Naya Diganta

ডিসেম্বরে উন্মুক্ত হতে পারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল

দুই দেশের যৌথ অর্থায়নে নির্মিতব্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল আগামী ডিসেম্বরেই উন্মুক্ত হতে পারে। সেই লক্ষ্য নিয়ে সার্বিকভাবে কাজের অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৮৬ ভাগ। এদিকে টানেল সংযোগ সড়কের কাজের অগ্রগতিও সন্তোষজনকভাবে এগিয়ে চলছে। সংযোগ সড়কের কাজের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৪৫ ভাগ। ২০০৮ সালে চট্টগ্রামের লালদীঘির ময়দানে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের মধ্যদিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ দেশের উন্নয়নের যে আকাক্সক্ষার কথা বলেছিলেন তা আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে আগামী ডিসেম্বরে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে মাল্টি লেন রোড টানেল নামে প্রত্যাশিত প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এতে প্রকল্প সহায়তা রয়েছে ৫ হাজার ৯০০ কোটি ১৯ লাখ টাকা এবং সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন রয়েছে ৪ হাজার ৪৬১ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আনোয়ারা ও চট্টগ্রাম প্রান্তে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে ৩৮৩ একর। যৌথভাবে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সেতু ও সড়ক মন্ত্রণালয় ও চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড।
মূল টানেল ২.৪৫ কিলোমিটার ও দুইপ্রান্তের তীরসহ টানেলের মোট দৈর্ঘ হচ্ছে ৩.৪ কিলোমিটার আর নদীর পূর্ব ও পশ্চিম উভয় পাশের সংযোগ সড়কসহ এই প্রকল্পের সর্বমোট দৈর্ঘ হবে ৯.৩৩ কিলোমিটার। আর প্রতিটি টিউবের ভিতরের অংশে প্রশস্ত হচ্ছে ১০.৮ মিটার করে।
আনোয়ারা প্রান্তে ৭০০ মিটারের একটি উড়াল সড়ক বা ফ্লাইওভারসহ ৫.৪৫ কিলোমিটার দৈর্ঘের চার লেন সড়ক নির্মিত হবে, যা আনোয়ারা চাতুরী চৌমুহনীতে এসে চট্টগ্রাম আনোয়ারা বাঁশখালী পিএবি সড়কের সাথে মিলিত হবে। অপর প্রান্তে .৫৫ কিলোমিটার দৈর্ঘের সংযোগ সড়ক মিলিত হচ্ছে নগরীর পতেঙ্গা নেভাল একাডেমি পয়েন্ট দিয়ে মূল সড়কের সাথে।
জানা গেছে, ২০০৮ সালে লালদীঘির ওই জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির প্রেক্ষিতে ৯ম জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পরপরই শুরু হয়েছিল নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের সম্ভাব্য সমীক্ষাসহ সব ধরনের প্রস্তুতি। ১০ জাতীয় নির্বাচনের পরই প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত ওই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ পেতে শুরু করে। পর্যায়ক্রমে ২০১৭ সালের ৬ নভেম্বর এই প্রকল্প বাস্তবায়নের চুক্তিসম্পন্ন হয় এবং একই বছরের ৫ ডিসেম্বর থেকে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। প্রকল্প বাস্তবায়ন বা সম্পাদনের সময় ধরা হয়েছে পাঁচ বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
বহুল প্রত্যাশিত কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণ প্রকল্পের মূল কাজ দুটি টিউব খনন সম্পন্নসহ টানেল প্রকল্প অগ্রগতি গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ৮৬ শতাংশ। গতকাল সোমবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন প্রকল্পের পরিচালক হারুন অর রশিদ চৌধুরী। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্প কাজের নির্দ্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে তার।
গতকাল তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, প্রকল্প কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে বৈশ্বিক মহামারী করোনার প্রকোপের কারণে প্রায় দুই বছর ধরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করতে হয়েছে। এ কারণে সময় প্রচুর লেগেছে তার পরেও প্রত্যাশিতভাবে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে এবং প্রকল্প কাজ সম্পন্নের মেয়াদ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার প্রত্যাশা করছেন তিনি। এদিকে টানেল সংযোগ সড়কের অগ্রগতি প্রসংগে গতকাল বিকেলে যোগাযোগ করা হলে সওজের দোহাজারী সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী বাবু সুমন সিংহ নয়া দিগন্তকে বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্প সম্পন্ন হওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে সার্বিকভাবে সংযোগ সড়কের কাজ ৪৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।