এডিসি জিসান বরখাস্ত, আবদুল্লাহর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট স্থগিত
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ২৫ জুন ২০২৪, ০০:০৫
সাম্প্রতিক দুটি চাঞ্চল্যকর দুর্নীতির ঘটনা জানাজানির নেপথ্যে জড়িত সন্দেহে দুই জনের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এবং অন্যটি ফেসবুক কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে নেয়া হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস করার অভিযোগে গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) জিসানুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে এনবিআরের প্রভাবশালী কর্মকর্তা ড. মতিউর রহমানের ছেলের ছাগল-কাণ্ড সামনে আনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সাইয়েদ আবদুল্লাহর অ্যাকাউন্ট স্থগিত করেছে ফেসবুক।
জানা গেছে, আছাদুজ্জামান মিয়ার ব্যক্তিগত তথ্য কীভাবে অনলাইনে গেলো, সেটি নিয়ে এর মধ্যে তদন্ত করে পুলিশ। এ ঘটনায় এডিসি জিসানুল ছাড়াও পুলিশের আরও দুজন নন-ক্যাডার সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্ত হয়। তাদের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
গত রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের শৃঙ্খলা শাখা থেকে এডিসি জিসানুল হককে সাময়িক বরখাস্তের প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়। সচিব মো: জাহাংগীর আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জিসানুল হকের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, সাময়িক বরখাস্ত থাকাকালীন তিনি বাংলাদেশ সার্ভিস রুল অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন।
এর আগে আছাদুজ্জামান মিয়াকে নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আছাদুজ্জামান মিয়ার ইএসএএফ ছড়িয়ে পরে। ইএসএএফ ফরম হলো- ইলেকট্রনিক সাবস্ক্রাইবার অ্যাপলিকেশন ফরম, যা মূলত মোবাইল গ্রাহকরা পূরণ করে থাকেন। এ ফরমে একজন ফোন গ্রাহকের নাম, ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, আঙুলের ছাপসহ বিস্তারিত তথ্য থাকে।
ফরমটি প্রকাশের পর পুলিশের উচ্চপর্যায় থেকে বিষয়টি তদন্ত করতে বলা হয়। গাজীপুরের অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ নাজির আহমদ এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেন। ফরমটিতে থাকা কিউআর কোড পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গাজীপুর মহানগর পুলিশের বৈধ আড়ি পাতা শাখার একজন এএসআই ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার থেকে এটি ডাউনলোড করেছেন। তদন্তে বেরিয়ে আসে, গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার পদের এক কর্মকর্তা গত ১৩ ফেব্রুয়ারি আছাদুজ্জামানের মোবাইল ফোনের তথ্য চেয়ে বৈধ আড়ি পাতা শাখার এক এসআইকে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা দেন। সেই বার্তার ভিত্তিতে তিনি অন্য একজন এএসআইকে সেটি ডাউনলোড করতে বলেন। পরে তা কর্মকর্তাকে দেয়া হয়। তদন্তে দেখা যায় অনলাইনে প্রকাশিত ফরমটি হুবহু সেই ফরম।
ছাগল-কাণ্ড প্রকাশে আবদুল্লাহর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট স্থগিত
এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মতিউরের ছেলের ছাগল-কাণ্ড সামনে আনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সাইয়েদ আবদুল্লাহর অ্যাকাউন্ট স্থগিত করেছে ফেসবুক। তাকে বলা হয়েছে, তার অ্যাকাউন্ট স্থগিতের কারণ ফেসবুকের নীতিমালা বা কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড লঙ্ঘন।
পবিত্র ঈদুল আজহার আগে ১২ লাখ টাকার ছাগলের বায়না করা তরুণ মুশফিকুর রহমান ইফাতের কর্মকাণ্ড, তার পরিচয় এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (পরে অপসারিত) মো: মতিউর রহমানের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে একাধিক পোস্ট দিয়েছিলেন সাইয়েদ আবদুল্লাহ।
পরে মতিউর গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, মুশফিকুর তার ছেলে নন। কিন্তু সাইয়েদ আবদুল্লাহর অনুসন্ধান ও গণমাধ্যমের খবরে বেরিয়ে আসে মুশফিকুর এনবিআরের কর্মকর্তা মতিউর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে মতিউর পরিবারের বিপুল সম্পদের তথ্য উঠে আসছে।
সরকার গত রোববার মতিউরকে এনবিআরের পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। এদিকে আদালত মতিউর এবং তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ ও ছেলে আহমদ তৌফিকুর রহমানের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।
অ্যাকটিভিস্ট পরিচয় দেয়া সাইয়েদ আবদুল্লাহ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ১৯ জুন পরিবারের ছবি দিয়ে মুশফিকুর ও মতিউরের সম্পর্কের বিষয়টি ফেসবুকে প্রকাশ করার পর রাতে তিনি নোটিফিকেশন পান যে তার অ্যাকাউন্টে কেউ অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে। তখন দুই ঘণ্টার জন্য ফেসবুক বন্ধ রাখা হয়। এরপর তা পুনরায় চালু হয়। কিন্তু ২২ জুন সকালে তিনি দেখতে পান তার অ্যাকাউন্ট ‘সাসপেন্ড’ বা স্থগিত করা হয়েছে। সাইয়েদ আবদুল্লাহ বলেন, অ্যাকাউন্ট স্থগিত করার ক্ষেত্রে ফেসবুক তাকে নির্দিষ্ট কোনো কারণ বলেনি। তবে জানানো হয়েছে, তার কর্মকাণ্ড ফেসবুকের নীতিমালার সঙ্গে মেলে না। এ কারণেই অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা হয়েছে।
সাইয়েদের অ্যাকাউন্ট স্থগিত করার ক্ষেত্রে ফেসবুক বলেছে, তারা তিনটি বিষয় অনুমোদন দেয় না-১. এমন কোনো অ্যাকাউন্ট তৈরি করা, যা অন্য কারো। ২. প্রতারণার জন্য অন্য কারো ছবি ব্যবহার করা এবং ৩. কোনো পেজ তৈরি করা, যা অন্যের হয়ে কথা বলে। এর মধ্যে কোনটি সাইয়েদ আবদুল্লাহর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, তা বলা হয়নি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা