Naya Diganta

মেক্সিকোতে বিচারহীনতার কারণে গুমের ঘটনা বেড়েই চলেছে

মেক্সিকোতে বিচারহীনতার কারণে গুমের ঘটনা বেড়েই চলেছে

জাতিসঙ্ঘের একটি নজরদারী কমিটি মেক্সিকোতে বিচারহীনতার অবসানের আহ্বান জানিয়েছে যার ফলে মহামারীর মতোই বেড়েই চলেছে জোরপূর্বক গুমের ঘটনা। জাতিসঙ্ঘের জোরপূর্বক অন্তর্ধান বিষয়ক কমিটি বা কমিটি অন ইনফোর্সড ডিসএপিয়ারেন্স গত বছরের শেষের দিকে মেক্সিকোতে একটি সত্য উদঘাটন মিশনের ফলাফল প্রকাশ করেছে।

গত বছরের নভেম্বর মাসে কমিটি মেক্সিকো সফরের সময় আনুষ্ঠানিকভাবে নিবন্ধিত নিখোঁজের সংখ্যা ৯৫ হাজারেরও বেশি এবং তার সাথে তারা নতুন নিখোঁজ হওয়া ১১২ জনকে অন্তর্ভূক্ত করেছে।

জোরপূর্বক অন্তর্ধান সম্পর্কিত জাতিসঙ্ঘের কমিটি মেক্সিকোতে গুম হওয়ার ক্রমবর্ধমান সংখ্যার জন্য সরকারী কর্মকর্তা এবং সংগঠিত অপরাধকে দায়ী করেছে। কমিটির সদস্যদের ১১ দিনের সফরে তারা সারা দেশের শত শত কর্মকর্তা, ভুক্তভোগী এবং সুশীল সমাজের সংগঠনগুলোর কাছ থেকে সংগৃহীত প্রমাণের উপর ভিত্তি করে ওই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

কমিটির সচিব আলবানে প্রফেট্ পাল্লাস্কো বলেন, ১৫ থেকে ৪০ বছর বয়সী পুরুষরাই এর প্রধান শিকার।

তবে তিনি বলেন, ১২ বছর বয়সের ছেলে-মেয়েদের পাশাপাশি কিশোর-কিশোরী ও নারীদের গুম হবার ঘটনাও উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে- এদের মধ্যে কেউ কেউ পাচার এবং যৌন অত্যাচারের শিকার হচ্ছে।

প্রফেট-পাল্লাস্কো মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিকদের অন্তর্ধানের বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তিনি বলেন, মানবাধিকার রক্ষাকারীদের অবস্থা নিয়েও কমিটি উদ্বিগ্ন। ওই কর্মীদের কেউ কেউ অনুসন্ধানে অংশ নেয়া এবং গুমের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জড়িত থাকার কারণে নিখোঁজ হয়ে গেছেন।

তিনি বলেন, ২০০৩ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ৩০ জনেরও বেশি সাংবাদিকের গুম হওয়ার ঘটনায় তারা উদ্বিগ্ন। তাদের কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি।

প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে গত পাঁচ বছরে মেক্সিকোতে গুমের ঘটনা নতুন করে ঘটেছে গড়ে ৮ হাজারটি। সফর কালে প্রফেট্ট-পল্লাস্কো বলেন, কমিটি কারাগার এবং অভিবাসন কেন্দ্রগুলোতে গুম হওয়ার ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ শুনেছেন।

তিনি বলেন, প্রতিনিধিদলটির কাছে এমন অভিযোগও এসেছে যে অভিবাসীদের অবৈধভাবে আটক করা হচ্ছে এবং মুক্তিপণের জন্য আটকে রাখা হচ্ছে। আর কখনো কখনো তা করা হচ্ছে সরকারি কর্মচারীদের সহায়তায়।

ওই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় মেক্সিকোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জাতিসঙ্ঘ কমিটির কাজের প্রশংসা করেছে। এতে আরো বলা হয় তারা সততার সাথে কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

কমিটির কাছে মেক্সিকোর তাদের নিজেদের পর্যবেক্ষণ জমা দেয়ার জন্য হাতে চার মাস সময় আছে।