২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

ব্যবসার পুরো টাকায় কুরবানি করবেন এ্যানী খান

ব্যবসার পুরো টাকায় কুরবানি করবেন এ্যানী খান - ছবি- নয়া দিগন্ত

এ বছর অনলাইনে বোরকা, হিজাব ও থ্রি-পিসসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করে যে পরিমাণ আয় হবে পুরো টাকায় কুরবানি করবেন অভিনেত্রী উম্মে হাবিবা এ্যানী খান। আর নিজের নামে খোলা ইউটিউব চ্যানেল থেকে যা আয় হবে পুরো অর্থ ব্যয় করবেন দ্বীনির পথে। অবশ্য প্রথমবার ইউটিউব থেকে আয়ের টাকায় একটি ছাগল কিনে জবাই করে মানুষকে খাওয়ানের ইচ্ছা তার। এরই মধ্যে তার ইউটিউব চ্যানেলে ২০ হাজার সাবস্ক্রাইব হয়েছে। ১০৫ ডলার আয় দেখাচ্ছে। যদিও সেই অর্থ এখনো তিনি তুলতে পারেননি ইউটিউবের কিছু নিয়ম-কানুন পূর্ণ না হওয়ায়।

এ্যানী খান বলেছেন, ‘গত বছর আমার ব্যবসা থেকে যে আয় হয়েছিল, পুরোটাই জাকাত হিসেবে দিয়েছি। এ বছর যা পাবো তা দিয়ে কুরবানি করবো। তবে আমি এখনো বড় কোনো ব্যবসায়ী হতে পারিনি।’

সম্প্রতি নিজের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনসহ ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে নয়া দিগন্তকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন তিনি।

এক সময়ের ছোট পর্দার ব্যাপক জনপ্রিয় এই অভিনয়শিল্পী বলেন, ২০২০ সালের মার্চে অভিনয় জগত ছাড়ার পর আমি পর্দা করা শুরু করেছি। এখন আমি বোরকা পরি, হিজাব পরি। নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। গত এক বছরে আমার এক ওয়াক্ত নামাজও কাজা হয়নি, আলহামদুলিল্লাহ।

বাংলাদেশে সাধারণ মুসলমানরা ইসলামের অনুসরণ করতে গিয়ে তিন ধরনের পদ্ধতির যেকোনো একটি মেনে চলেন। যেমন ধর্মীয় রাজনৈতিক দর্শন, পীর-মাজার কেন্দ্রিক বা তাবলীগ জামাতের অনুসারী।

এ্যানী খান এর কোনটির দ্বারা প্রভাবিত- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইসলামে নারীদের রাজনীতি নিয়ে বেশি ভাবার প্রয়োজন নেই। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়, রোজা রাখা, মানুষের গিবত (সমালোচনা) না করা আর পর্দা মেনে চলা। এই কাজগুলো করলেই মেয়েদের জান্নাতে যাওয়া সহজ। এজন্য তাবলীগে গিয়ে ঘোরাঘুরি বা মাজারে গিয়ে কপাল ঠেকানোর কোনো দরকার নেই।

এক বছর আগে অভিনয় ছেড়ে ধর্মীয় অনুশীলন শুরু করা এ্যানী খান বলেন, আমি ইউটিউবে এ্যানী খান নামে একটি চ্যানেল খুলেছি, যেখানে হাদিসের আলোচনা করছি। এরই মধ্যে ২০ হাজার সাবস্ক্রাইবস হয়েছে। ১০৫ ডলার আয় দেখাচ্ছে। এই টাকা তোলার পর একটি ছাগল কিনে মানুষকে খাওয়াবো। এরপর এই চ্যানেল থেকে যা আয় হবে, তা দ্বীনের পথে ব্যয় করবো।

পাশাপাশি তিনি ইউটিউবে শায়েখ আবদুল কাউয়ুম, ড. জাকির নায়েক ও ড. এনামুল হকসহ ধর্মীয় স্কলারদের আলোচনা শুনেন নিয়মিত। পড়ার চেয়ে শুনে মনে রাখা বা বোঝা সহজ বলেও মনে করেন তিনি।

অভিনয় ছেড়ে ধর্মীয় জীবনে প্রবেশ এই পবির্তন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ড. এনামুল হক স্যারের আলোচনা এক্ষেত্রে আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে, আমার জীবনের মোড় ঘুড়িয়ে দিয়েছে। ওনি একটা কথা বলেছেন যে ‘ইসলাম এমন একটি ধর্ম যেখানে আপনি চাইলে কিছু ঢুকাতে পারবেন না। আবার চাইলেই কিছু বাদ দিতে পারবেন না।’ তার লেকচার শুনে আমি নিজেকে নতুন করে ‘রিয়ালাইজ’ করতে শুরু করি। যদিও আমি আগে থেকেই নামাজ পড়তাম। কিন্তু তখন আমি চিন্তা করলাম, আসলে আমি তো নিজেকে ধোকা দিচ্ছি। নিজেই নিজের সাথে প্রতারণা করছি। কারণ আমি নামাজ পড়লাম। আবার সেজেগুজে গিয়ে অভিনয় করলাম, আমার সৌন্দর্য প্রদর্শন করলাম। মানুষ যদি আমাকে নিয়ে স্বপ্নই না দেখবে তাহলে আমি অভিনেত্রী হলাম কিভাবে...! তাই সিদ্ধান্ত নিলাম যে না, আর অভিনয় করবো না।

এ্যানী বলেন, এখনো তার লেকচার শুনি। তবে এখন বেশি শুনি শায়েখ আবদুল কাউয়ুমের লেকচার। প্রথমে বিদেশী স্কলারদের লেকচার শুনতাম। এখন দেশী-বিদেশী সবারই শুনি। যখন যেটা সামনে আসে।

এ্যানী খান মনে করেন, ছেলেদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সাথে আদায় করা উচিত। এক্ষেত্রে কোনো অজুহাত দেখানো ঠিক নয়। কারণ দুই মিনিট বেঁচে থাকার কোনো গ্যারান্টি নেই কারো। সুরতাং নামাজ কাজা করা কোনোভাবেই ঠিক নয়।


আরো সংবাদ



premium cement