Naya Diganta

পাইকার সঙ্কটে মানিকছড়ির কাঁঠাল বাজার

মানিকছড়ির তিনটহরী বাজারে ওঠা কাঁঠাল : নয়া দিগন্ত

পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী তিনটহরী বাজারে এবার কাঁঠালের মৌসুমে পাইকারের দেখা নেই। ফলে কাঁঠালের মূল্য নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন প্রান্তিক কৃষকরা। এ জেলার সবচেয়ে বড় কাঁচাবাজারের মানিকছড়ি উপজেলার তিনটহরী বাজার। এ বাজারে উপজেলা ও এর পার্শ¦বর্তী রামগড়, গুইমারা উপজেলার একাংশের প্রান্তিক কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য বেচাকেনা হয়।
বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাস আম-কাঁঠালের মৌসুম হওয়ায় বাজারে এখন পরিপক্ব কাঁঠালে সয়লাব। কিন্তু বিগত মৌসুমগুলোতে এ সময়ে বাজারে পাইকারদের বেশ আনাগোনা থাকলেও এ বছর পরিবেশটা ভিন্ন। গত ১৫ দিন ধরে প্রতিদিন গড়ে ১৪-১৫ ট্রাক কাঁঠাল বাজারে আসছে। কিন্তু সমতলের পাইকাদের দেখা নেই। ফলে দামও কম। যে কাঁঠাল বিগত সময়ে ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হতো, এবার সেই মানের কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫০-৫৫ টাকায়। যার কারণে কৃষক কিংবা কাঁঠাল বাগান মালিকরা কিছুটা শঙ্কিত হয়ে পড়ছেন।
সম্প্রতি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শতাধিক কৃষক বাজারের জায়গায়, জায়গায় কাঁঠাল স্তূপ করে রেখেছেন। অথচ কেনার কেউ নেই। কথা হয় কৃষক আবদুল মালেক ও মংসানু মারমার সাথে। তারা জানালেন, পচনশীল ফল গাছে রাখারও সুযোগ নেই। এ পার্বত্য জেলায় হিমাগারও নেই। ফলে আম-কাঁঠাল ও আনারসের মতো রসাল ফল সংরক্ষণের উপায় নেই। পাইকার না থাকলে কম দামেই বিক্রি করতে হবে। লোকসানের ঘানি টানতে হবে কৃষকদের।
বাজার ব্যবসায়ী ও ইউপি সদস্য মো: শাহ আলম খাঁ বলেন, এখনো সমতলের পাইকারদের ঘুম ভাঙেনি। গ্রামের গাছে গাছে প্রচুর কাঁঠাল। বাজারে দাম না থাকায় বাগান মালিকরা কাঁঠাল কাটছে না।
এ সময় স্থানীয় পাইকার মো: জাকির হোসেন বলেন, সমতলের পাইকার এলে বাজারে কাঁঠালের স্তূপ পড়ে যাবে। আমরা গড়ে ১৪-১৫ ট্রাক কাঁঠাল কিনে সমতলে নিচ্ছি। কিন্তু ক্রেতা নেই। ফলে যাতায়াত খরচ, বাজার টোল ও গাড়ি ভাড়া পরিশোধ করার পর তেমন লাভ থাকে না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: হাসিনুর রহমান জানান, আম-কাঁঠাল, আনারস পচনশীল ফল। ন্যায্যমূল্য পাওয়া না গেলে রসাল ফল উৎপাদনে আন্তরিকতা হারাবে প্রান্তিক কৃষকরা। এতে উৎপাদন কমবে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে কাঁচা কাঁঠাল থেকে আচার তৈরি, সংরক্ষণ ও এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে কৃষকদের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।