Naya Diganta

ফেনীর একরাম হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৭ আসামি এখনো অধরা

বহুল আলোচিত ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি একরামুল হক একরাম হত্যা মামলার রায় ঘোষণার চার বছরেও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৭ আসামি গ্রেফতার হয়নি। বর্বরোচিত এ হত্যাকাণ্ডের আট বছর পূর্ণ হলেও ডেথ রেফারেন্স শুনানির অপেক্ষায় রায় কার্যকর ঝুলে আছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২০ মে ফেনী শহরের একাডেমি সড়কের অধুনালুপ্ত বিলাসী সিনেমা হলের সামনে একরামের গাড়ির গতিরোধ করে তাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার পর গাড়িসহ পুড়িয়ে ফেলা হয়। এ ঘটনায় তার ভাই রেজাউল হক বাদি হয়ে ফেনী মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। একই বছরের ৩০ আগস্ট ৫৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন ওসি আবুল কালাম আজাদ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ১৬ জন আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ ফেনী জেলা ও দায়রা জজ আমিনুল হক এ মামলার রায়ে রায় ঘোষণায় ৫৬ জন আসামির মধ্যে ৩৯ জনের ফাঁসির আদেশ ও ১৬ জনকে খালাস দেন। এদের মধ্যে সোহেল নামে এক আসামি রায় ঘোষণার আগেই র্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে মারা যান। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ৩৯ আসামির মধ্যে ২২ জন কারাগারে রয়েছেন। বাকি ১৭ জনের মধ্যে আটজন জামিনে বেরিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার শুরু থেকেই ৯ জন আত্মগোপনে রয়েছেন।
গ্রেফতারকৃত ২২ আসামি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির আদেল, ফেনী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর আবদুল্লাহিল মাহমুদ শিবলু, সাজ্জাদুল ইসলাম পাটোয়ারী সিফাত, আবু বক্কর সিদ্দিক, আজমির হোসেন রায়হান, শাহজালাল উদ্দিন শিপন, জাহিদুল ইসলাম জাহিদ ওরফে আজাদ, কাজী শানান মাহমুদ, মীর হোসেন আরিফ ওরফে নাতি আরিফ, আরিফ ওরফে পাঙ্কু আরিফ, রাশেদুল ইসলাম রাজু, সোহান চৌধুরী, জসিম উদ্দিন নয়ন, নিজাম উদ্দিন আবু, আবদুল কাইউম, নুর উদ্দিন মিয়া, তোতা মানিক, সজিব, মামুন, রুবেল, হুমায়ুন ও টিপু খালাস চেয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক জাহিদ চৌধুরী, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়লা জেসমিন বড় মনির ছেলে আবিদুল ইসলাম, তার সহযোগী এমরান হোসেন রাসেল, জাহিদুল হাসেম সৈকত, চৌধুরী মোহাম্মদ নাফিজ উদ্দিন অনিক, জিয়াউর রহমান বাপ্পি, আরমান হোসেন কাউসার ও জসিম উদ্দিন জামিনে গিয়ে পালিয়ে যান। এছাড়া ইসমাইল হোসেন ছুট্টু, কফিল উদ্দিন মাহমুদ আবির, রাহাত মোহাম্মদ এরফান আজাদ, শফিকুর রহমান, একরাম হোসেন, মোসলেহ উদ্দিন আসিফ, মহিউদ্দিন আনিছ, টিটু ও বাবলু ঘটনার পর থেকে পলাতক।
ফেনী থানার ওসি নিজাম উদ্দিন বলেন, একরাম হত্যা মামলার ১৭ আসামিকে গ্রেফতারে সোর্স নিয়োগসহ যাবতীয় প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।