Naya Diganta

কুমিল্লার নাশকতা মামলায় খালেদা জিয়ার স্থায়ী জামিন

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বাসে পেট্রলবোমা হামলার ঘটনায় নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে স্থায়ী জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। খালেদা জিয়ার জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল মঞ্জুর করে গতকাল বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি এসএম মুজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা করা হয়েছে। ন্যায়বিচার পেলে সব মামলায় তিনি খালাস পেতেন। তাকে আদালত জামিন দিলে তার অব্যবহার করেন না, এ মামলা তার প্রমাণ। এ মামলায় আগে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়েছিলেন। সেটার অপব্যবহার করেননি। এখন এ মামলায় তার জামিনের রুল মঞ্জুর হয়েছে। অর্থাৎ তার জামিন এখন স্থায়ী হয়েছে।
২০১৫ সালের শুরুর দিকে ২০ দলীয় জোটের অবরোধ চলাকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রামে দুষ্কৃতকারীদের ছোড়া পেট্রলবোমায় আইকন পরিবহনের একটি বাসের কয়েকজন যাত্রী অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। আহত হন আরো ২০ জন। সেসব ঘটনায় দুটি মামলা করা হয়। ২০১৯ সালের ৬ মার্চ একই মামলায় হাইকোর্ট রুল জারিসহ ছয় মাসের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
নাইকো মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি ৫ জুলাই: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ৫ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে নবনির্মিত ২ নম্বর ভবনে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার নবম বিশেষ জজ শেখ হাফিজুর রহমানের আদালত এ দিন ধার্য করেন।
এ দিন খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় আদালতে হাজির হতে পারেননি। তার পক্ষে আইনজীবীরা শুনানি পেছানোর আবেদন করেন। আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ৫ জুলাই শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার, জয়নুল আবেদীন মেজবাহ ও জিয়াউদ্দিন জিয়া।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেনÑ চারদলীয় জোট সরকারের সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ (মৃত), সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন (মৃত), তখনকার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো: শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া (সিলভার সেলিম) এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ। তবে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন মৃত্যুবরণ করায় তাকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর খালেদা জিয়াসহ অন্যদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয়। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে তুলে দেয়ার মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন।