সিআরপিএফের দখলে বারানসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বর
প্রাচীন মন্দিরের স্থান দাবি- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ১৭ মে ২০২২, ০০:০৫
আদালতের নির্দেশের পর বারানসীর প্রাচীন জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরে মোতায়েন করা হয়েছে সিআরপিএফ। মসজিদের ভূগর্ভস্থ ঘর (তহখানা), ওজুখানা এবং আশপাশের এলাকাও সিল করে দেয় উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। গত শনিবার থেকে মসজিদের অন্দরের দু’টি গম্বুজ, ভূগর্ভস্থ অংশ, পুকুরসহ সব জায়গার পুঙ্খানুপুঙ্খ সমীক্ষা এবং ভিডিওগ্রাফি করে গতকাল সোমবার বারানসীর আদালতে রিপোর্ট দেয়া হয় সমীক্ষক দলের তরফে। তার পরেই কয়েকটি এলাকা সিল করে সিআরপিএফ মোতায়েনের নির্দেশ দেন আদালত। বারানসীর জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনারের পাশাপাশি সিআরপিএফের একজন কমান্ডান্ট (সুপার) স্তরের কর্মকর্তাকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন নগর-দায়রা আদালতের বিচারক রবিকুমার দিবাকর। এর আগে এই মসজিদটির লাগোয়া কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে বছরভর পূজার অনুমতি ও এটি হিন্দু মন্দির দখল করে তৈরির অভিযোগ নিয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয় হিন্দুত্ববাদীরা। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
আবেদনকারী হিন্দুত্ববাদী পক্ষের আইনজীবী হরিশঙ্কর জৈন গতকাল বলেন, ওজুখানার পুকুরে শিবলিঙ্গের অস্তিত্ব পাওয়ার কারণেই আদালত এই পদক্ষেপ নিয়েছে। আবেদনকারী পক্ষের আরেক আইনজীবী মদনমোহন যাদবের দাবি, মসজিদের পশ্চিমের দেয়ালের অদূরে অবস্থিত নন্দীমূর্তির মুখ রয়েছে শিবলিঙ্গের দিকে। এর মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট গতকাল জানিয়েছেন, জ্ঞানবাপী মসজিদে সমীক্ষা ও ভিডিওগ্রাফি বন্ধের দাবিতে দায়ের করা আবেদনের শুনানি হবে মঙ্গলবার।
প্রসঙ্গত, ভারতের হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, জ্ঞানবাপী মসজিদ যে জমিতে গড়ে উঠেছে, তা আদতে হিন্দুদের। তাই সেই জমি হিন্দুদের ফিরিয়ে দেয়া হোক। তাদের দাবি, মুঘল সম্রাট অওরঙ্গজেব দু’হাজার বছরের পুরনো কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের একাংশ ধ্বংস করে সেখানে মসজিদ গড়ে তোলেন। সেখানে ‘হিন্দুত্বের ছাপ’ খুঁজতে প্রত্নতাত্ত্বিক সমীক্ষার দাবি জানানো হয় আদালতে।
অন্য দিকে জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরে ‘দেবদেবীর মূর্তি’ আছে দাবি করে সেগুলো পুজো করার অনুমতি চেয়ে ২০২১ সালে আদালতে একটি পৃথক আবেদন করেন পাঁচ মহিলা। তারই জেরে গত সপ্তাহে বারানসীর জেলা আদালত জ্ঞানবাপী মসজিদের প্রত্নতাত্ত্বিক সমীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিল ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া)-কে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু তা খারিজ হয়ে যায়। এরপর গত শনিবার থেকে আদালত নিযুক্ত সমীক্ষকরা তাদের কাজ শুরু করেন।