত এক মৌলভী দিল্লীর।/ একদা প্রভাতে গিয়া দেখেন বাদশাহ-শাহজাদা এক পাত্র হস্তে নিয়া/ ঢালিতেছে বারি গুরুর চরণে/পুলকিত হৃদে আনত নয়নে/শিক্ষক শুধু নিজ হাত দিয়া নিজেরি পায়ের ধুলি/ ধুয়ে মুছে সব করিছেন সাফ সঞ্চারি অঙ্গুলি।/শিক্ষক মৌলভী/ভাবিলেন আজি নিস্তার নাহি, যায় বুঝি তার সবি/দিল্লিপতির পুত্রের করে লইয়াছে পানি চরণের পরে/ স্পর্ধার কাজ হেন অপরাধ কে করেছে কোন কালে?/ভাবিতে ভাবিতে চিন্তার রেখা দেখা দিল তার ভালে।/ হঠাৎ কি ভাবি উঠি/কহিলেন,আমি ভয় করি না’ক,যায় যাবে শির টুটি/ শিক্ষক আমি শ্রেষ্ঠ সবার/ দিল্লীর পতি সে তো কোন ছার/ ভয় করি নাক,ধারি না’ক ধার, মনে আছে মোর বল/ বাদশাহ সুধালে শাস্ত্রের কথা শুনাব অনর্গল।/যায় যাবে প্রাণ তাহে/প্রাণের চেয়েও মান বড়, আমি বোঝাব শাহানশাহে।/তার পরদিন প্রাতে/বাদশাহর দূত শিক্ষককে ডেকে নিয়ে গেল কেল্লাতে।/খাস কামরাতে যাবে/শিক্ষককে ডাকি বাদশা কহেন, ‘শুনুন জনাব তবে/পুত্র আমার আপনার কাছে সৌজন্য কি কিছু শিখিয়াছে?/বরং শিখেছে বেয়াদবি আর গুরুজনে অবহেলা/নহিলে সেদিন দেখিলাম যাহা স্বয়ং সকাল বেলা/ শিক্ষক কন,‘জাহাপনা আমি বুঝিতে পারিনি হায়/কি কথা বলিতে আজিকে আমায় ডেকেছেন নিরালায়?/বাদশাহ কহেন,‘সেদিন প্রভাতে দেখিলাম আমি দাঁড়ায়ে তফাতে/নিজ হাতে যবে চরণ আপনি করেন প্রক্ষালণ/পুত্র আমার জল ঢালি শুধু ভিজাইছে ও চরণ/নিজ হাতখানি আপনার পায়ে বুলাইয়া সযতনে/ ধুয়ে দিল না’ক কেন সে চরণ, স্মরি ব্যথা পাই মনে’/ উচ্ছ্বাস ভরে শিক্ষকে আজি দাঁড়ায়ে সগৌরবে/কুর্নিশ করি বাদশাহে তবে কহেন উচ্চরবে/‘আজ হতে চির-উন্নত হল শিক্ষাগুরুর শির/সত্যই তুমি মহান উদার বাদশাহ আলমগীর।’
[বাকি অংশ আগামী সংখ্যায়]