১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গফরগাঁওয়ে খোলা আকাশের নীচে ফেলে রেখে বৃদ্ধা মাকে নির্যাতন : ছেলে ও নাতী আটক

-

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে হাজেরা বেগম (৮০) নামে এক বৃদ্ধা মাকে মারধর করে খোলা আকাশের নীচে ফেলে রাখে পাষণ্ড ছেলেরা। ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার উপজেলার গফরগাঁও ইউনিয়নের উথুরী গ্রামে। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস ছোবাহান কালামিয়া ও প্রতিবেশীদের সহায়তায় হাজেরা বেগমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। শনিবার ইউপি সদস্যের সহযোগিতায় ছেলেদের বিচার চেয়ে গফরগাঁও থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ রোববার বিকেলে হাজেরা বেগমের ছেলে আব্দুস সাত্তার ও নাতী তাফাজ্জলকে আটক করলেও অন্য ছেলেরা পালিয়ে গেছেন।
পুলিশ ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গফরগাঁও ইউনিযনের উথুরী গ্রামের মৃত রেসমত আলীর স্ত্রী হাজেরা বেগমের ৩ ছেলে-আব্দুস সাত্তার (৫০), সোহরাব উদ্দিন (৪৫) ও সাইফুল ইসলাম (৪০)। প্রায় ১৬ বৎসর পূর্বে স্বামী মারা যাওয়ার সময় হাজেরা বেগমের নামে ১২ কাঠা জমি লিখে দেয়। স্বামীর মৃত্যুর পর ছেলেরা হাজেরা বেগমকে কিছু দিন ভরণ পোষণ করে। এক পর্যায়ে ছোট ছেলে সাইফুল ইসলাম গোপনে জোর করে মা হাজেরা বেগমের কাছ থেকে ১২ কাঠা জমি নিজের নামে লিখে নেয়। এ খবর পাওয়ার পর অন্য ছেলেরা মায়ের ভরণ পোষণ ও খোঁজ খবর নেয়া বন্ধ করে দেয়। এ অবস্থায় হাজেরা বেগম ছোট ছেলে সাইফুলের সংসারে খাওয়া দাওয়া করতেন। কিন্তু সাইফুলের সংসারে দিন দিন মা হাজেরা বেগমের আদর কমতে থাকে। এমন কি সাইফুল মাকে ভাত কাপড়েও কষ্ট দিতে থাকে। তিন বেলার মধ্যে কখনো এক বেলা খাবার দিত, কখনো এক বেলাও খাবার দিত না। উল্টো ছেলে সাইফুল মাকে মারধর অত্যাচার করতো। এ অবস্থা স্থানীয়ভাবে একাধিকবার বিচার সালিশও হয়েছে। কিন্তু জমি লিখে নেয়ায় বিচার সালিশে ছোট ছেলে সাইফুলকেই মা হাজেরা বেগমের ভরণ পোষণের দায়িত্ব দেয়া হয়। সাইফুল কোন বিচার সালিশ না মেনে বৃহস্পতিবার সকালে মা হাজেরা বেগমকে মারধর করে বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে খোলা আকাশের নীচে ফেলে রাখে। টানা ৩ দিন বৃদ্ধা হাজেরা বেগম না খেয়ে রাস্তার পাশে খোলা আকাশের নিচে পড়েছিলেন। এতে হাজেরা বেগম অসুস্থ্য হয়ে পড়লে শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস ছোবাহান কালা মিয়া প্রতিবেশীদের সহায়তায় বৃদ্ধা হাজেরা বেগমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
গফরগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল আহাদ খান বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমি নিজে হাসপাতালে গিয়ে বৃদ্ধা হাজেরা বেগমের খোঁজ খবর নিয়েছি। এ ঘটনায় হাজেরা বেগমের ছেলে ও নাতীকে আটক করা হয়েছে। অন্য ছেলেরা পলাতক রয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement