Naya Diganta

অভিজ্ঞান

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির ১৯৬৭ ব্যাচের মাস্টার্স পরীক্ষার ফলাফল ২৫ মার্চ ১৯৬৮ সালে বেরোনোর সাথে সাথেই ১ এপ্রিল ১৯৬৮ করাচির পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপম্যান্ট ইকোনমিক্সে (পিআইডিই) স্টাফ ইকোনমিস্ট হিসেবে নিয়োগ পেয়ে ১৫ এপ্রিল ১৯৬৮ সালে যোগদান করি। সে চাকরিতে ১৯৭০ সালের ৭ অক্টোবরে ইস্তফা দিয়ে ঢাকায় চলে আসি। ১৯৭১-এর আগস্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইএসআরটির একটি প্রজেক্টে যোগদান করি। এ প্রজেক্ট একাত্তরের ৩১ ডিসেম্বর বন্ধ হয়ে যায়। এর আগেই পিআইডিই থেকে স্টাফ ইকোনমিস্ট হিসেবে রিপেট্রিয়েট হয়ে ঢাকা আসিনি বলে আমার বেশ কিছু দিন কর্মহীন জীবনের অভিজ্ঞতা হলো। কোনো চাকরিই জোগাড় করতে পারছিলাম না। সময় কাটাতাম আমাদের পরিবাগের বাসার সন্নিকটে, ঢাকা সেন্ট্রাল পাবলিক লাইব্রেরিতে নিয়মিত পড়াশোনা করে। অবজারভার পত্রিকা অফিসে গিয়ে একদিন সম্পাদকের সাথে দেখা করলাম যদি এখানে কিছু একটা করার সুযোগ হয়। হলো না। বিটিভির সংবাদ পাঠক আবদুস সাত্তারের সাথে এ সময়ে পরিচয় হয়েছিল। তিনি মর্নিং নিউজের সাব-এডিটর। তিনি এখন কোলনে। সম্ভবত তার সাথে পরিচয়ের সুবাদেই মর্নিং নিউজে এপ্রিল ১৯৭৩ সালে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করার সুযোগ হয়। মর্নিং নিউজের স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেলাম; কিন্তু নিয়োগপত্র পেলাম না। কর্তৃপক্ষ বলল কাজ করতে, পরে নিয়োগপত্র দেয়া হবে। তাদের কথামতো কাজ শুরু করে দিলাম।

মর্নিং নিউজের সিটি এডিটর আমানুল্লাহ সাহেব জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনি মর্নিং নিউজ রাখেন’? বললাম, ‘না’। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘এখন তো এখানে কাজ করছেন, এখন রাখবেন’? বললাম, ‘অবশ্যই’। তিনি বললেন, ‘এখন আপনি এমনিতেই রোজ একটা করে মর্নিং নিউজের কপি পাবেন। কোন ঠিকানায় কাগজ দিতে হবে বলুন’। আমি নিকটস্থ র‌্যাংকিন স্ট্রিটে শ্বশুরবাড়ির ঠিকানাই দিলাম। করাচি পিআইডিইতে কাজ করেছি শুনে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ড. এস আর বোসকে চেনেন’? বললাম, ‘চিনি। আপনি তাকে চেনেন কী করে’? তিনি বললেন, ‘আমরা একসাথে জেল খেটেছি। এক সেলে ছিলাম’। ড. বোস জেল খেটেছেন, এটা এই প্রথম শুনলাম। আমানুল্লাহ সাহেব একদিন বললেন, তিনি শেরেবাংলার ঘনিষ্ঠ সহযোগী বরিশালের বি ডি হাবিবুল্লাহর ছেলে। এর আগে বাংলা একাডেমিতে একবার বি ডি হাবিবুল্লাহর বক্তৃতা শুনেছিÑ শেরেবাংলার ওপর বক্তব্য রাখছিলেন। ‘শেরেবাংলা’ শিরোনামে তিনি একটি বইও লিখেছেন। সকালে বাসা থেকে বেরিয়ে মর্নিং নিউজ অফিসে যাই। সেখান থেকে কী কাজে কোথায় যেতে হবে জেনে সেখানে যাই। দুপুরে বাসায় এসে খাওয়ার পর খানিক রেস্ট নিই। ৪টার দিকে আবার পত্রিকার অফিসে গিয়ে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে টাইপ রাইটারের বাটনের উপরে ডান হাতের তর্জনী চালিয়ে স্টোরি লিখি। বাসায় ফিরতে কোনোদিন রাত ১০টা পার হয়ে যায়। পত্রিকার রিপোর্টিং কঠিন কাজ। সারা দিন ব্রেইন এনগেইজড রাখতে হয়।
মর্নিং নিউজের হয়ে রিপোর্টিংয়ে অসুবিধা হচ্ছিল না। তবে একবার সামান্য বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছিল। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ইউরোপের কনফারেন্স শিপিং লাইনের প্রেসিডেন্টের ইন্টারভিউ নিতে এলাম। তিনি আমার আইডেন্টিটি কার্ড চেয়ে বসলেন। আমি যেহেতু নিয়োগ পাইনি, তাই আমাকে মর্নিং নিউজের পক্ষ থেকে কোনো আইডেন্টিটি কার্ড দেয়া হয়নি। আর এটা লাগে বলেও জানতাম না।

তাদের বললাম, ‘ও ফড়হ’ঃ যধাব ধহু ওফবহঃরঃু ঈধৎফ রিঃয সব. ওভ ুড়ঁ ধিহঃ ুড়ঁ পধহ ঃধষশ ঃড় সু ঊফরঃড়ৎ’. এই বলে তাদের রুমের টেলিফোন সেটের দিকে ধাবিত হলাম। আমার ব্যস্ততা দেখে প্রেসিডেন্ট বললেন, ‘ঙ.ক. ঞযধঃ’ং হড়ঃ হবপবংংধৎু. ণড়ঁ নবঃঃবৎ ঃবষষ ঁং যিধঃ ুড়ঁ ধিহঃ ঃড় শহড়ি ভৎড়স ঁং’. টেলিফোনের রিসিভার না তুলে তাদের সামনে এসে বসলাম। তাদের বাংলাদেশ ভ্রমণের উদ্দেশ্য ও তাদের শিপিং লাইন সম্পর্কে স্টোরি করার মতো প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহের জন্য ৩০ মিনিট তাদের সাথে আলাপ হলো। আলাপ শেষে তারা আমাকে লিফটের দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে গেলেন।

আমি দুপুরে র‌্যাংকিন স্ট্রিটের বাসায় এলে শ্বশুর প্রতিদিনের মতো আজো জানতে চান, ‘আইজ কই গেছিলা’? আমি বলি, ‘হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ইউরোপের কনফারেন্স শিপিং লাইনের প্রেসিডেন্ট এসেছে, সেখানে খবর সংগ্রহ করতে গিয়েছিলাম।’ তিনি শোনে মুখে ‘ওস্স্’ করে এমন একটা পিকিউলিয়ার শব্দ করলেন যেন আঘাত পেয়েছেন বা আমি অসম্ভব একটা কিছু করে ফেলেছি। অফিসে ফিরে আমানুল্লাহ সাহেবকে বললাম, ‘আমার সাথে একটি আইডেন্টিটি কার্ড থাকা দরকার। যেকোনো সময় দরকার হতে পারে।’ তিনি আমাকে ম্যানেজারের সাথে দেখা করতে বললেন। ম্যানেজার বললেন, ‘শিগগিরই আপনাকে নিয়োগপত্র দেয়া হবে। তখন আইডেন্টিটি কার্ড পাবেন।’ অপেক্ষায় রইলাম।

এক রাতে অফিস থেকে বেরোলাম ১১টার পর। আমানুল্লøাহ সাহেব বললেন, ‘চলুন অফিসের গাড়িতে আপনাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে আমরা বাসায় যাবো।’ ভাবলাম, সেটিই ভালো। গাড়িটি র‌্যাংকিন স্ট্রিটের বাসার সামনে আসতেই বিকল হয়ে গেল। আমার শ্বশুরের বাসার পশ্চিমের বাড়িটিতেই গণকণ্ঠ অফিস। ড্রাইভার বললেন, ‘গাড়িটি গণকণ্ঠ অফিসে রেখে যাই কাল মিস্ত্রি নিয়ে এসে ঠিক করে নিয়ে যাবো।’ গাড়িটি গণকণ্ঠ অফিসে রেখে তারা যে যার মতো রিকশা নিয়ে বাসায় চলে গেলেন। এত রাতে অবশ্য রিকশা পেতে তাদের বেগ পেতে হয়েছিল।

যে ক’দিন মর্নিং নিউজে কাজ করেছি প্রতিদিনই স্টোরি করেছি। প্রতিটি ছোট-বড় স্টোরিই প্রতিদিন প্রথম পৃষ্ঠায় গুরুত্বের সাথে ছাপা হয়েছে। কেবল একটি স্টোরি দ্বিতীয় পাতায় ছাপা হয়েছিল। সেটি জাতীয় ফুল শাপলার ওপর। এর আগে ছোট্ট একটি শাপলার ফটো প্রথম পৃষ্ঠায় ছাপা হওয়ায় স্টোরিটি ভেতরের পৃষ্ঠায় চলে গেল। বিভিন্ন দেশের লোক বেড়াতে আসে। এক বিকেলে মনোযোগের সাথে স্টোরি লিখছি। রিপোর্টার্স রুমে আর কেউ নেই। আমার টাইপরাইটারের শব্দই কেবল শোনা যাচ্ছে। পশ্চিমা দুই ভদ্রলোক এসে আমার কাছাকাছি বসলেন। আমি স্টোরি নিয়ে ব্যস্ত। এটা তৈরি করে সময়মতো সাব-এডিটরদের টেবিলে না দিতে পারলে কাল ছাপা হবে না। আমার কোনো দিকে তাকানোর জো নেই। এরা দু’জনে কিছুক্ষণ নিজেদের মধ্যেই আলাপ করলেন। আমি নিবিষ্ট মনে আমার কাজ করে যাচ্ছি। কোনো দিকে তাকাই না। একসময় একটি কথা কানে এলোÑ‘ঢ়বৎযধঢ়ং পষবৎশ’. আমি তাদের সাথে আলাপ করতে এগিয়ে না আসায় সম্ভবত আমার সম্বন্ধেই এ ধারণা করেছেন। আমি সে দিকে তাকালামই না। তারা উঠে চলে গেলেন।

আরেক সকালে মধ্যবয়সী এক প্রাণবন্ত ভারতীয় মহিলা এলেন। সাদা প্রিন্টের সুতির শাড়ি পরা বাঙালি মহিলা। তিনি এসে আমাদের সাথে আলাপ জুড়ে দিলেন। বাংলাদেশ দেখতে এসেছেন। আমাদের পক্ষে কে একজন জিজ্ঞেস করলেন, ‘কেমন লাগছে বাংলাদেশ’। তিনি বললেন, ‘খুব ভালো। ইলিশ মাছ খুব খেতে পাচ্ছি, খুব খাচ্ছি।’ আরেক সন্ধ্যার দিকে কলকাতার যুগান্তর পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক সস্ত্রীক এসেছেন। নাম মনে পড়ছে না। সে দিন সন্ধ্যায় পল্টন ময়দানে ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পীদের একটি গানের অনুষ্ঠান ছিল। আমানুল্লাহ সাহেব আমাকে সাথে করে তাদের নিয়ে পল্টনে রওনা দিলেন। স্টেডিয়ামের পশ্চিম পাশ দিয়ে একটু দক্ষিণে এগোতেই জনতার ভিড় নজরে এলো। যুগান্তরের যুগ্ম সম্পাদক অবাক হয়ে বললেন, ‘এত লোক’! তার স্ত্রী বললেন, ‘মূর্খ তো’।

আমি ভারত বা কলকাতা কোনোদিন যাইনি। জানি না, সেখানে সঙ্গীত সন্ধ্যা হয় কি না। হলেও তাতে কত লোক হয়। বাংলাদেশের জনতার প্রতি ছুড়ে দেয়া তার এ মন্তব্য আমাকে সে দিন ব্যথিত করেছিল। সে অনুষ্ঠানে গাওয়া শ্যামল মিত্রের একটি গানের কলি মনে আছেÑ ‘তোমাদের ভালোবাসা মরণের পাড় থেকে ফিরিয়ে এনেছে মোরে’। গানের আগে ভূমিকায় বললেন, তিনি একবার বেবিট্যাক্সি দুর্ঘটনায় পড়েছিলেন। সে দুর্ঘটনা থেকে প্রাণে বেঁচে এসে এ গানটি তিনি প্রথম গেয়েছেন। আর আজ গাইছেন। গানটি আমার ভালো লাগল। আমরা পৃথিবীতে কারো না কারো ভালোবাসা পেয়েই বেঁচে থাকি। এ ভালোবাসার সমাপ্তিতেই আমাদের জন্য মৃত্যুর দুয়ার খুলে যায়। এর মধ্যে একদিন একটি কবিতা লিখি। সেটি নিয়ে পাশে দৈনিক বাংলা অফিসে কবি আহসান হাবিবের কাছে যাই। কবিতাটি তার হাতে দিলে তিনি তখনই দু’হাতে কাগজটি টান টান করে ধরে গভীর মনোযোগের সাথে পড়তে লেগে যান। মিনিট পাঁচেক কবিতাটির দিকে তাকিয়ে থেকে হঠাৎ করেই বললেন, ‘এটি হবে না’। এই বলে তিনি আমাকে কাগজটি ফেরত দিলেন। আমি বিনা বাক্যব্যয়ে কাগজটি নিয়ে চলে এলাম। মর্নিং নিউজের স্টাফ ফটোগ্রাফার লাল ভাই বেশ স্নেহ করতেন। কতদিন বলেছেন, ‘বাসায় এসো, তোমার ভাবীর সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো। তোমার কথা তাকে বলেছি।’ যাওয়া হয়ে উঠেনি।

এক দিন এম্প­য়মেন্ট এক্সেঞ্জ পরিদর্শন করে এর কর্মকর্তাদের বরাত ও এক্সচেঞ্জের সামনে জড়ো হওয়া নারী-পুরুষ চাকরিপ্রার্থীদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে বাংলাদেশের কর্মসংস্থান পরিস্থিতির ওপর একটি স্টোরি করলাম। স্টোরিটি লেখা শেষ হলে আমার পাশে দাঁড়ানো আমানুল্লøাহ সাহেবের হাতে দিই। স্টোরিটি পড়ে তিনি বললেন, ‘এটি এডিটর সাহেবকে দেখাই’। খানিক বাদে ফিরে এসে বললেন, ‘তিনি খুব খুশি হয়েছেন’। সম্পাদক আবদুল ওয়াহাব সাহেব স্টোরিটির খুব প্রশংসা করে কয়েকটি প্যারা ডোরিক করে ছাপতে নির্দেশ দিলেন। এক সহযোগী স্টাফ রিপোর্টার আমানুল্লøাহ সাহেবকে বললেন, ‘রিপোর্টটি খালেদ সাহেবের নামে ছেপে দেন’। তিনি বললেন, ‘থাক’। পরদিন রিপোর্টটি বেরুলে দুপুরের দিকে বিএসএস অফিসে যাই। সেখানে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে আমাদের সমসাময়িক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র গোলাম তাহাবুর রিপোর্টিংয়ের কাজ করেন। আমাকে দেখে জিজ্ঞেস করেন, ‘এম্প­য়মেন্টের ওপর রিপোর্টি কে করেছে’। আমি বললাম, ‘আমি’। তিনি তার সহকর্মীদের বললেন, ‘ঐব যধং নবধঃবহ ধষষ ড়ভ ঁং’. আমি তার কাছে জানতে চাইলাম, ‘স্টোরিটি আপনার ভালো লেগেছে’? তিনি বললেন, ‘খুব সুন্দর হয়েছে’। আমি মর্নিং নিউজ অফিসে ফিরে এলে আমানুল্লাহ সাহেব জিজ্ঞেস করলেন, ‘কোথায় গিয়েছিলেন’? আমি বললাম, ‘বিএসএসে’। তিনি বললেন, ‘সেখানে গেছেন কী করতে’? বললাম, ‘গোলাম তাহাবুরের সাথে দেখা করে এলাম’। তিনি আর কিছু বললেন না।

পরদিন প্ল্যানিং কমিশনে গেলাম। কমিশনের মেম্বার আমার শিক্ষক প্রফেসর রেহমান সোবহানের সাথে দেখা করলাম। তিনি কুশল জিজ্ঞাসার পর আন্তরিকতার সাথে জানতে চাইলেন, ‘উড়হ’ঃ ুড়ঁ ধিহঃ ঃড় ফড় ংড়সবঃযরহম ড়হ ুড়ঁৎ ফরংপরঢ়ষরহব’? আমি বললাম, ‘ও ধিহঃ ঃড় ৎবসধরহ ড়হ ঃযরং ষরহব. চষবধংব, যবষঢ় সব রিঃয ংড়সব হবংি’. তিনি বললেন, ‘ঘড়ি ও ফড়হ’ঃ যধাব ধহু হবংি ঃড় মরাব ুড়ঁ. ঈড়সব ধভঃবৎ ভরভঃববহ ফধুং’. সেক্রেটারিয়েটের বাইরে এসে রিকশায় চেপে আমাদের পরিবাগের বাসায় রওনা দিলাম। রিকশা শাহবাগ রেডিও অফিস পার হয়ে উত্তর দিকে যাচ্ছে। হঠাৎ আমার দু’চোখ বাষ্পাকুল হয়ে এলো। বুকের ভেতরটা ফুঁপিয়ে উঠল। পিআইডিইতে যাদের সাথে কাজ করেছি প্ল্যানিং কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ অনেকেই এখানে আছেন। প্ল্যানিং কমিশনে অ্যাসিস্টেন্ট চিফ পদের জন্য ইন্টারভিউ দিয়েছি; কিন্তু কাজ হয়নি। পরদিন সকাল ১০টায় বরাবরের মতো মর্নিং নিউজ অফিসে এলাম। আজ আমাকে নিয়োগপত্র দেয়ার কথা। অফিস বাউন্ডারির ভেতরের রাস্তায় দাঁড়িয়ে দেখলাম, সব কক্ষে তালা। মর্নিং নিউজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যা-ও একটা কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল, সেটিও গেল। ১৯৭৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর মুড়াপাড়া ডিগ্রি কলেজে শিক্ষকতার কাজ পাই। সেখানে থাকতেই ১৯ নভেম্বর ১৯৭৪ সালে সরকারি কলেজে অ্যাডহক ভিত্তিতে শিক্ষকতার নিয়োগপত্র পেলাম। সে মোতাবেক পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে ৩০ নভেম্বর ১৯৭৪ যোগদানের পর তা নিয়মিত হতে আমাকে ১৯৭৫ সাল শেষাবধি অপেক্ষা করতে হয়েছে; মাঝখানে ছ’মাস বেতন বন্ধ ছিল, আমি তখন তিতুমীর কলেজে।
লেখক : অর্থনীতির অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর ও ভাইস প্রিন্সিপাল, মহিলা সরকারি কলেজ, কুমিল্লা।