Naya Diganta

আ’লীগের লোকেরা হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে : ফখরুল

গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরল ইসলাম আলমগীর : নয়া দিগন্ত

বিদেশে অর্থ পাচারকারীসহ তাদের মদদদাতাদের তালিকা জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গতকাল রোববার বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এই দাবি জানান।
তিনি বলেন, আমাদের প্রশ্নÑ কতজন পি কে হালদার আছে? আমরা কিছুদিন আগে দেখেছি, হাজার হাজার কোটি টাকা তারা দেশ থেকে লুট করে বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, আমরা জানতে চাই যে, এই ধরনের (পি কে হালদারের মতো) কত হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে? কিভাবে, কোন পদ্ধতিতে পাচার হলো, কারা এর সাথে জড়িত ছিল, কারা মদদ দিয়েছেÑ সেই বিষয়গুলো পরিষ্কার করে জাতির সামনে তুলে ধরার জন্য আমরা সরকারের প্রতি দাবি জানাচ্ছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে এই যে দুর্নীতি হচ্ছে, চুরি হচ্ছে, ডাকাতি করে অর্থ পাচার করা হচ্ছে তা তদন্ত করে প্রকাশ করা।
তিনি বলেন, সুযোগ পেলেই বিএনপির লোকদের হয়রানি করা হয় আর কিছু চুনোপুঁটি লোককে ধরা হয়। সুষ্ঠু তদন্ত করে যারা বড় বড় আছেন বর্তমান সরকারের সাথে সম্পৃক্ত তাদের সামনে আনতে হবে, আইনের আওতায় আনতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদপুরের একটা সম্মেলনে নিজেই বলেছেন, হাজার হাজার কোটি টাকা যারা পাচার করেছে তাদের আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেয়া হবে না। তার মানে তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন আওয়ামী লীগের লোকেরা হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে।
এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার তাগিদ দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই দুঃসহ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে হলে আমাদের সব ধর্মের, মতের, রাজনৈতিক দলের লোকদের সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারকে পরাজিত করতে হবে। আসুন আমরা সবাই মিলে একসাথে এক জোটে আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ সরকারকে পরাজিত করি। একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক একটা সংসদ এবং সরকার গঠন করি। এটাই হচ্ছে আমাদের এখন সবচেয়ে বড় কাজ।
বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সদস্যদের সম্মানে বিএনপি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে বিএনপি ও দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানান দলটির মহাসচিব।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এবং তাদের বৌদ্ধ পূর্ণিমার শুভেচ্ছা জানান। অনুষ্ঠানের শুরুতে ত্রিপিটক পাঠ করা হয়।
বিএনপির সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক দীপেন দেওয়ানের সভাপতিত্বে ও জিয়া পরিষদের নেতা সুভাষ চন্দ্র চাকমার সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় নেতা শামা ওবায়েদ, গৌতম চক্রবর্তী, জন গোমেজ, অমলেন্দু দাস অপু, আবদুল বারী ড্যানী এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের তরফ থেকে মনীষ দেওয়ান, সুশীল বড়ুয়া, উদয় কুসুম বড়ুয়া, প্রবীণ চন্দ্র চাকমা, চন্দ্র গুপ্ত বড়ুয়া, সনত তালুকদার, রনজিত বড়ুয়া, অনিমেষ চাকমা রিংকু, জয়ন্ত বড়ুয়া, রুবেল বড়ুয়া, পারদর্শী বড়ুয়া বক্তব্য রাখেন।
এই অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নেতা জয়ন্ত কুমার কুণ্ডসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পরে মিষ্টি দিয়ে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সদস্যদের আপ্যায়ন করা হয়।
বরিশালের সমাবেশে মেজর (অব:) হাফিজ
বরিশাল ব্যুরো জানায়, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব:) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম বলেছেন, আওয়ামী লীগ দেশের গণতন্ত্র বিদায় করে দিয়েছে। এখন যদি নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে চান তাহলে অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
দেশব্যাপী কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার বরিশাল নগরের সদর রোডের দলীয় কার্যালয় চত্বরে মহানগর এবং উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুকের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নু ও বরিশাল জেলা (উত্তর) বিএনপির আহ্বায়ক দেওয়ান মো: শহীদুল্লাহ। প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা (দক্ষিণ) বিএনপির আহ্বায়ক মজিবর রহমান নান্টু।
মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মীর জাহিদুল কবির, দক্ষিণ জেলার সদস্যসচিব আক্তার হোসেন মেবুল ও উত্তর জেলার সদস্যসচিব মিসজানুর রহমান মুকুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো: রহমতউল্লাহ, এবায়েদুল হক চাঁন, মেজবাউদ্দিন ফরহাদ ও মহানগর বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন সিকদার জিয়া প্রমুখ।