Naya Diganta
আইজির কাছে লিখিত অভিযোগ

বগুড়ায় পুলিশের ক্রসফায়ারের হুমকি ৮ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিলেন এসআই

আইজির কাছে লিখিত অভিযোগ

বগুড়ার শেরপুর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে গ্রেফতারের সময় কেড়ে নেয়া ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা ফেরত না দেয়ায় এবং আসামির বাবার নামের সাথে এজাহারের নামের মিল না থাকলেও তাকে গ্রেফতার করে হয়রানির অভিযোগে পুলিশের আইজি বরাবর অভিযোগ করা হয়েছে। গত ৯ মে ডাকযোগে প্রেরিত অভিযোগের ব্যাপারে ভুক্তভোগী ব্যক্তি দোষী দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিভাগীয় শাস্তি দাবি করেছেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার ঘোড়দৌড় গ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা আবদুস ছালাম শেখের ছেলে ও বেসরকারি কোম্পানি ম্যাক্সওয়েলের জেলা কর্মকর্তা আবদুন নূর গত ৯ ফেব্রুয়ারি নিজ বাড়ি থেকে পাশের শাজাহানপুর উপজেলায় গেলে শেরপুর থানার এসআই মোস্তাফিজ ও এক কনস্টেবল তার পথরোধ করেন। তারা তাকে পুলিশের মোটরসাইকেলে উঠতে বলেন। তখন ওয়ারেন্ট না দেখালে থানায় যেতে অপারগতা জানালে তাকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে গালাগাল করে জোরপূর্বক থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে ম্যাক্্রওয়েল কোম্পানির পণ্য গ্রহণের নগদ ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা, একটি ব্যাগ ও দু’টি মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় পুলিশ। শেরপুর থানায় পুলিশ ওয়ারেন্ট দেখালে সেখানে আসামির নাম ভুল হিসেবে আবদুর নূর এবং বাবার নাম আবদুস সামাদ পাওয়া যায়। কুড়িগ্রাম থানার এসআই আবদুল কাইয়ুম সঠিক তদন্ত না করে কুড়িগ্রাম সদর আমলি আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
আইজির কাছে পাঠানো অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, আসামিকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির না করে জেল পুলিশের সাথে যোগসাজশ করে বগুড়া কারাগারে পাঠানো হয়। আসামির নাম ও বাবার নাম ভুল থাকার কারণে তার পরিবার পিসি মুলে খাবার ও টাকা-পয়সা দিলেও ১৫ দিন পর ফেরত যায়। এরপর ২০২০ সালের ৪ মার্চ তাকে বগুড়া কারাগার থেকে কুড়িগ্রাম কারাগারে পাঠানো হয়। দীর্ঘ ৫৫ দিন কারাভোগের পর তিনি জামিনে মুক্তি পান। মুক্তির পর গ্রেফতারের সময় জমা নেয়া শেরপুর থানার এসআই মোস্তাফিজের কাছে ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা, একটি ব্যাগ ও দু’টি মোবাইল ফোন ফেরত চাইলে টাকা ফেরত না দিয়ে শুধু ব্যাগ ও দু’টি ফোন ফেরত দেয়া হয়। এ নিয়ে কথা বলতে গেলে এসআই মোস্তাফিজ নূরকে গুম, ক্রসফায়ার ও মামলার হুমকি দেয়। অভিযোগে আরো বলা হয়, মামলার বাদি কুড়িগ্রাম জেলা সদরের ভেরভরী গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে রাশেদুল ইসলাম তার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ধার নিয়ে পরিশোধ না করার অভিযোগ এনে আবদুর নূরের নামে কুড়িগ্রাম সদর আমলি আদালতে গত ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর একটি মামলা করেন।
ভুক্তভোগী নূর অভিযোগ করে বলেন, আমি বেসরকারি চাকরিজীবী। মামলার বাদি ও সাক্ষীদের কাউকে চিনি না এবং কখনো বাদির সাথে ব্যবসা করিনি। বাদি আমার বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা অভিযোগ দিলে পুলিশ তদন্ত না করে আমার ও আমার বাবার নামের সাথে এজাহারের নামের মিল না থাকলেও কুড়িগ্রাম থানা পুলিশ আদালতে মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছে। এতে আমি হয়রানির শিকার হয়েছি এবং কারাভোগ করেছি এবং আমার মুক্তিযোদ্ধা বাবারও সম্মানহানি হয়েছে।
বর্তমানে শেরপুর থানা ও কুড়িগ্রাম থানা পুলিশ আসামি নূর ও তার পরিবারকে গুম, মিথ্যা মামলা ও প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এ ব্যাপারে সঠিক তদন্ত করে কুড়িগ্রাম থানার এসআই আবদুল কাইয়ুম ও শেরপুর থানার এসআই মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তি প্রদানের জন্য পুলিশ মহাপরিদর্শকের কাছে আবেদন জানানো হয়।
এ ব্যাপারে মামলার বাদি রাশেদুল ইসলামের সাথে গত শনিবার মোবাইল ফোনে (০১৭৩৬-০৭১৮৩০ ) যোগাযোগ করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।