২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

রঙ উৎপাদনে ব্যবহৃত হচ্ছে মাত্রারিক্ত সীসা

রঙ উৎপাদনে ব্যবহৃত হচ্ছে মাত্রারিক্ত সীসা - ছবি : সংগৃহীত

২০১৮ সালে রঙে সীসার ব্যবহারের সর্বোচ্চ ৯০ পিপিএম পর্যন্ত নির্ধারণ করে দেয় বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই)। কিন্তু এখনো দেশের বিভিন্ন রং উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান উচ্চ মাত্রায় সীসার ব্যবহার করছে।

এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন-এসডোর 'লেড ইন পেইন্টস : অ্যা সিগনিফিক্যান্ট পাথওয়ে অফ লেড এক্সপোসার ইন বাংলাদেশ' শীর্ষক একটি গবেষণায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এই গবেষণার ফলাফল এসডো কার্যালয়ে মিডিয়া ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়।

সংস্থাটি জানায়, বাংলাদেশে রঙে সীসার ব্যবহার নিষিদ্ধকরণের লক্ষ্যে এবং ডেকোরেটিভ ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল রঙে পূর্বের এবং বর্তমানের সীসার মাত্রার ফলাফল তুলনা করার জন্য এসডো এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছে। এজন্য লাল, হলুদ এবং সোনালী হলুদ রঙের ৩৯টি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডসহ মোট ৬৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষাকৃত নমুনাগুলোর মধ্যে বিভিন্ন মাত্রার সীসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

পরীক্ষাকৃত নমুনাগুলোর মধ্যে ৩০ দশমিক ৮ ভাগ ডেকোরেটিভ পেইন্টে ৯০ থেকে ২৫০ পিপিএম পর্যন্ত সীসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বাকি ৬৯ দশমিক ২ ভাগ ডেকোরেটিভ পেইন্টে সীসার মাত্রা ছিল ৯০ পিপিএম এর কম। তবে ইন্ডাস্ট্রিয়াল রঙে ভয়াবহ মাত্রায় সীসার উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। মোট নমুনার ৫০ ভাগে এই উচ্চ মাত্রার সীসার উপস্থিতি
পাওয়া গেছে। এর মধ্যে কমলা রঙে সর্বোচ্চ ৯৭ হাজার পিপিএম পর্যন্ত সীসার মাত্রা শনাক্ত হয়েছে।

সংস্থাটি জানিয়েছে, মোড়কে সীসামুক্ত রঙয়ের লোগো থাকা সত্ত্বেও ইন্ডাস্ট্রিয়াল রঙে সর্বোচ্চ সীসার উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পেইন্টে এমন উচ্চ মাত্রায় সীসার উপস্থিতি উদ্বেগজনক।

এসডোর সিনিয়র টেকনিক্যাল এডভাইজার ও বিএসটিআইয়ের কেমিক্যাল বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল হাসেম বলেন, উন্নয়নশীল দেশে সীসাযুক্ত রঙের সংস্পর্শে আসার কারণে শিশুরা আজীবন মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। রঙে সীসার ব্যবহার নিষিদ্ধ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।

এসডো'র নির্বাহী পরিচালক সিদ্দীকা সুলতানা বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ৩৫ দশমিক ৫ মিলিয়ন শিশু সীসা দূষণের শিকার। রক্তে সীসার কোনো নিরাপদ মাত্রা নেই। মানব স্বাস্থ্য ও পরিবেশের উপর সীসার ক্ষতিকর প্রভাব এবং এর বিষক্রিয়া কমাতে আরো গুরুত্বসহকারে সীসার উৎস খুঁজে বের করতে হবে।

এসডো'র মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, আমরা ঘর সাজানোর জন্য ব্যবহৃত সীসাযুক্ত রঙের বিষক্রিয়ার মাধ্যমে আমাদের শিশুদের জন্য হুমকি সৃষ্টি করি। এ ধারা অব্যাহত থাকলে আমাদের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে। শিশুদের স্বাস্থ্যকর, নিরাপদ ও সুন্দর পরিবেশ প্রদান এবং নারীর স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে রঙে সীসার ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এবং প্রচলিত আইনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement