Naya Diganta

গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে খুলনায় মানববন্ধন

গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক সপ্তাহ উপলক্ষে গতকাল শনিবার খুলনায় আলোচনা সভা, মানববন্ধন ও শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের সংগঠন মায়ের ডাক ও মানবাধিকার কর্মীদের সংগঠন হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার নেটওয়ার্ক যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করে। মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক মুহাম্মদ নূরুজ্জামান দিবসের বিবৃতি পাঠ করেন এবং কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন।
মহানগরীর খানজাহান আলী রোডে জাতিসঙ্ঘ পার্কের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন চলাকালীন অনুষ্ঠিত সমাবেশে গুমের শিকার বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের ব্যবসায়ী মো: হাবিবুর রহমান হাওলাদারের ছেলে কলেজছাত্র মো: শাওন হাওলাদার বলেন, তার বাবাকে ২০১১ সালের ৬ জুলাই পুলিশ বাড়ি থেকে আটক করে নিয়ে যায়। তার পর থেকে দীর্ঘ ১১ বছরেও তার কোনো সন্ধান মেলেনি। এখন তারা পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত। বাবা না থাকায় তাদের লেখাপড়া ও সংসারের খরচও বহন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তার মাও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিনি তার বাবাকে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে যশোরের বেনাপোলের মেধাবী কলেজছাত্র মো: রেজোয়ান হোসেনের বড় ভাই মো: রিপন হোসেন বলেন, তার ছোট ভাই রেজোয়ান হোসেনকে ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট বেনাপোল থানা পুলিশ আটক করে। পরবর্তী সময়ে ওসি অপূর্ব হাসানের নেতৃত্বে তাকে গুম করা হয়। এ ঘটনায় তারা ভয়ে মামলা পর্যন্ত করার সাহস পাননি। দীর্ঘ ছয় বছরেও তার ভাইয়ের সন্ধান না পেয়ে তার বৃদ্ধ মা-বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
কর্মসূচিতে আরো বক্তৃতা দেনÑ ড. অ্যাডভোকেট মো: জাকির হোসেন, সাংবাদিক কাজী মোতাহার রহমান বাবু, বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা জেলা সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম, গ্লোবাল খুলনার আহ্বায়ক শাহ মামুনুর রহমান তুহিন, মানবাধিকার কর্মী শেখ আব্দুল হালিম, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ছায়াবৃক্ষের প্রধান নির্বাহী মাহবুব আলম বাদশা।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, গুম মানবতাবিরোধী অপরাধ। তারা এখনই গুম বন্ধ এবং গুম হওয়া ব্যক্তিদের তাদের স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্ত্রী-সন্তানরা আর্থিক ও সামাজিকভাবে অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে চরম কষ্টে রয়েছেন। এতে দেশের সাধারণ নাগরিকরাও নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছেন। এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে হলে সুষ্ঠু গণতন্ত্র চর্চা এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।