মেট্রোরেলে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করতে হবে: আইপিডি
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১২ জুন ২০২৪, ০১:৫৮
আসন্ন জুলাই থেকে মেট্রোরেলে ভ্যাট আরোপের পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত বাতিলের ব্যাপারে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কোনো দিকনির্দেশনা না থাকায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি)। একই সাথে ঢাকার গণপরিবহন হিসেবে মেট্রোরেলের ব্যবহার তুলনামূলক ব্যয়সাশ্রয়ী ও সর্বজনীন করতে চূড়ান্ত বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আরোপিত ১৫ শতাংশ ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে আইপিডি।
গতকাল এক বিবৃতিতে আইপিডির পক্ষ থেকে বলা হয়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মেট্রোরেলের টিকিটে ভ্যাট মওকুফের বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি, যা অত্যন্ত সঙ্কটজনক বিষয় বলে মনে করে আইপিডি। মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর বর্তমানে ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) মওকুফ আছে, যার সময়সীমা ৩০ জুন পর্যন্ত। প্রস্তাবিত বাজেটে মেট্রোরেলের ভ্যাট মওকুফের সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়ে কিছু না বলার অর্থ হচ্ছে আগামী ১ জুলাই থেকে মেট্রোরেলের টিকিটে ১৫ শতাংশ ভ্যাট বসছে, ফলে বাড়বে মেট্রোরেলের ভাড়া। ফলে মেট্রোরেল ব্যবহারকারী ঢাকার স্বল্পবিত্ত ও মধ্যবিত্তের অনেকেরই জন্য মেট্রোরেলের নিয়মিত ব্যবহার সাধ্যের বাইরে চলে যেতে পারে। মেট্রোরেল এ ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে যোগাযোগমন্ত্রীর সুস্পষ্ট অবস্থানের পরও বাজেটে এই বিষয়ে যথাযথ ঘোষণা না আশায় সাধারণ জনগণের পক্ষ থেকে হতাশা ব্যক্ত করছে আইপিডি।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ঢাকা শহরে মেট্রোরেলের বিদ্যমান ভাড়া এশিয়ার অন্য অনেক দেশের তুলনায় এমনিতেই বেশি আছে। ভারতের কলকাতা, পাকিস্তানের লাহোর, ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা, মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর প্রভৃতি মেট্রোরেলে চলাচলের ব্যয় বাংলাদেশের মেট্রোরেলের বর্তমান ভাড়ার তুলনায় অনেক কম। ঢাকায় মানসম্মত গণপরিবহনের তীব্র সঙ্কট এবং মাত্রাতিরিক্ত যানজটের কারণে অনেক সাধারণ মানুষ দৈনন্দিন অন্যান্য ব্যয় হতে কাটছাঁট করেই সাধ্যের অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই মেট্রোরেলে নিয়মিত যাতায়াত করছেন। উত্তরা-মতিঝিলের মধ্যবর্তী রুটের অনেক স্বল্প আয়ের লোকেরা বিদ্যমান ভাড়াতেই মেট্রোরেল চড়বার সামর্থ্য না থাকায় একান্ত বাধ্য হয়েই এই রুটের মানহীন বাসে চলাচল করছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, মেট্রোরেলের যাত্রী পরিবহন সক্ষমতা দৈনিক ৫ লাখ হলেও এখন ঢাকায় প্রায় ৩ লাখ যাত্রী এটি ব্যবহার করছে। ফলে এখনও সক্ষমতার পুরো মাত্রায় মেট্রোরেলের ব্যবহার করতে পারছি না আমরা। এ অবস্থায় মেট্রোরেলে ১৫ শতাংশ ভ্যাট যুক্ত হলে বর্ধিত ভাড়ার কারণে এটির ব্যবহারকারী কমে যেতে পারে। রাজধানী ঢাকার মতো মেগা সিটিতে যাতায়াত ও পরিবহনে মানসম্মত গণপরিবহন ব্যবস্থার সুযোগ মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। এসডিজির ধারণায় অন্যতম হচ্ছে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নগর যেখানে পরিসেবা ও নাগরিক সুবিধাদি সব আয়ের মানুষের সাধ্যের মধ্যে রাখাই রাষ্ট্রের অন্যতম লক্ষ্য। মেট্রোরেলে ভ্যাটের মতো পরোক্ষ কর বসিয়ে রাজস্ব আদায় না করে বাজেটে অতি ধনীদের আয়কর এর মতো প্রত্যক্ষ কর বাড়ানো ও খেলাপি ঋণ কমানোতে নজর দেয়া উচিত বলে মনে করে আইপিডি। ফলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের চূড়ান্ত বাজেটে মেট্রোরেলের জন্য এনবিআর প্রস্তাবিত ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত বাতিলের সুস্পষ্ট ঘোষণার দাবি জানাচ্ছে আইপিডি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা