Naya Diganta

জীবননগরে আমন মৌসুমে গুদামে একমুঠো ধানও সংগ্রহ হয়নি

অভ্যন্তরীণ ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় আমন মৌসুমে দুই হাজার ২০০ মেট্রিক টনের কিছু বেশি চাল সংগ্রহ হলেও ধান সংগ্রহ হয়নি এক মুঠোও। গত তিন মাসের ব্যবধানে ধান সংগ্রহ না হওয়ায় সংগ্রহ অভিযান মুখথুবড়ে পড়ে। নির্ধারিত সময়ে চাল সংগ্রহের সম্ভাবনা থাকলেও সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে স্থানীয় বাজারে ধানের দাম অনেক বেশি হওয়ায় খাদ্য গুদামে ধান দেননি কৃষকরা। ফলে সরকারিভাবে আমন মৌসুমে ধান সংগ্রহ অভিযান আশার আলো দেখেনি। এদিকে বোরো মৌসুমে একই অবস্থা সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জীবননগর উপজেলা খাদ্য গুদাম সূত্রে জানা গেছে, আমন মৌসুমে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ২৭ টাকা কেজি দরে ২৮২ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। গত বছরের ১১ ডিসেম্বর থেকে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়। ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান গত তিন মাস অতিবাহিত হলেও এ পর্যন্ত একমুঠো ধানও সংগ্রহ করা যায়নি। এমনকি উদ্বোধনী দিনেও কোনো কৃষক খাদ্য গুদামে ধান নিয়ে যাননি।
উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা কাওসার আলী বলেন, সরকারিভাবে প্রতি কেজি ধান ২৭ টাকা দরে ক্রয় মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে সরকারি মূল্যের বিপরীতে স্থানীয় বাজারে ধানের দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকরা খাদ্য গুদামে ধান দেননি।
সরকারিভাবে প্রতি কেজি চালের মূল্য ৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং চলতি মৌসুমে দুই হাজার ৩০০ মেট্রিক টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এ পর্যন্ত দুই হাজার ২০০ মেট্রিক টনের কিছু বেশি চাল চুক্তিবদ্ধ মিলারদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা গেছে। চলতি বছরের আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান অব্যাহত ছিল। ধান সংগ্রহ অভিযানে সফল না হলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চালের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় অর্জিত হয়েছে। বোরো সংগ্রহের সময়ও একই অবস্থা হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উপজেলার গোপালনগর গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ, রাজন নগর গ্রামের আলম হোসেন, কালা গ্রামের খাজা আহমেদসহ একাধিক কৃষকের দাবি, সরকার প্রতি মণ ধান এক হাজার ৮০ টাকা দরে কিনেছে। কিন্তু স্থানীয় বাজারে সেই একই ধান এক হাজার ১৫০ টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। ভালো মানের ধান আরো একটু বেশি দামে স্থানীয় বাজারে বিক্রি হয়েছে। সেখানে আমরা তো আর লোকসান দিয়ে সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে পারি না। তা ছাড়া সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে গিয়ে ধানের মান নিয়ে নানা অজুহাতে কৃষকদের হয়রানি করায় কৃষকরা সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে চান না। তবে আমন মৌসুমে ধানের ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা খুশি ছিলেন। তারা একইভাবে বোরো মৌসুমেও ধানের ভালো দাম আশা করছেন।
জীবননগর উপজেলা অভ্যন্তরীণ ধান-চাল ক্রয় কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চাল সংগ্রহ হয়েছে। তবে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও আমরা সার্বিকভাবে চেষ্টা করেছিলাম।