Naya Diganta
নিবন্ধনের দ্বিতীয় দফা সময় শেষ হচ্ছে আজ

এখনো হজে সৌদি অংশের খরচ কত জানে না এজেন্সি

নিবন্ধনের দ্বিতীয় দফা সময় শেষ হচ্ছে আজ

সৌদি আরব দেশভিত্তিক হজযাত্রীদের কোটা ঘোষণা করলেও এখনো তাদের অংশে হজযাত্রীদের খরচের হিসাব দেয়নি। হজযাত্রীদের ভিসার আবেদন গ্রহণ প্রক্রিয়াও শুরু করেনি তারা। তবে এর আগেই বাংলাদেশ হজ প্যাকেজ ঘোষণা ও হজ নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করেছে। নিবন্ধনের জন্য দ্বিতীয় দফা সময় শেষ হচ্ছে আজ।
সৌদিসহ সারাবিশ্ব থেকে এ বছর মোট ১০ লাখ মানুষ পবিত্র হজ পালন করবেন। বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রী যাবেন ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চার হাজার জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৫৩ হাজার ৫৮৫ জন। তবে ২০২০ সালেই দেশ থেকে সরকারিভাবে দুই হাজার ৬০৪ জন এবং বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে ৫১ হাজার ৮৭৬ জন নিবন্ধন করে রাখেন। তবে এর মধ্যে যাদের বয়স ৬৫ বছরের বেশি হয়েছে তারা এবার হজে যেতে পারবেন না। তাদের স্থানে অন্য হজযাত্রী প্রতিস্থাপিত হবেন। এদিকে ২০২০ সালের তুলনায় এ বছর জনপ্রতি ৩৭ হাজার ১৫০ টাকা থেকে সোয়া দুই লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ বেড়েছে। এ কারণে আগের নিবন্ধিতদেরই আবার নিবন্ধনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। প্রথম দফা ১৬ থেকে ১৮ মে এবং পরে ১৯ থেকে ২২ মে পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। মূলত তাদের কাছ থেকে এ সময়ে বাকি টাকা আদায় করা হচ্ছে। জানা যায়, গতকাল পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট দুই হাজার ৭৭ জন নিবন্ধন কনফার্ম করেছেন। যাদের মধ্যে গতকাল করেছেন ১৬৮ জন। তবে বেসরকারি পর্যায়ে নিবন্ধিতদের কোনো হিসাব সরকারের কাছে নেই। এ সংক্রান্ত সার্ভার খুঁজে দেখা যায় সেখানে আগের নিবন্ধিত ৫১ হাজার ৮৫১ জনকেই দেখানো হচ্ছে। এদিকে হজ নিবন্ধনের জন্য দ্বিতীয় দফায় দেয়া সময় শেষ হচ্ছে আজ। এ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজ নিবন্ধন সম্পন্ন করার জন্য এজেন্সি মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে হজ এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হাব। গতকাল সংগঠনটির মহাসচিব ফারুক আহমদ সরদার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানান হয়।
সৌদি অংশের খরচের হিসাব জানে না এজেন্সি : গত ১১ মে ধর্মমন্ত্রণালয় সরকারি হজযাত্রীদের জন্য দু’টি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে। এ সময় ধর্মপ্রতিমন্ত্রী মো: ফরিদুল হক খান জানান, সৌদি সরকারের হজের ঘোষণার বিলম্বের কারণে এবং এখন পর্যন্ত সৌদি আরবের প্রকৃত খরচের হিসাব না পাওয়ায় সম্ভাব্য ব্যয় বিবেচনা করে হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হচ্ছে। এরপর আরো ১০ দিন পার হলেও জানা যায় এখনো পর্যন্ত সৌদি আরবের প্রকৃত খরচের হিসাব জানতে পারেনি সরকার ও বেসরকারি এজেন্সি মালিকরা। ফলে তারা এখনো দুশ্চিন্তায় রয়েছে। জানা যায়, সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনায় এখনো বাড়ি ভাড়া করতে পারেনি এজেন্সিগুলো। এছাড়া বাস ও ট্রেন সার্ভিস, মিনা ও আরাফায় তাঁবু ভাড়া, জমজমের পানি, ভিসা ফি, ইন্স্যুরেন্সসহ বিভিন্ন খরচ রয়েছে এর মধ্যে। ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সৌদি সরকার তাদের অংশের খরচের হিসেব দিলে প্যাকেজের সাথে তা সমন্বয় করা হবে। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নিবন্ধনের কথা বললেও সৌদি আরব এখনো হজযাত্রীদের ভিসা দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেনি বলে এজেন্সি মালিকরা জানিয়েছেন।
হজযাত্রীদের বিনামূল্যে পিসিআর টেস্ট : চলতি বছরে হজযাত্রীদের বিনামূল্যে করোনার আরটিপিসিআর টেস্ট করা হবে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে বলা হয়, ১৪৪৩ হিজরি সালের হজযাত্রীদের বিনামূল্যে আরটিপিসিআর টেস্টের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ জন্য হজযাত্রীদের আরটিপিসিআর টেস্ট দেশে বিদ্যমান ব্যবস্থাতেই সম্পন্ন করার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। এ বছর হজযাত্রীদের জন্য দু’টি শর্ত নির্ধারণ করেছে সৌদি আরব। বিদেশী হজযাত্রীদের বয়স ৬৫ বছরের নিচে এবং সৌদি আরবের টিকাদান কর্মসূচিতে যেসব টিকা ব্যবহারের অনুমতি আছে সেগুলোর কোনো একটির দুই ডোজ নেয়ার সনদ থাকতে হবে। এছাড়া অনুমোদিত হজযাত্রীদের অবশ্যই সৌদি আরবের বিমানে ওঠার অন্তত ৭২ ঘণ্টা আগে করোনার পিসিআর টেস্ট করাতে হবে এবং সেই টেস্টে নেগেটিভ সনদ পেতে হবে।
সরকার অবশ্য হজযাত্রী বুস্টার ডোজ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে বেশ আগেই। গত ২১ এপ্রিল এক আদেশে হজযাত্রীদের করোনার বুস্টার ডোজ নেয়ার আহ্বান জানায় ধর্ম মন্ত্রণালয়। গত ১৯ মে ধর্ম মন্ত্রণালয় আবারো যেসব হজযাত্রী বুস্টার ডোজ এখনো নিতে পারেননি তাদের দ্রুত করোনার টিকা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে- হজযাত্রীদের হজে যাওয়ার আগে ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা নিতে হবে। করোনার বুস্টার ডোজ ও ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা নিতে মাঝখানে ১৫ দিনের ব্যবধান থাকতে হয়। এজন্য দ্রুততম সময়ে করোনার বুস্টার ডোজ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
হজ কার্যক্রমে ৮০৯ এজেন্সি : এ বছর হজ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এ পর্যন্ত ৮০৯টি বেসরকারি এজেন্সিকে অনুমতি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। সর্বশেষ গত ১৯ মে আটটি এজেন্সিকে অনুমতি দেয়া হয়। এর আগে চার দফায় আরো ৮০১টি এজেন্সিকে অনুমতি দেয় সরকার।