Naya Diganta

পূর্বাচলে ব্যবসায়ী খুনের রহস্য উদঘাটন

পূর্বাচলে ব্যবসায়ী খুনের রহস্য উদঘাটন।

গাজীপুরের পূর্বাচলের প্লট বিক্রির টাকা ভাগাভাগির জেরে নখ উঠিয়ে ও গলা টিপে ঢাকার ব্যবসায়ী মজিবর রহমানকে খুন করেছে তারই ব্যবসায়িক অংশীদারেরা। ক্লুলেস এ ঘটনার প্রায় দেড় বছর পর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ঘটনায় জড়িত অপর এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার গাজীপুর পিবিআই-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

গ্রেফতারকৃতের নাম মো: রাসেল (৩৫)। তিনি ঢাকার খিলক্ষেত থানার পাতিরা এলাকার মৃত রুহুল আমিনের ছেলে।

পিবিআই ওই কর্মকর্তা জানান, ঢাকার খিলক্ষেত থানার ডেলনা এলাকার আছিম উদ্দিনের ছেলে মজিবুর রহমান (৫০)। তিনি জমি ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা (মিডিয়া) করতেন। ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর বেলা ১১টার দিকে ব্যবসায়িক কাজের কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। স্বজনরা বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায়নি। পর দিন দুপুরে গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানাধীন পারাবর্থা এলাকার পূর্বাচলের ২৫ নম্বর সেক্টর ওয়েস্টার্ন চত্ত্বরের পাশে গজারী বনের ভিতর থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী রুমি বেগম কালিগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

তিনি জানান, কালীগঞ্জ থানা পুলিশ প্রায় তিন মাস মামলাটির তদন্ত করে। কিন্তু ক্লুলেস এ মামলাটির কোনো রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পিবিআই গাজীপুর জেলাকে দেয়া হয়। পিবিআই’র তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মোঃ হাফিজুর রহমান তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে খুনের এ ঘটনায় জড়িত অপর ব্যবসায়ী মোঃ রাসেলকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকৃত রাসেল এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বুধবার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।

পিবিআই-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, নিহত মজিবুর ও গ্রেফতারকৃত রাসেলসহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপর পাঁচ থেকে ছয়জন জমি ক্রয়-বিক্রয়ের মিডিয়া হিসেবে কাজ করতেন। খিলক্ষেতের পাতিরা এলাকার নছু মিয়া তার মালিকানাধীন পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প এলাকার একটি প্লট বিক্রির দায়িত্ব দেন প্রতিবেশী মজিবুরকে। ওই প্লট বিক্রির পর তার লভ্যাংশের ভাগ মজিবুরের কাছে দাবি করে রাসেল ও তার সহযোগীরা। কিন্তু লভ্যাংশের টাকার ভাগ দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন মজিবুর। এতে তার সাথে ঘটনায় জড়িতদের মনোমালিন্য হয়। এর জেরে মজিবুরকে হত্যার পরিকল্পনা করে রাসেল ও তার সহযোগিরা।

তিনি বলেন, ঘটনার দিন মাদক সেবনের কথা বলে মজিবুরকে মোবাইল ফোনে ডেকে পূর্বাচলের ওয়েস্টার্ন চত্ত্বরের পাশে গজারী বনের ভিতর নিয়ে যায় তারা। সেখানে মাদক সেবনের একপর্যায়ে মজিবুরকে ঘুষি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। পরে বুকের উপর বসে হাত-পা চেপে ধরে প্লাস দিয়ে পায়ের নখ উঠিয়ে ফেলা হয়। এ সময় চিৎকার দিলে গলা চেপে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করা হয় বলে গ্রেফতারকৃত রাসেল জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। ক্লুলেস ও চাঞ্চল্যকর এ হত্যার রহস্য ঘটনার প্রায় দেড় বছর পর উন্মোচন হয়েছে।