Naya Diganta

বাংলাদেশের ইন্ডিয়া সিনড্রোম

বাংলাদেশের ইন্ডিয়া সিনড্রোম

ভারতে পরিকল্পিত সাম্প্রদায়িক বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে। ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্বে কট্টর ধর্মীয় বর্ণবাদী গ্রুপগুলো আরো সংগঠিত হচ্ছে। এদের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যটি ধীরে ধীরে আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তারা ‘পদ্ধতিগত’ একটি এথনিক ক্লিনজিংয়ের মাঠ তৈরি করছে ভারতজুড়ে। এর মধ্যেই আবার কিছু ক্রাশ কর্মসূচিও তারা নিচ্ছে। যেমন দেশটির সবচেয়ে বড় উত্তর প্রদেশসহ কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারণা যখন তুঙ্গে ঠিক তখন হিজাব ইস্যুটি তারা সামনে এনেছে। একটি হাইপ একেবারে উচ্চাঙ্গে তুলে কিভাবে নির্বাচনী ফলাফল নিজেদের ঝুলিতে ভরা যায় এমন বহু নজির নরেন্দ্র মোদি সরকারের রয়েছে। কর্নাটকের হিজাব নিষিদ্ধ করার আদেশের পর বিধানসভার বিপুল বিজয় তার আরেকটি উদাহরণ হয়ে থাকবে।

ভারতে ধর্মীয় সম্প্রীতি সবচেয়ে ভালো এমন প্রদেশগুলোর একটি কর্নাটক। অত্যন্ত সুচতুরভাবে পুরো রাজ্যকে তারা উসকানিতে সম্পৃক্ত করে ফেলল। সেখানকার উদুপি জেলার একটি কলেজে হিজাব পরা একদল ছাত্রীকে ঢুকতে বাধা দেয় বিজেপির ছাত্র শাখার কর্মীরা। বহিরাগত হিসেবে তারা কলেজে গিয়ে জঙ্গি মিছিল করেছে। ছাত্রীদের লক্ষ করে ‘জয়শ্রীরাম’ বলে স্লোগান দেয়। ওই সময় এক মুসলিম ছাত্রী আবেগের বশবর্তী হয়ে ‘আল্লাহু আকবর’ স্লোগান দেন। মেয়েটি পরে জানিয়েছেন, তিনি যখন ভয় পান এসব শব্দ তিনি বলেন। এতে তার মধ্যে শক্তি সঞ্চার হয় বলে দাবি করেন তিনি। একদল উগ্র বহিরাগতের বিরুদ্ধে তার ভয়তাড়ানিয়া শ্লেøাগান ভাইরাল হয় নেট দুনিয়ায়। হুজুগে সবাই এটিকে শেয়ার করে। বাস্তবতা হচ্ছে, ঠিক এই ধরনের একটি ভিডিও ক্লিপই উগ্র গোষ্ঠীগুলোর জন্য প্রয়োজন। তারা এটিকে দারুণভাবে ব্যবহার করেছে হিন্দু জাতীয়তবাদী উত্তেজনা ছড়াতে। যাই হোক, এর ফলাফল তারা পেয়েছে। সব পূর্বাভাস ব্যর্থ করে দিয়ে উত্তর প্রদেশে মোদি-যোগীর জয় হয়েছে।

এতে তাদের বাড়তি পাওনা হিসেবে যোগ হয়েছে আদালতের রায়টি। ধর্মনিরপেক্ষ কর্নাটকের উচ্চ আদালতও বিজেপির পক্ষেই রায় দেয়। ফেব্রুয়ারির শুরুতে কর্নাটক সরকার হঠাৎ হাইস্কুল ও কলেজে মুসলিম মেয়েদের হিজাব পরে ক্লাসে আসা নিষিদ্ধ করে। এই সময় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুসলিম শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছিত হতে দেখা যায়। হিজাব পরে নিজেদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তারা ঢুকতে পারেনি, বাইরে তাদের অপেক্ষমাণ থাকার বহু ছবি প্রকাশিত হয়েছে। অনেকে জানিয়েছেন, তারা পড়াশোনার চেয়ে তাদের হিজাবকে বেশি গুরুত্ব দেবেন। প্রয়োজন হলে পড়াশোনা ছেড়ে দেবেন।’ এরপর কয়েকজন ছাত্রী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরার অধিকার চেয়ে রাজ্যের উচ্চ আদালতে আবেদন করেন। প্রধান বিচারপতি আর আর অবস্থির নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ তাদের দাবি নাকচ করে দিয়েছে। তারা আদেশে বলেছেন, সরকারি স্কুল-কলেজে ছাত্রছাত্রীরা কী পোশাক পরে আসবে, সেই ইউনিফর্ম কোড বেঁধে দেয়ার পূর্ণ অধিকার কর্তৃপক্ষের রয়েছে। তারা আরো উল্লেøখ করেন, ভারতীয় সংবিধানের ধারা ২৫-এ যে ধর্মীয় স্বাধীনতা দেয়, হিজাব পরার বিষয়টি তার আওতায় পড়ে না।’ রায়দানকারী আদালতের বিচারকরা হিন্দু সম্প্রদায়ের। তারা এমন ধর্মের মানুষের ব্যাপারে আদেশ দিয়ে দিলেন, যে ব্যাপারে তারা কোনোভাবে বিশেষজ্ঞ নন।

ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিমরা মূল জনগোষ্ঠীর চেয়ে বহু পিছিয়ে পড়েছে। বিজেপি ক্ষমতায় আসার আগে, বিখ্যাত সাচার কমিটির একটি রিপোর্টে সেটি উঠে এসেছে। সরকারি চাকরিতে তাদের অবস্থান একেবারে নিচের দিকে চলে গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সামরিক বাহিনীতে তাদের অবস্থান নেই। তা ছাড়া উঁচুদরের পেশা থেকেও তারা মুছে গেছে। ব্যবসায় বাণিজ্যেও একই অবস্থা। পশ্চিমবঙ্গের পরিসংখ্যান জানলেই সেটা স্পষ্ট করে আমরা বুঝতে পারব। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, এ রাজ্যে সরকারি চাকরিতে মাত্র ২ দশমিক ১ শতাংশ মুসলিম। এখানে মুসলিম জনসংখ্যার হার ৩০ শতাংশ। তার চেয়েও বড় কথা, এ রাজ্য শাসন করেছে একটানা বামদল। তার পরই ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। একটি দীর্ঘ ধারাবাহিক বঞ্চনার মাধ্যমে ধর্মীয় সম্প্রদায়ের অধিকার সঙ্কুুচিত করা হয়েছে। কর্নাটকে হিজাব আইন জারির পর সেখান থেকে কত মুসলিম ছাত্রী ঝরে পড়েছে এ হিসাব এখন আর কেউ করবে না। এভাবে কর্নাটকের মূল জীবনধারা থেকে মুসলিমরা হারিয়ে যাবে।

বিগত দশকে ভারতীয় আদালতের বদলে যাওয়ার চিত্রটি আমরা দেখতে পেলাম। দেশটির সরকারি ক্ষমতার পালাবদলের সাথে সাথে আদালতের চরিত্রও বড়দাগে পরিবর্তিত হয়ে গেল। বাবরি মসজিদসহ সংখ্যালঘু মুসলিমদের ব্যাপারে প্রায় প্রতিটি রায় বিজেপির পছন্দের বা তাদের কাক্সিক্ষত অবস্থাকে সমর্থন জোগানো হয়েছে। একই অবস্থা দেখা গেছে, মুসলিমদের ওপর দিল্লিতে দাঙ্গা চালানোর পর। আদালত দিয়ে অনেক কিছুকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। যারা স্বাধীন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করার উদ্যোগ নিয়েছে সেই বিচারকের ওপর নেমে এসেছে খড়গ।

বিজেপির নেতৃত্বে ‘সংঘ পরিবার’ এর দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যের অংশ হিসেবে সাধুসন্তদের পক্ষ থেকে মুসলিমদের হত্যার প্রকাশ্যে হুমকি দেয়া হচ্ছে। ক্রমাগত এমন হুমকি দেয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে মাঠ তৈরি করে রাখা। এরই মধ্যে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন ভারতে মুসলিমদের লক্ষ করে দাঙ্গা হবে। এর মাধ্যমে তারা ভারতকে একটি পূর্ণাঙ্গ সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র্রে পরিণত করতে চান। তাদের মধ্য থেকে কেউ কেউ বলে আসছেন, এ হিন্দু রাষ্ট্র্রে একীভূত করে নেয়া হবে পুরো উপমহাদেশকে। মুসলিম সম্প্রদায়কে প্রথমে অধিকারহারা ও দুর্বল করে পরে তদের উৎখাতের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে তারা। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, আমাদের দেশেও একই ধরনের কার্যক্রমের ছায়া দেখা যাচ্ছে। ভারতের কট্টর বর্ণবাদী সম্প্রদায়ের কার্যক্রমের সাথে মিল রয়েছে এমন কিছু কার্যক্রম আমাদের দেশে বর্ধিতহারে ঘটে চলেছে।

ভারতে হিন্দু ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানকে ব্যাপক আশকারা দেয়া হচ্ছে। নিজেদের ধর্মীয় আচারকে সর্বজনীন বলে অন্যের ওপর চালানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আর মুসলিমদের ধর্মীয় কার্যক্রমকে বাধা দিয়ে সঙ্কোচন করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে উসকানিকূলক আচরণ গ্রহণ তার পর জনবসতিতে হামলা, মসজিদ পুড়িয়ে দেয়া, মুসল্লিদের ওপর হামলা।

চলতি বছরে চট্টগ্রামে আয়োজিত বইমেলায় গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্সের নেতৃত্বে সাতটি প্রকাশনা সংস্থাকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হয়নি। তারা ঐশীগ্রন্থ আল কুরআন ও ইসলামের শেষ নবী হজরত মহাম্মদ সা: ও তার সাথীদের জীবনের উত্তম দিকগুলো নিয়ে বই প্রকাশ করে থাকে। টার্গেট করে মেলার আয়োজকরা আরো কিছু প্রকাশনাকে বাইরে রেখেছে। আবার ইসলামী বই প্রকাশক হিসেবে এমন গ্রুপকে মেলায় স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে যাদের বিরুদ্ধে সংখ্যাগুরু মুসলিমদের নানা অভিযোগ রয়েছে। তারা সমাজে বিতর্কিত কর্মকাণ্ড চালায় ইসলামের নামে। আর আমাদের মেলা কর্তৃপক্ষের পছন্দ তাদেরই। তাদের হিসাবে বিতর্কিতরাই বেশি উপযুক্ত।

এ ব্যাপারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা হলে সংবাদমাধ্যমেও কিছু খবর প্রকাশ করা হয়। সেখানে মেলা কর্তৃপক্ষ এমন কিছু বক্তব্য দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ খণ্ডন করার চেষ্টা করে যেগুলো আরো বেশি বিতর্কিত ও সন্দেহজাগানিয়া। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- স্বাধীনতাবিরোধী, জঙ্গিবাদকে উৎসাহিত করে এমন বই তারা মেলায় প্রদর্শিত হতে দেবেন না। এ দু’টি ইস্যুই বিগত একযুগে এতটাই প্রয়োগ করা হয়েছে যে, মানুষ রীতিমতো ত্যক্ত বিরক্ত। মূলত মানুষের অধিকার হরণ, বলপ্রয়োগ ও রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা করার জন্য এসব শব্দবন্ধ ব্যবহার করা হয়েছে। মেলা কর্তৃপক্ষ কিভাবে প্রমাণ করবেন বাদ দেয়া ইসলামী বইগুলো স্বাধীনতাবিরোধী জঙ্গিবাদী? দেশের কোনো আইনের বলে এগুলো নিষিদ্ধ হলে সেসব বই ছাপানোর সুযোগ থাকার কথা নয়। কেউ যদি সেটি করে থাকে তা হলে তার বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগের সুযোগ রয়েছে। এসব প্রকশনাকে তারা কোনোভাবে মেলায় অংশগ্রহণ বঞ্চিত করতে পারে না।

মোটকথা হচ্ছে, এমন কর্তৃপক্ষ বইমেলার দায়িত্ব নিচ্ছে যারা নিজেরা আপাদমস্তক সাম্প্রদায়িক। তারা মুক্তমতকে সমর্থন করেন না। তারা সমাজের বৃহত্তর একটি অংশকে স্তব্ধ করে দিতে চান। একই ধরনের বঞ্চনা বেশ কয়েক বছর ধরে ঢাকার বইমেলায়ও দেখা যায়। এখানেও ইসলামী স্টলগুলো সমানভাবে আদৃত হয় না। অনেক প্রকাশনাকে মেলায় অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া হয় না। এ বঞ্চিত গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ। তারা ইসলামের নামে বইপত্র ছাপায়। তবে মেলায় অন্য সব ধর্মের নামে স্টলের অনুমোদন রয়েছে। এমনকি বিতর্কিত ধর্মীয় সংগঠন ইসকনকেও বড় বড় স্টল বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। তাদের প্রকাশিত বইপত্রের বড় একটা অংশের মধ্যে সাম্প্রদায়িক উপাদান রয়েছে। বলপ্রয়োগ করে মন্দির দখলসহ ইসকনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক মিলন কেন্দ্র টিএসসিতে বিগত কিছুদিন ধরে নামাজ পড়ার জায়গা বরাদ্দ নিয়ে জোরজবরদস্তির যে চর্চা আমরা দেখছি সেখানেও একই লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে। ছাত্রীরা টিএসসিতে নামাজ পড়ার জায়গা পান না। নামাজের জায়গা বরাদ্দের জন্য তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন জানাতে হয়েছে। এরপর গায়েবি রশি টানাটানির যে দৃশ্য দেখা গেল তাতে মনে হচ্ছে, পেছনে অন্ধকার থেকে কলকাঠি নাড়ছে একদল।

প্রথমেই তাদের বাধা দেয়া হলো। ছাত্রলীগের একাংশের মাধ্যমে বিরোধিতা করা হলো। যুক্তি দেখানো হলো- টিএসসিতে ছাত্রীদের নামাজের স্থান থাকার কোনো দরকার নেই। তারা কেন্দ্রীয় মসজিদে গিয়ে পড়তে পারে। এরপর তারা এর অনুমতি পেল। আবার দেখা গেল, তাদের নামাজের জায়গাটি সিল করে দেয়া হয়েছে। এভাবে একবার তারা নামাজের সুযোগ পান, আবার কারা যেন তাদের জায়গাটি দখল করে নেন বা তালা মেরে দেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশের সর্ববৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয়ে মুসলিম ছাত্রীদের নামাজ পড়ার জন্য সামান্য এক টুকরা জায়গা পাওয়া বড় কঠিন হয়ে গেল। এ জন্য তাদের সংগ্রাম করতে হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত এক টুকরা জায়গা মিলে কি না সেই নিশ্চয়তা নেই।

নববর্ষ উদযাপনসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটকে ঘিরে এমন সব উৎসব আয়োজন করা হয় এর মধ্যে বহু বিতর্কিত কর্মসূচি রয়েছে। এগুলোর কিছু কিছুর সাথে হিন্দু ধর্মের পূজা অর্চনার কিছু মিল রয়েছে। কিছু কিছুর সাথে তারও মিল নেই। এর মধ্যে মঙ্গল শোভাযাত্রায় যেসব চরিত্র চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে সেগুলোর সাথে মুসলিম সমাজের ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক। এর পরও এসব নিয়ে কেউ কিছু বলে না। নববর্ষে চারুকলায় আয়োজিত সর্বশেষ মঙ্গল শোভাযাত্রা উৎসবের বদলে একটি উপহাস ও ঠাট্টা মশকারায় রূপ নিয়েছে। তাতে প্রদর্শিত কাগজের পুতুলগুলোর লক্ষ্য কী কেউ জানে না। আবার কিছু নারী মূর্তিকে ঠিক কেন এমন বস্ত্রহীন করে প্রদর্শন করতে হবে, তারও উত্তর নেই। সে দিনের নববর্ষের যাত্রায় অংশগ্রহণকারী মানুষের চেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের সংখ্যাই বেশি ছিল। কারণ তারা বন্ধুরাষ্ট্রের পরামর্শে উচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছিল।

ভারতে মুসলিমদের ওপর চালানো নিপীড়নের প্রতিক্রিয়া হওয়ার কথা ছিল প্রতিবেশী বাংলাদেশে যদিও এ দেশের বৃহত্তর মুসলিম সমাজ উদার। প্রতিবেশী হিন্দুদের সাথে রয়েছে তাদের সদ্ভাব। আশ্চর্যজনকভাবে ভারতীয় মুসলিম নিপীড়নের ছায়ার অনুসরণ হচ্ছে এ দেশে। অর্থাৎ ভারতে যা হচ্ছে তা-ই হচ্ছে বাংলাদেশে। অথচ ভারতের এমন সংখ্যালঘু নিপীড়নমূলক কর্মসূচি সুপরিকল্পিত। বিজেপি এর মাধ্যমে কট্টর হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্র কায়েম করতে চায়। কিন্তু বাংলাদেশে একই ধরনের কর্মসূচির হেতু কী? এর মাধ্যমে বাংলাদেশ কী অর্জন করতে চায়? এ দেশে সরকারি ক্ষমতায় ধর্মনিরপেক্ষ আওয়ামী লীগ। আর আমাদের আলাদা একটি রাষ্ট্র। আমাদের সীমানা চিহ্নিত। রয়েছে শক্তিশালী সামরিক বাহিনী। আমরা সার্বভৌম একটি দেশ।

jjshim146@yahoo.com