Naya Diganta

‘পুতিন আমাদের দেশে রেল ভ্রমণ করে গেলেন, আমরা কেউ জানলাম না’

‘পুতিন আমাদের দেশে রেল ভ্রমণ করে গেলেন, আমরা কেউ জানলাম না’।

ভাইরাল হওয়া রেলের টিকিট নিয়ে রসিকতা হলেও বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে দেখছেন নিরাপদ খাদ্য থেকে রেলওয়ের অতিরিক্ত সচিব হওয়া আলোচিত ব্যক্তিত্ব মাহবুব কবীর মিলন। তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে লিখেছেন ’ভ্লাদিমির পুতিন সাহেব কবে আমাদের দেশে এসে রেল ভ্রমণ করে গেলেন তা আমরা কেউ জানলাম না, এটা খুবই দুঃখজনক বিষয়।’

বাংলাদেশ রেলের টিকিটে দেখা যাচ্ছে ৭ মে রেল ভ্রমণের টিকিট করেছেন ’ভ্লাদিমির পুতিন’। যেখানে দেখা যাচ্ছে ১০ মে ভ্লদিমির রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন। এমনই একটি টিকিটের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

সম্প্রতি ছবিটি উঠেছে সমালোচনার ঝড়। বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে দেখছেন রেলের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন।

বিষয়টি নিয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে রোববার স্ট্যাটাস দিয়েছেন রেলের এ সাবেক কর্মকর্তা। তার স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো...

এভাবে চলতে থাকলে বাইডেন সাহেব এসে রেলে উঠলে সেটাও হয়ত আমরা কেউ জানতে পারব না। প্রয়াত জর্জ ওয়াশিংটন বা উইন্সটন চার্চিল টিকিট কাটলেও অবাক হবার কিছু নেই। ফান করলাম।

কিন্তু সরকারি সিস্টেমে ফান করার কোনো অবকাশ নেই। জগতের কোথাও পাসপোর্ট কিংবা অথোরিটি কর্তৃক ভেরিফাইড নাম ছাড়া অন্য নামে রেল টিকিট করতে পারবে না। কারণ টিকিট করার সময় সিস্টেম তা যথাযথভাবে যাচাই করেই তবে টিকিট ইস্যু করবে।

ভারতে রেল টিকিট করার আগে বিশাল এক ফর্ম পূরণ করতে হয় বলে জানি। জগৎজুড়ে কেন এত কঠিন সিস্টেম?

কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে যাতে যাত্রীর পরিচয় বের করা যায়। কোনো ধরনের নাশকতায় জড়িত যাত্রীকে যেন শনাক্ত করা যায়। এছাড়াও আরো অনেক কারণ আছে।

আমাদের রেল অনলাইন ডাটা বেজ করছে কোনো রকম ভেরিফিকেশন ছাড়াই। যাত্রীকে তার নাম ও এনআইডি নাম্বার দিয়ে রেল সার্ভারে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। কিন্তু তা এনআইডি সার্ভার ভেরিফিকেশন ছাড়াই।

এনআইডি সার্ভারের সাথে রেল হুক-আপ করেনি। ফলে যাত্রী রেলে রেজিস্ট্রেশন করার সময় যে কোনো নাম এবং ১৩ বা ১৭ ডিজিটের যে কোনো সংখ্যা বসিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে টিকিট কিনতে পারে। যেমন ’১১১১১১....’ বা ’২২২৩৩৩৩৩.....।’ জর্জ বাইডেন বা ভ্লাদিমির, চার্চিল, যে নামই দিন, রেজিস্ট্রেশন করে রেল টিকিট কাটতে পারবেন।

এতে ভয়াবহ ব্যাপার দুটি। এক, যে কোনো নাম ও এনআইডি সংখ্যা বসিয়ে বিপদ ঘটানো। দুই, আপনার অরিজিনাল নাম ও এনআইডি নাম্বার যদি কেউ জানে, সে সেটা ব্যবহার করে টিকিট কেটে আপনাকে বিপদে ফেলতে পারে।

এনআইডি সার্ভার হুক-আপ না করে আন্দাজে এনআইডি নাম্বার ও নাম দিয়ে কোনো ডাটাবেজ তৈরি করে সেটা ব্যবহার করার সুযোগ তৈরি করে দেয়ার সিস্টেম চালু করার কোনো অবকাশ কোনো সরকারি দফতরের হতেই পারে না।

রেলে সাড়ে তিন মাস থাকাকালীন প্রাণান্তকর চেষ্টা করেছিলাম নির্বাচন কমিশন সার্ভারের সাথে রেলের হুক-আপ করানোর জন্য। সিএনএসবিডি আমার অনুরোধে সফটওয়্যারসহ সবকিছু রেডি করে ফেলেছিল। আফসোস! রেলের কোনো সাড়া পাইনি।

-ফেসবুক থেকে নেয়া