ভালুকায় লাশ নিতে হয় প্রাচীর টপকে
- আসাদুজ্জামান, ভালুকা (ময়মনসিংহ)
- ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ১২:৩০, আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ১২:৪৬
চলাচলের রাস্তা না থাকায় ময়মনসিংহের ভালুকা পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের ভান্ডাব সিলমাপাড়ায় বাসিন্দাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলাচল করতে হয় প্রাচীর টপকে। রাস্তার অভাবে রোগী আনা নেয়া, লাশ বের করাসহ সাধারণ চিকিৎসাসেবা নিতে ৪০ বছর দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
বুধবার বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রাবেয়া খাতুন (৬০) নামে এক মহিলার লাশ জানাজার মাঠে নেয়া হয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রাচীর টপকিয়ে।
জানাজায় মরহুমার ভাই মো.আছমত আলী উপস্থিত মুসল্লিদের সামনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, রাস্তা না থাকায় তার বোনের লাশ আনতে হয়েছে প্রাচীরের ওপর দিয়ে। অথচ তাদের পরিবার হাসপাতালের জন্য দেড় একর জমি দিয়েছেন। কিন্তু তারা চলাচলের জন্য কোনো রাস্তা পাননি।
তিনি বলেন, ৪০ বছর ধরে তারা রাস্তার জন্য চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। তার মা-বাবা ও চাচাদের লাশ এভাবেই প্রাচীর টপকে পার করেছেন।
তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে চলাচলের জন্য একটি রাস্তা করে দেয়ার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন।
জানাজায় উপস্থিত সাবেক মেম্বার আবুল কালাম আজাদ জানান, সিলমাপাড়া এলাকার প্রায় ৫০টির মতো পরিবারের কয়েক শ’ মানুষ রাস্তার অভাবে দীর্ঘ দিন ধরে হাসপাতালের প্রাচীর টপকে কষ্ট করে আসা যাওয়া করছে।
তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন মহলে রাস্তার জন্য আবেদন করেও কোনো প্রতিকার পাননি।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম জানান, সিলমাপাড়ার কয়েক শ’ মানুষ দীর্ঘ দিন ধরে রাস্তার অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। দৈনন্দিন জীবনে তাদের হাট-বাজার, আসবাবপত্র, খাদ্যসামগ্রী সব কিছুই বহন করতে হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রাচীর টপকে।
মহল্লার মসজিদের ইমাম শাহজাহান মিয়া জানান, তিনি ২৬ বছর ধরে এখানে ইমামতি করছেন। এই মহল্লায় রাস্তা না থাকায় কয়েক শ’ মানুষের চলাচলের দুরাবস্থা দেখে তিনি খুবই মর্মাহত। মানুষ মারা গেলে প্রাচীর টপকিয়ে লাশ আনা নেয়া করতে হয়।
তার মতে, মানুষের জীবনে এর চেয়ে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না। তিনি অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ সময়ে স্থানীয়ভাবে কোনো প্রতিকার পাননি তারা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা