Naya Diganta

তুরস্কে অবস্থিত ইউরোপের ২য় বৃহত্তম মসজিদে ৩ বছরে আড়াই কোটি পর্যটক

বিগত তিন বছরে তুরস্কে অবস্থিত ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম মসজিদ গ্র্যান্ড চামলিজা মসজিদ অন্তত আড়াই কোটি মানুষ পরিদর্শন করেছেন।

বৃহস্পতিবার তুর্কি সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এ তথ্য নিশ্চিত করে।

ইস্তাম্বুলের চামলিজা মসজিদ আধুনিক ও প্রাচীন স্থাপত্যশিল্পের মিশ্রণে নির্মিত অনিন্দ্যসুন্দর একটি স্থাপনা। বসফরাস প্রণালির তীরে দাঁড়িয়ে থাকা চামলিজা পাহাড়ের চূড়ায় ২০১৬ সালে মসজিদটি নির্মিত হয়েছে। ২০১৯ সালের মার্চে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। আগস্ট ২০১৩ তিনিই মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

১৫ হাজার বর্গমিটার জায়গাজুড়ে মসজিদ কমপ্লেক্সটির অবস্থান। এখানে সর্বমোট ৬৩ হাজার মুসুল্লি নামাজ আদায় করতে পারে। মসজিদ কমপ্লেক্সে রয়েছে বিশাল ইসলামী সেন্টার। ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য ১১ হাজার বর্গফুটের চোখ-ধাঁধানো মিউজিয়াম ও আর্ট গ্যালারি, সুপরিসর লাইব্রেরি ও এক হাজার সিট বিশিষ্ট বিশাল হলরুমসহ সাড়ে তিন হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের বিশেষ সুবিধা।

মসজিদের বহিরাংশে উসমানি-সেলজুক আমলের ডিজাইনে নির্মিত ১০৭.১ মিটার উচ্চতার দুটি মিনারসহ মোট ছয়টি মিনার আছে। ১০৭.১ মিটার উচ্চতার রয়েছে বিশেষ রহস্য, যা ১৭০১ সালের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। সেলজুক সুলতান আলুপ আরসালান ১৭০১ সালে এ অঞ্চলে বিজয়ী বেশে আগমন করেন। তা ছাড়া মসজিদের অন্যান্য অংশও বিভিন্ন তাত্ত্বিক সংখ্যায় নির্মাণ করা হয়েছে।

মসজিদের প্রধান গম্বুজের উচ্চতা ৭২ ও ব্যস ৩৪ মিটার। গম্বুজটির উচ্চতা ৭২টি জাতিগোষ্ঠীর ঐক্যের আহ্বান করে আর ৩৪ মিটার ব্যস জানান দেয় শহরের গাড়ির নির্ধারিত নাম্বার প্লেটের কথা।

একইসাথে মসজিদটির রয়েছে ছোট-বড় ১৬টি গম্বুজ আর তাতে মহান আল্লাহর ১৬টি নামের ক্যালিওগ্রাফি ব্যবহার করা হয়েছে, যা ওসমানিয়া শাসকদের ১৬টি নিদর্শনকে ধারণ করে।

রাতের চামলিজা তুলনামূলক বেশি মোহনীয় কমনীয় রূপ পরিগ্রহ করে। মসজিদের বারান্দা ও জানালা দিয়ে পুরো ইস্তাম্বুল নগরীর দুপাশ দেখে নেয়া যায় একনজরে। প্রবহমান সুদৃশ্য বসফরাস প্রণালিকে তখন খুব আপন মনে হয়। ইস্তাম্বুলকে রূপসী মসজিদের নগরী আখ্যায়িত করা যায়; আয়া সোফিয়া মসজিদ, নীল মসজিদ এবং আধুনিক তুরস্ক প্রতিষ্ঠার পর নির্মিত তুরস্কের সর্ববৃহৎ মসজিদ চামলিজা শহরটির রূপ-সৌন্দর্য কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।

এ মসজিদেই ইসলামিক সভ্যতার জাদুঘর অবস্থিত। কয়েক মাস আগে প্রেসিডেন্ট এরদোগান জাদুঘরের উদ্বোধন করেন।

সূত্র : আনাদোলু ও তুর্কি প্রেস