Naya Diganta

জামিন নামঞ্জুর, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ ট্রাস্টিকে পুলিশে দিলেন হাইকোর্ট

হাইকোর্ট।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের জমি কেনা সংক্রান্ত অর্থ আত্মসাতের মামলায় আসামি ট্রাস্টি বোর্ডের চার সদস্যের আগাম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদেরকে পুলিশে দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসাথে আসামিদেরকে হেফাজতে নেয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিম্ন আদালতে হাজির করতে শাহবাগ থানা–পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

রোববার বিচারপতি মো: নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো: ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

চার আসামি হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এম এ কাশেম, মোহাম্মদ শাহজাহান ও বেনজীর আহমেদ।

এর আগে শুনানিকালে আদালত বলেন, মানি লন্ডারিং ও দুর্নীতি হত্যার চেয়ে বিপজ্জনক অপরাধ। একটি হত্যা একজন ব্যক্তি বা পরিবার বা সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তবে মানি লন্ডারিং ও দুর্নীতি দেশ ও জাতিকে ধ্বংস করে দিতে পারে।

প্রায় ৩০৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ৫ মে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

ছয়জনের মধ্যে ওই চারজন আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। এর ওপর গত বুধবার শুনানি হয়। ওই দিন আদালত পক্ষগুলোকে শুনানির সারসংক্ষেপ লিখিত আকারে জমা দিতে বলে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। ধার্য তারিখে আবেদনকারীপক্ষ সারসংক্ষেপ লিখিত আকারে জমা দিতে সময়ের আরজি জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আজ বেলা দুইটা পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। একইসাথে আবেদনকারীদের নির্ধারিত সময়ে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন।

এর ধারাবাহিকতায় আজ বেলা সোয়া দুইটার দিকে জামিন আবেদনের শুনানি হয়। এ সময় চার আবেদনকারী আদালতে হাজির ছিলেন। আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও মিজান সাঈদ। দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের আদেশের পর চারজনকে আদালতে নিয়োজিত পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন হাইকোর্ট।

এ মামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ডেভেলপমেন্টের নামে ৯ হাজার ৯৬ দশমিক ৮৮ ডেসিমাল জমির ক্রয়মূল্য বাবদ ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা অতিরিক্ত অর্থ হস্তান্তর, রূপান্তর, স্থানান্তর ও গোপন করার মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যায়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় অর্থাৎ সরকারের সুপারিশ/অনুমোদনকে পাশ কাটিয়ে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের কিছু সদস্যের অনুমোদনের মাধ্যমে এই অর্থ লোপাট করা হয়। এ ছাড়া নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির সদস্যদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির আরো অভিযোগ রয়েছে। সেসব অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে।