Naya Diganta

বিয়ে না করায় কিশোরীকে হত্যা, ৪ জনের যাবজ্জীবন

বিয়ে না করায় কিশোরীকে হত্যা, ৪ জনের যাবজ্জীবন

লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুরে বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় রোজিনা আক্তার (১৫) নামে এক কিশোরীকে হত্যার দায়ে চার জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসাথে প্রত্যেকের ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।

বুধবার বেলা ১১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো: রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন রায়পুর পৌরসভার দেনায়েতপুর এলাকার মৃত হানিফ মিয়ার ছেলে কইলা, একই এলাকার আবদুল মতিনের মেয়ে আখি, দেনায়েতপুর এলাকার মৃত আবুল কালামের ছেলে হুমায়ুন কবির ও উপজেলার বামমী ইউনিয়নের বামনী গ্রামের মৃত মোস্তফা মিয়ার ছেলে মো: বাহার। এর মধ্যে হুমায়ুন ও বাহার পলাতক রয়েছেন।

আদালত সূত্র জানায়, নিহত রোজিনা রায়পুর পৌরসভার দেনায়েতপুর এলাকার বয়াতি বাড়ির মৃত সফিক মিয়ার মেয়ে ও হযরত খাদিজাতুল কোবরা নুরানী মহিলা মাদরাসার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। পরীক্ষা শেষে ২০১৬ সালের ১১ ডিসেম্বর বিকেলে সে বাসায় ফিরছিল। এ সময় সাবেক পৌরসভা কার্যালয় ভবনের সামনের সড়কে কথিত প্রেমিক আনোয়ার হোসেন কইলার সোর্স আখি অপেক্ষা করছিলেন।

এক পর্যায়ে ফুসলিয়ে আখি তাকে বাগানের দিকে নিয়ে যান। কইলার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়ে আখি এ সহযোগিতা করেন। সেখানে কইলাসহ আরো তিন সহযোগী ছিলেন। এক পর্যায়ে কইলা ওই ছাত্রীকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন। সে প্রত্যাখ্যান করলে তাকে বাগানে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। পরে অন্যদের সহযোগিতায় গাছের সাথে গলার ওড়না পেছিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে বাগানে লাশ ফেলে রাখে অভিযুক্তরা।

পরদিন দুপুরে স্থানীয় লোকজন লাশটি দেখে পুলিশকে খবর দেয়। নিহতের পরিবারের লোকজন এসে লাশটি শনাক্ত করে। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা মনোয়ারা বেগম অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে রায়পুর থানায় হত্যা মামলা করেন।

হত্যার ঘটনায় অভিযান চালিয়ে ১৭ ডিসেম্বর পশ্চিম কেরোয়া এলাকা থেকে আখি ও হুমায়ুন নামে দুইজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ১৮ ডিসেম্বর ঘটনা স্বীকার করে তারা লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট মো: দাঊদ হাসানের আদালতে জবানবন্দি দেয়।

২০১৬ সালের ১৮ জুন পুলিশ আদালতে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত এ রায় দেন।