মুদি দোকানির ১ মাসের বিদ্যুৎ বিল ৯ লক্ষাধিক টাকা!
- গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা
- ১২ মার্চ ২০২১, ১৭:৪৯
ময়মনসিংহের গৌরীপুরের মুদি দোকানি মো: হেলাল উদ্দিন। গত নভেম্বর মাসে তার বিদ্যুৎ বিল এসেছে ৯ লাখ ২৪ হাজার ৩২৭ টাকা। অক্টোবর মাসেও বিদ্যুৎ বিল এসেছিল আট হাজার ১১৪ টাকা। বিদ্যুতের ইউনিট ছিল ১২ হাজার ৯৬০। এক মাসেই রিডিং ৯৩ হাজার ৮১৪ ইউনিট উঠে যায়। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভাগে আবেদন করেও তিনি কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।
এমন হয়রানির শিকার শুধু হেলাল উদ্দিন একাই নয়। ওই এলাকার শত শত গ্রাহক পোহাচ্ছেন এমন ভোগান্তি।
গৌরীপুরের মৃত তালে হোসেনের ছেলে মো: হযরত আলীর অভিযোগ, জানুয়ারি মাসে তার বিদ্যুৎ বিল এসেছে ৩৭১ টাকা। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসে বিল হয়েছে ১৩ হাজার ৬৪৭ টাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্রামের গুজন আলীর ছেলে আব্দুল খালেকের জানুয়ারি মাসে এক হাজার ৬০৩ টাকা আর ফেব্রুয়ারি মাসে ১৮ হাজার ১০০ টাকা বিল এসেছে। আফিস আলীর ছেলে মো: নবী হোসেনের জানুয়ারি মাসে বিদ্যুৎ বিল এসেছে ৩৯৩ টাকা। অথচ ফেব্রুয়ারি মাসেই বিল হয়েছে ২৬ হাজার ৬০১ টাকা।
আরব আলীর ছেলে আবু বক্কর অভিযোগ করে বলেন, ‘জানুয়ারি মাসে ৫৪৪ টাকা আর ফেব্রুয়ারিতেই ৯ হাজার ২৭৯ টাকা বিল করা হয়েছে।’
নিখিল চন্দ্র ধরের ছেলে নন্দন চন্দ্র ধর জানান, ‘জানুয়ারি মাসে এক হাজার ১৪৩ টাকা ও ফেব্রুয়ারি মাসে বিল এসেছে পাঁচ হাজার ৫১২ টাকা।’
জানুয়ারি মাসে ৫৪৩ টাকা ও ফেব্রুয়ারি মাসে ৯ হাজার ২৭৯ টাকা বিদ্যুৎ বিল এসেছে জনু শেখের ছেলে রোমালী মন্ডলের। মৃত কমির উদ্দিনের ছেলে আবুল কাসেমের ফেব্রুয়ারি মাসে বিদ্যুৎ বিল এসেছে ১৩ হাজার ৬৫ টাকা।
একই গ্রামের আবুল কালামের অভিযোগ, বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন মিটার না দেখেই ‘ভুতুড়ে’ বিল করছেন। তার মিটার রিডিং ১২ হাজার ১৫৫ ইউনিট, অথচ বিল করা হয়েছে ১৬ হাজার ২৩৫ ইউনিটের।
ময়মনসিংহের গৌরীপুর বিদ্যুৎ বিভাগের দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে এসব ‘ভুতুড়ে’ বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহারের জোর দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন গ্রাহকরা।
শুক্রবার উপজেলার দুই নম্বর গৌরীপুর ইউনিয়নের কোনাপাড়া কদমতলী বাজারে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযোদ্ধা মো: ফজলুল হক। তিনি বলেন, ‘যত ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করব, শুধু তার বিল দেব। অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করে মাতৃভূমি স্বাধীন করেছি। স্বাধীন দেশে বিদ্যুৎ বিভাগের আচরণ দেখে মনে হয়, আমরা এখনো পরাধীন। মনে হচ্ছে, তারা যাই করবে আমাদের তাই মেনে নিতে হবে। এটা হতে দেয়া হবে না।’
এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা মো: হাসিম উদ্দিন, মো: মফিজ উদ্দিন, দুই নম্বর গৌরীপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো: হযরত আলী, উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কর, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো: মিজানুর রহমান, গৌরীপুর পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন, ব্যবসায়ী মো: রইছ উদ্দিন প্রমুখ।
এ ব্যাপারে গৌরীপুর আবাসিক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) নিরঞ্জন কুন্ডু বলেন, গ্রাহকদের অনুমোদনবিহীন কাজে বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য আইনের ৩৮ ধারায় এ জরিমানা করা হয়েছে। আবাসিক সংযোগ নিয়ে সেচ বা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা