২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঈশ্বরগঞ্জে নারী ইউপি সদস্যকে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা

চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হাসান খান সেলিম - ছবি : সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্য রোখসানা বেগমকে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে একই ইউপির চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হাসান খান সেলিমের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

গত ২ ফেব্রুয়ারি তাকে শ্লীলতাহানিসহ ব্যাপক মারধর করা হয় বলে থানায় এজাহার দাখিল করেন ৭, ৮ ও ৯ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী ইউপি সদস্য রোখসানা। পরে পুলিশ শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) এজাহারটি নথিভুক্ত করে।

নির্যাতনের শিকার রোখসানা বলেন, ‘আমি উচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে আমি কোনো প্রকল্পের কাজ পাইনি। তাই চেয়ারম্যান বললেও পরিষদের কোন কাজে বা প্রকল্পের নথিতে সই করিনি। এতে দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যান আমার উপর ক্ষিপ্ত ছিল। ঘটনার দিন আমাকে পরিষদে মিটিংয়ের কথা বলে খবর দিলে আমি পরিষদে উপস্থিত হই। পরে আমাকে একটি কাগজে স্বাক্ষর করতে বলে এবং তাকে ২০ হাজার টাকা দিতে বলে। আমি স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করে প্রতিবাদ করি। এতে চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে আমার চুলের মুঠি ধরে লাথি-কিল-ঘুষি মারে ও জুতাপেটা করে। এ সময় আমার কাপড় টেনে-হিঁচড়ে শ্লীলতাহানি ঘটায়।’

বিষয়টি নিয়ে ঘটনার দিন রাতেই মারধরের শিকার রোখসানা বাদি হয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মারধর ও শ্লীলতাহানি ঘটনা আমলে নিয়ে শনিবার রাতে মামলাটি নথিভুক্ত করে।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ পীরজাদা শেখ মোহাম্মদ মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, ঘটনাটি নিয়ে নারী সদস্য রোখসানার দেয়া এজাহার নথিভুক্ত করা হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে, শনিবার দুপুরে চেয়ারম্যান আনোয়ার পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে রোখসানার বিরুদ্ধে তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও লাঞ্ছিতের অভিযোগ আনেন।

সংবাদ সংম্মেলনে তিনি বলেন, ‘২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সকল ইউপি সদস্যদের নিয়ে ইউনিয়ন
পরিষদে ভিজিডি কার্ড সংক্রান্ত জরুরি আলোচনায় বসি। আলোচনার এক পর্যায়ে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রফিকুল ইসলাম আমার কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন যে তাকে রোকসানা বেগম মোবাইল ফোনে অকথ্য ভাষায় বাবা-মা তুলে গালিগালাজ করেছে।

এ বিষয়ে সকল ইউপি সদস্যের সামনে আমি জানতে চাইলে রোকসানা উত্তেজিত হয়ে আমাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালি-গালাজ করতে করতে কক্ষ ত্যাগ করে এবং রাস্তায় জনগণের সামনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ও আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে বাড়ি চলে যায়।

কিছুক্ষণ পর দেশীয় ধারালো রামদা নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে ফিরে আসে এবং আমার প্রাণনাশের চেষ্টা করে। এ সময় উপস্থিত স্থানীয় লোকজন তাকে নিবৃত করে। এর পর সে ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিয়ে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে যে তার চুলের মুঠি ধরে জুতাপেটা করেছি, বসতবাড়িতে হামলা করে ১৫/২০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করেছি, শ্লীলতাহানি করেছি। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।’


আরো সংবাদ



premium cement