Naya Diganta

অর্থদানবদের গডফাদার তাণ্ডব

বাংলাদেশের অর্থবাণিজ্যের রথী-মহারথী এবং আর্থিক খাতের সম্মানিত অভিভাবকদের কয়েকজনের সাথে সাক্ষাৎ এবং ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলাম সেই ১৯৮৬ সালে। তখনকার দিনের ব্যবসাবাণিজ্যে আজকের মতো পুকুরচুরি বা সাগর লুটের ঘটনা ঘটত না। অন্য দিকে বাংলাদেশ ব্যাংক, সরকারি-বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে অথবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এস কে সুর অথবা পি কে হালদারের মতো কোনো লোক গুরুত্বপূর্ণ পদ-পদবিতে বসবে এমনটি কল্পনাও করা যেত না। আজকের দিনে বড় বড় সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী বা ব্যবস্থাপনা পরিচালক যেভাবে নতজানু হয়ে কাঁচুমাচু ভঙ্গিতে চিহ্নিত অর্থদানবদের রঙ্গমহলে গিয়ে বসে থাকেন এবং তাদের হুকুম তামিল করে হাজার কোটি টাকার ঋণের বরাদ্দপত্র নিজ হাতে তাদের অফিস বা বাসায় গিয়ে সমর্পণ করেন তা ১৯৮৬-৮৭ সালে স্বপ্নেও কল্পনা করা যেত না।

উল্লিখিত সময়ে ব্যাংকিং সেক্টরে যারা দিকপাল ছিলেন তাদের মধ্যে কাজী বাহারুল ইসলামের সাথে আমার প্রথম সখ্য গড়ে ওঠে। তিনি যখন রূপালী ব্যাংকের এমডি ছিলেন তখন তার অফিসে সাক্ষাৎ করতে গিয়ে দেখি বাংলাদেশের একজন নামকরা শীর্ষ ব্যবসায়ী একজন ডিজিএমের রুমে কাঁচুমাচু করে বসে আছেন। তখনকার দিনের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কর্মকর্তা ছাড়া সাধারণত কোনো ক্লায়েন্টদের সাক্ষাৎ দিতেন না। আর শাখা ব্যবস্থাপক, জোনাল অফিস এবং হেড অফিসের মধ্যে এমন একটি চেইন অব কমান্ড ছিল তা যারা দেখেছেন তারা যদি ইদানীংকালের চেইন অব কমান্ডের কবলে পড়েন তাহলে নির্ঘাত আত্মহত্যা করতে চাইবেন।

কাজী বাহারুল ছাড়াও অগ্রণী ব্যাংকের তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ আর খোন্দকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর নুরুল ইসলাম ও সেগুফতা বখত চৌধুরীকে দেখার সুযোগ পেয়েছিলাম। পরবর্তীকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আতাউল হক এবং খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ ছাড়াও বেসিক ব্যাংকের তিনজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক যথাক্রমে জনাব কোরেশি, মজিদ এবং ইকবালের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আইডিএনসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্বরত একজন নামকরা ব্যাংকার যার ডাক নাম ছিল তুলা তার সাথেও পরিচিত হলাম। প্রয়াত রাজনীতিবিদ কে এম ওবায়দুর রহমানের সাথে ডাকসুর জিএস অথবা ভিপি ছিলেন তুলা ভাই এবং ওবায়েদ ভাই একদিন ফোন করে আমাকে তার কাছে পাঠিয়েছিলেন।

বড় ব্যবসায়ীদের মধ্যে ইস্পাহানী গ্রæপের চেয়ারম্যান সদর ইস্পাহানী এবং পরবর্তী চেয়ারম্যান বেহরুজ ইস্পাহানীর সাথে ঘনিষ্ঠতা ছিল। এ ছাড়া কুষ্টিয়া টেক্সটাইল, আফিল জুট মিলসহ আশির দশকে আরো অনেক বড় শিল্প কল-কারখানার মালিক ছিলেন প্রয়াত আফিল উদ্দিন। তার সঙ্গে এবং তার দুই সন্তানের সঙ্গেও সখ্য ছিল। এর বাইরে এ কে খান গ্রæপের জহির উদ্দিন, সিঙ্গারের মাহবুব জামিল, বাটা কোম্পানির জনাব আলমসহ দেশী-বিদেশী অনেক করপোরেট হাউজের প্রধান নির্বাহী, অথবা মালিকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। পরবর্তীকালে নিজের ব্যবসা, রাজনীতি এবং সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বহু ভালো মানুষের সংস্পর্শ পেয়েছি। আমার অভিজ্ঞতাভাণ্ডারে মন্দ মানুষের সাহচর্যের কুৎসিত স্মৃতি তেমন নেই বললেই চলে। কেবল বাংলাদেশ ব্যাংকের অভিযুক্ত ও বহুল বিতর্কিত সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুরের সঙ্গে আমার ক্ষণেকের তিক্ত অভিজ্ঞতা এবং তাকে দাঁতভাঙা উচিত শিক্ষা দেয়ার যে সুযোগ পেয়েছিলাম সেই কাহিনী বলার আগে আজকের শিরোনাম সম্পর্কে কিছু বলা আবশ্যক।

আজকের শিরোনাম প্রসঙ্গে লিখতে গিয়ে প্রথমে যার নাম মনে আসছে সে হলো পি কে হালদার। ভুয়া কোম্পানি বা কাগুজে কোম্পানি তৈরি করে ব্যাংক থেকে ছয় হাজার কোটি টাকা বের করে নেয়া এবং তিন হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করার যে অভিযোগ তার বিরুদ্ধে ছিল ওমনটি হাজার বছরের ইতিহাসে অন্য কারো বিরুদ্ধে ছিল না। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক, শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগসহ রাষ্ট্রের আরো সব গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ-অনুবিভাগ ও দফতরগুলো তদন্ত করছিল। তিনি সবাইকে টেক্কা দিয়ে তুড়ি বাজাতে বাজাতে ঢাকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বিদেশে চলে গেলেন এবং সেই দৃশ্য যারা দেখেন, তাদের সবারই বসে বসে আঙুল চোষা ছাড়া অন্য কোনো কিছু করার হুকুম যে ছিল না তা দিবালোকের মতো স্পষ্ট।

পি কে কানাডা গেল নাকি ভারত গেল তা আমরা আজো জানতে পারিনি বটে তবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গ্রেফতারের পর ভারতীয় মিডিয়ার কল্যাণে জানতে পারলামÑ ভারতে অগাধ সম্পত্তি রয়েছে এবং দেশ-বিদেশে ঘোরার জন্য তার তিনটি দেশের নাগরিকত্ব সংবলিত পাসপোর্ট রয়েছে। যারা এত দিন পি কের পশমে ফুঁ দেয়ার কথা স্মরণ করলে ভয়ে অজ্ঞান হয়ে যেত তারা হঠাৎ করে হুমকি-ধমকি শুরু করল এই বলে যে, পি কেকে ধরে আনা হবে। এ কথা পি কের কানে পৌঁছামাত্র সেও বীর বিক্রমে হুঙ্কার ছেড়ে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশকে বলল, আমাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিন। এ খবর বাংলাদেশে আসামাত্র দুর্নীতির সদর-অন্দরে কী রসায়ন ঘটল তা আমি বলতে পারব না। তবে তাকে নিয়ে যেসব ক্ষমতাধর লোকজন উচ্চবাচ্য করেছিল তারা একেবারে চুপসে গেল।

একবার শোনা গিয়েছিল যে, পি কে কানাডাতে রয়েছে। সেবারও তাকে নিয়ে বাহারি উচ্চবাচ্য শুরু হলে পি কে তার আইনজীবীর মাধ্যমে ঘোষণা দেয়, সে বাংলাদেশে ফিরতে চায়, প্রথমে মহামান্য উচ্চ আদালত রাজি হলো। কিন্তু তারপরে কী হলো তা আর জানতে পারলাম না। পি কেও এলো না এবং তাকে নিয়ে যারা হম্বিতম্বি করেছিল তারাও নাচন-কুদন বন্ধ করে দিলো। আপনি যদি পি কের উল্লেখিত নড়াচড়া-গতিবিধি এবং বক্তব্য মূল্যায়ন করেন তবে খুব সহজে বুঝতে পারবেন, পি কের কাছে অনেক তথ্য রয়েছে। সে যদি ভরা আদালতে অথবা জনসমক্ষে কিংবা মিডিয়ার কাছে তা না হলে পুলিশের কাছে মুখ খোলে এবং বলে দেয় কোন রাতে কার কাছে সে কোন বান্ধবীকে পাঠিয়েছিল এবং সেই বান্ধবীর সঙ্গে যা করা হয়েছে তার কিছু অডিও কিংবা ভিডিও ক্লিপ যদি সে সরবরাহ করতে চায় তবে ঢাকার আকাশে বাতাসে বিনামেঘে বজ্রপাত হতে থাকবে। সে যদি আরো বলে দেয় যে, লুটপাটের সাথে কারা কিভাবে জড়িত ছিল; তার গডমাদার, গডফাদার এবং পৃষ্ঠপোষক কারা ছিল এবং তারা লুটের টাকার কত অংশের ভাগ পেয়েছ! এসব কারণে মনে হচ্ছে, পি কের বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন প্রায় অসম্ভব। তা ছাড়া নানা ধরনের রোগবালাই যথা করোনা, হার্টঅ্যাটাক থেকে শুরু করে আরো কত কিছুর কথাই তো আমরা শুনতে পাই যখন কাউকে তাদের শক্তিশালী সহযোগীরা দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য চেষ্টা করতে থাকে।

পি কের আর্থিক কেলেঙ্কারিসহ দেশের ব্যাংক বীমা লিজিং কোম্পানি শেয়ার মার্কেট ইত্যাদি ক্ষেত্র থেকে যে লাখ লাখ কোটি টাকা প্রথমে লুটপাট করা হয়েছে এবং পরে যেভাবে পাচার করা হয়েছে তার সাথে দেশ বিদেশের অর্থদানবদের সিন্ডিকেট এবং সেই সিন্ডিকেটের একাধিক গডফাদার জড়িত। সেসব গডফাদারের টিকিটি স্পর্শ করার মুরোদ রয়েছে এমন কোনো কর্তাকর্ত্রীর নাম আমরা জানি না। বরং কর্তাকর্ত্রীরা যেভাবে তামিল ছবির দৃশ্যের মতো অন্ধকার জগতের গডফাদারদের নির্দেশে নৃত্য পরিবেশন করে তা দেখে অবোধ ঘোড়া-গর্দভরা পর্যন্ত হাসি নিবারণ করতে পারে না। পি কের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ রয়েছে সেসব অভিযোগের বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তার মদদদাতা হিসেবে যে লোকটির নাম এসেছে সে হলো এস কে সুর। দুর্নীতি দমন কমিশন যেভাবে বেসিক ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান শেখ বাচ্চুর বিষয়ে কঠোর ভ‚মিকা রেখেছে একইভাবে তারা সুরের বিরুদ্ধেও নিতান্ত গরম সুরে নানান লোক দেখানো আয়োজন অব্যাহত রেখেছে।

বাংলাদেশে যারা ব্যবসাবাণিজ্য এবং ব্যাংকিং কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত তারা খুব ভালো করে জানেন যে, সুরের কাজকর্মে কতটা সুর ধ্বনিত হয়েছে কিংবা কতটা অসুর বজ্র নিনাদে তাণ্ডব চালিয়েছে। অথচ তার কর্মকালীন সময়ে কেউ তার টিকিটি স্পর্শ করেনি বা করতে সাহস পায়নি। এটা কেন হয়েছে তা আমি বলতে পারব না। কারণ সরকারদলীয় একজন সংসদ সদস্য হিসেবে আমি খুব ভালো করে জানতাম যে, আওয়ামী লীগের উঁচু মহলের সাথে তার কোনো সংযোগ ছিল না। কেউ তাকে মদদ দিয়েছে এমন কথাও আমি শুনিনি। সরকারি মহলে তার যে খুব ক্ষমতা ছিল তা-ও আমি দেখিনি। অথচ অজানা কারণে মানুষ তাকে ভয় পেত এবং তার অন্যায় ও অন্যায্য আচরণে ক্ষতিগ্রস্ত হতো। অথচ আমার মতো কেউ যদি তাকে চ্যালেঞ্জ জানাত তবে হয়তো সুরের মতো লোকেরা কোনো দিন দেশ জাতির ক্ষতি করতে পারত না। আমার সঙ্গে এস কে সুরের কী বাৎচিত হয়েছিল এবং আমি তাকে কিভাবে শিক্ষা দিয়েছিলাম সেই কাহিনী বলেই আজকের নিবন্ধের ইতি টানব।

ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১২ সালের একেবারে মাঝামাঝি সময়ে। আমার একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য অগ্রণী ব্যাংক থেকে বেশ মোটা অঙ্কের ঋণ নিয়েছিলাম এবং নিয়মিতভাবে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করে যাচ্ছিলাম। আমি কৌশলগত কারণে শিল্পপ্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করতে চাইলাম। অগ্রণী ব্যাংকের কাছে আবেদন জানালাম যে, আমার ঋণ পরিশোধের সময়সীমা পাঁচ বছরের পরিবর্তে সাত বছর করে দেয়া হোক কারণ, মাসিক কিস্তির পরিমাণটা আমার জন্য সহনীয় নয়। ব্যাংকের বোর্ড আমার পক্ষে সিদ্ধান্ত দেয় এবং চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠায়; কিন্তু সুর বাবু আমার ফাইলটি অনুমোদন করেন বটে যা আমার জন্য বুমেরাং হয়। আমার ঋণ পরিশোধের সময়সীমা যেখানে পাঁচ বছরের জন্য ছিল তা সে কমিয়ে ২৪ মাস করে দেয়। তার এই সিদ্ধান্তে অগ্রণী ব্যাংক বোর্ড বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে।

অগ্রণী ব্যাংকের এমডি হামিদ আমাকে ফোন করে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং এস কে সুরের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। তিনি আমার কাছে বেক্সিমকো গ্রæপের একটি রিশিডিউল করা ঋণের মঞ্জুরিপত্র দেখান যেখানে প্রচলিত বিধি লঙ্ঘন করে বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদন দিয়েছে। অথচ আমার আবেদনে কেন উল্টো সিদ্ধান্ত দিলেন এমন প্রশ্ন করতেই সুর বেসুরো আচরণ শুরু করল। বেক্সিমকোরটি কেন করেছেন এমন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করল যে, আমি কিভাবে সেই তথ্য পেয়েছি। সুরের বেআইনি কর্ম এবং অসৌজন্যমূলক আচরণে আমি যারপরনাই বিব্রত হলাম এবং পরপর কয়েক রাত ঘুমাতে পারলাম না। পরে সিদ্ধান্ত নিলাম যে, সুরকে একটা উচিত শিক্ষা দেবো এবং সেই কাজ করতে গিয়ে যদি অগ্রণী ব্যাংকের ঋণ এক দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে হয় তা-ও করব।

পরিকল্পনা মতো আমি গভর্নর আতিউর ভাইকে ফোন দিলাম। তার সাথে আমার সম্পর্ক ছোট ভাই-বড় ভাইয়ের মতো। কারণ তার ছোট ভাই আমার ক্লাসমেট ছিলেন। কিন্তু তা সত্তে¡ও একটি টকশোতে আতিউর ভাইয়ের বিরুদ্ধে বলার কারণে তিনি কিছুটা মনক্ষুণœ ছিলেন। এ অবস্থায় আমার ফোন পেয়ে তিনি আমাকে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য বললেন, রনি আমার একটি গুরুত্বপূর্ণ মিটিং আছে। আমি কণ্ঠে কঠোরতা এনে বললামÑ আতিউর ভাই! আপনি কিন্তু একজন সংসদ সদস্যের সাথে কথা বলছেন। আপনার যদি অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক থাকে তবে সেই বৈঠক আমার কথা বলে বাতিল করুন। আর যদি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক থাকে তবে আমাকে বলুন আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। আতিউর ভাই কথা বাড়ালেন না। তিনি বললেন, ওকে তুমি আসো। আমি অপেক্ষা করব।

পরের দিন নির্ধারিত সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়ে দেখি নিচতলায় লিফটের সামনে গভর্নরের প্রতিনিধি দাঁড়িয়ে আছেন এবং গভর্নরের অফিসে গিয়ে দেখি তার ব্যক্তিগত সচিব অভ্যর্থনার জন্য রুমের বাইরে অপেক্ষা করছেন। আমি আতিয়ার ভাইকে পুরো ঘটনা বললাম এবং জানালাম যে বেক্সিমকোর সালমান এফ রহমান ও সোহেল রহমান সাবেক গভর্নর লুৎফর রহমান সরকারের সাথে যে আচরণ করেছিল আজ আমি সেই কাজ করার জন্য এখানে এসেছি। এখন আপনি বলুন, আমি কি সুরের রুমে গিয়ে কাজটি করব নাকি আপনি তাকে ডাকবেন এবং আপনার সামনে তা করব। আমার কথা শুনে আতিউর ভাই ভড়কে গেলেন। বললেন, রনি মাথা গরম করো না। এমন এমন কিছু করে দিচ্ছি যাতে তোমার আবেদনটি অনুমোদন হয় এবং সুরের একটা উচিত শিক্ষা হয়। তিনি অগ্রণী ব্যাংকের এমডিকে ফোন করে ফাইলটি তৎক্ষণাৎ তার টেবিলে পাঠাতে বললেন। অন্য দিকে সুরকে ডেকে আনলেন তার রুমে, এরপর যা ঘটল তা নাটক সিনেমার কাহিনীকেও হার মানাবে। আগামীতে সুযোগ পেলে এই বিষয়ে বিস্তারিত লিখব।
লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য