Naya Diganta

হল ফিস্টের মধুর স্মৃতি

হল ফিস্টের মধুর স্মৃতি

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ঐতিহ্যবাহী হল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হল। এই হলের একটি ব্লকের নামকরণ করা হয়েছে তপন স্মৃতি ফ্লোর। অবশ্য এই নামের পেছনে একটা তাৎপর্যও আছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনপ্রিয় মুখ ও তুখোর ছাত্রনেতা নূরে আলম তপন। যিনি মহামারী করোনা ও কিডনি জটিলতায় প্রাণ হারিয়েছেন। মূলত তার নামকে স্মরণীয় করে রাখতেই তথা দ্বিতীয় তলা ‘খ’ ব্লকের সবার প্রচেষ্টা ও প্রভোস্ট মহোদয়ের সহযোগিতায় ফ্লোরের নামকরণ করা হয় তপন স্মৃতি ফ্লোর।
প্রতি বছর হলের বিভিন্ন ফ্লোরে ফিস্ট আয়োজন করা হয়। কিন্তু ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০০২ সালের পর এই হলের ফ্লোরে ফিস্ট আয়োজন করা হয়নি। এ বছর ৩, ৪ ও ৫ মার্চ কয়েকজনের মিলিত প্রচেষ্টায় দীর্ঘ ২০ বছর পর ফিস্টের আয়োজন করা হয় ।
তিন দিনব্যাপী ফিস্টের শুরুর দিন থেকে শেষদিন পর্যন্ত নানা ধরনের উদ্ভাবনীমূলক কাজের মাধ্যমে ফিস্টকে সাজিয়ে তোলা হয়। ফিস্টের বড় আকর্ষণ ছিল শর্টপিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। ভাষাশহীদের নাম অনুসারে প্রতিটি দলের নাম রাখা হয়। শহীদ সালাম একাদশ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে বিজয়ী হয়। এ ছাড়া ক্যারাম এবং টেবিল টেনিস খেলার আয়োজন করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার আঙ্গিকে বিভিন্ন ধরনের পোস্টার তৈরি করে ফিস্টকে সাজানো হয়। ব্লকে আল্পনা তৈরি করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্য বহন করে এমনভাবে ব্লকের প্রত্যেক রুমের নামকরণ করা হয়।
সন্ধ্যা ৬টায় কেক কাটার পর ফানুস ও আতশবাজি ফাটিয়ে ফিস্টের শুভ উদ্বোধন করা হয়। দ্বিতীয় দিন বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির পর সবাই কালার ফিস্টে যোগদান করে। অতঃপর জুমার নামাজ আদায় করা হয়। এরপর খাওয়া-দাওয়া শেষ করে বিকেলে হল প্রাঙ্গণে ফটোসেশন করি। ফিস্টে হলের সাবেক বড়ভাইয়েরা অংশগ্রহণ করেন। বিকেলে তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় প্রিয় ক্যাম্পাসে নৌকাভ্রমণে অংশ নিতে। সন্ধ্যার পর সবাই মিলে বাকৃবির চিরচেনা জায়গা কামাল রণজিত (কেআর) মার্কেটে কিছুটা সময় কাটাই।
ফিস্টের মূল আয়োজন শুরু হয় রাত ৮টার সময়। এ সময় ফ্লোরের সাবেক বড়ভাইদের জন্য নানা ধরনের খেলা এবং লটারির ব্যবস্থা করা হয়। সবশেষে ফ্লোরের সবাই গান গেয়ে ফিস্টের আয়োজনকে মাতিয়ে তুলে।
ফিস্টের শেষ দিনের সকালটা শুরু হয় প্রীতি ভলিবল ম্যাচের মাধ্যমে। দুপুরের খাবার শেষে অন্যান্য ইনডোর খেলা শেষ করি। এরপর রাতের খাবার শেষে বিজয়ীদের হাতে তাদের ট্রফি তুলে দেয়া হয়। ফিস্টের রাত শেষ হয় একযোগে সবাই মিলে গানবাজনা ও নাচানাচির মাধ্যমে।
২০ বছর পর এই ফিস্টের আয়োজন সবার মধ্যে আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করেছিল। কারণ হলের সবাই এই তিন দিনে সব ভেদাভেদ ভুলে এক হয়ে গিয়েছিল। ফিস্টের স্পন্সর করেছিল এসি আই মোটরস লিমিটেড।
ফ্লোরের প্রত্যেকেরই একটি প্রার্থনা ‘যতদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে আছি ততদিন যেন প্রতি বছর এভাবে ফিস্টের আয়োজন করতে পারি।’