২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঈশ্বরগঞ্জে ২৫ লাখ টাকার জাল নোট উদ্ধার, আটক ৩

ঈশ্বরগঞ্জে ২৫ লাখ টাকার জাল নোট উদ্ধার, আটক ৩ - ছবি : সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার একটি বাড়িতে তল্লাশি করে প্রায় ২৫ লাখ টাকার জাল নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় এরসাথে জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

শনিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অভিযান শেষে ওই জাল নোটগুলো উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া নোটগুলো এক হাজার টাকার
নোট দ্বারা বান্ডিল করা ছিল।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকালে দু’টি শিশু ঈশ্বরগঞ্জ পৌর শহরের একটি দোকান থেকে মিষ্টি কেনার পর দোকানিকে এক হাজারের একটি নোট দেয়। এ সময় শিশুদের হাতে এক হাজারের নোটের একটি বান্ডিল দেখতে পায় দোকানি। পরে সেখানকার স্থানীয়দের মনে সন্দেহ দেখা দিলে শিশু দু’টিকে আটকে রেখে থানায় খবর দেয় তারা। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে এসে শিশু দু’টিকে নিয়ে জড়িতদের ধরতে কাজ করতে থাকে। একপর্যায়ে শিশুদের পিছু পিছ পুলিশ উপজেলার বৃ-দেবস্থান গ্রামে পৌঁছায়। পরে জানা যায়, ওই জাল টাকার মালিক ওই গ্রামের মো: কাশেম মিয়া (৬৫) নামে এক ব্যক্তির।

পরে পুলিশ কাশেম মিয়ার ঘরে প্রবেশ করে একটি বড় ট্রাংক থেকে বিপুল পরিমাণ কাগজ উদ্ধার করে। ওই কাগজগুলোতে টাকার নোটে নিরাপত্তা সূতার মতো দেখতে পেয়ে সন্দেহ হয় পুলিশের। একপর্যায়ে বাড়ির মালিক কাশেম ও শিশু দুটিকে একটি ঘরে রেখে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে ঈশ্বরগঞ্জ থানার এসআই মো: আশরাফুল একটি চালাঘরে ঢুকে বালি খুঁড়ে একটি ব্যাগ উদ্ধার করেন। ব্যাগটি খুলে ভেতরে থাকা ২৪টি এক হাজার টাকার নোটের বান্ডিল উদ্ধার করে। একেকটি বান্ডিলে এক শ’টি করে এক হাজার টাকার নোট রয়েছে।

অন্যাদিকে শিশুদের হাত থেকে ৯০টি এক হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়েছে। এরপর পুলিশ আরেকটি ঘরের সিলিং তল্লাশি করে নিরাপত্তা সূতার মতো দেখতে দুই বান্ডিল রাঙতা কাগজ উদ্ধার করে। তবে পুলিশি তল্লাশি চলার সময় কাশেম মিয়ার স্ত্রী ফরিদা বেগম পালিয়ে যান। আর এ সময় বাড়ির একটি কক্ষে আটকে রাখা হয় মালিক কাশেম মিয়াকে।

পুলিশ কাশেম মিয়াকে আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জাল নোট সম্পর্কে তিনি কোনো তথ্য দেননি। তবে এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, কাশেম মিয়ার তিন ছেলে ও ছয় মেয়ে। বড় ছেলে ডালিম মিয়া (৪০) বেকার জীবনযাপন করেন। তিনি বেশ কয়েকটি মামলার আসামি। পুলিশ তার খোঁজে কয়েকদিন পর পর বাড়িতে আসে। এ কারণে তিনি পলাতক থাকেন।

অন্যদিকে এক মেয়ের জামাইয়ের নাম মো: সেলিম মিয়া (৪৫)। তিনি নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার গড়াডোবা ইউনিয়নের ডুমরি গ্রামের আবদুল আজিজের ছেলে। সেলিম মিয়া কয়েক মাস আগে ঢাকায় বিপুল পরিমাণ জাল টাকাসহ র‍্যাবের হাতে ধরা পড়েছিলেন। বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত আছেন।

সূত্রটি জানায়, গত দুই দিন আগে সেলিম শ্বশুর বাড়ি থেকে একটি বস্তা নিয়ে গেছেন। শিশুদের দেয়া তথ্য ও শ্বশুর বাড়ি থেকে বস্তা নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় গ্রামের লোকজন ধারণা করছেন সেলিম তার শ্বশুর বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা সরিয়ে নিয়েছেন।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পীরজাদা শেখ মোহাম্মদ মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, দুটি শিশুকে ধরার পর ওদের সাথে নিয়ে অভিযান করে জাল টাকা উদ্ধার করা হয়েছে এবং এখনো অভিযান অব্যাহত আছে। অভিযান শেষে আইগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনায় জড়িতদের তিনজনকে আটক করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement