লিফটের দরজায় ধাক্কা দেয়ার অভিযোগ স্বজনদের বিরুদ্ধে তদন্ত টিমের কাজ শুরু
- গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি
- ১৪ মে ২০২৪, ০১:০৮
গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের লিফটে আটকে থেকে রোগী মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদফতরকে চিঠি দিয়ে অবহিত করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিঠিতে ‘লিফটে আটকে পড়া রোগীসহ লোকজন ধাক্কাধাক্কি করায় লিফটের দরজার নিরাপত্তাব্যবস্থা কাজ করেনি’ বলে দাবি করা হয়। চিঠিতে আরো দাবি করা হয়, ‘লিফটে রোগীসহ অন্যরা ৪৫ মিনিট নয়, মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিট আটকে ছিলেন’। গতকাল সোমবার হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা: জাহাঙ্গীর আলম চিঠি পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গণপূর্ত বিভাগের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ দিকে রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত স্বাস্থ্য অধিদফতরের তিন সদস্যের তদন্ত টিম গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেছে।
রোববার বিকেলে হাসপাতালের পক্ষ থেকে অবহিতকরণ চিঠিটি স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবরে পাঠানো হয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, রোববার বেলা সোয়া ১১টার দিকে হাসপাতালের নবম ও দশম তলার মাঝখানে একটি লিফট হঠাৎ আটকে যায়। বিদ্যুৎবিভ্রাটের কারণে লিফটটি আটকে গেলে স্বয়ংক্রিয় রেসকিউ ডিভাইস কাজ করার জন্য এক মিনিট সময়ের প্রয়োজন হয়; কিন্তু লিফটে থাকা লোকজন ও আটকে পড়া রোগীসহ তাদের স্বজনরা দরজায় ধাক্কাধাক্কি করায় লিফটের নিরাপত্তাব্যবস্থা কাজ করেনি।
রোগীর অসুস্থতা নিয়ে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, রোগীটি (নিহত মমতাজ) হার্টের রোগী ছিলেন। তাৎক্ষণিক রোগীকে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয় এবং কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চিঠিতে বলা হয়েছেÑ ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে রোগী ৪৫ মিনিট লিফটে আটকে থাকার তথ্য সঠিক নয়’।
তদন্ত টিম তাজউদ্দীন মেডিক্যালে : শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে লিফটে আটকা পড়ে রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত স্বাস্থ্য অধিদফতরের তদন্ত টিম সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায়। তিন সদস্যের তদন্ত টিমের নেতৃত্ব দেন কমিটির প্রধান স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (ডেন্টাল) ডা: মাহমুদা বেগম। কমিটির অন্য দুই সদস্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো: খায়রুজ্জামান ও সহকারী পরিচালক মো: মাসুদ রেজা খান তার সাথে ছিলেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান বলেন, হাসপাতালে লিফটে আটকে পড়ে মৃত্যুর খবর মিডিয়ায় প্রচার হওয়ার পর ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে ঘটনার তদন্তে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ তদন্তের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। সোমবার শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মো: আমিনুল ইসলাম, উপ-পরিচালক মো: জাহাঙ্গীর আলমসহ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক, নার্স, লিফটের অপারেটর, ওয়ার্ডবয়, গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বক্তব্য নেয়া হয়েছে। তদন্ত টিমের সদস্য উপ-পরিচালক মো: খায়রুজ্জামান বলেন, রোগীর স্বজনদের সাথেও এ ব্যাপারে কথা বলা হবে। তাদের সাথে টেলিফোনে কিংবা ফোন করে নিয়ে এসে কথা বলা হবে।
এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে।
উল্লেখ্য, গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের লিফট আটকে রোগী মমতাজ বেগমের (৫৩) মৃত্যু হয়। তিনি গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বারিগাঁও গ্রামের শরীফ উদ্দীনের স্ত্রী।
নিহতের স্বামীসহ স্বজনদের দাবি, লিফটের ভেতর থেকে আটকে পড়াদের উদ্ধারের জন্য বারবার আবেদন জানালেও লিফট অপারেটরসহ সংশ্লিষ্টরা কোনো উদ্যোগ না নিয়ে সেখান থেকে তারা চলে যায়। একপর্যায়ে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করা হলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মমতাজের লাশসহ আটকে পড়াদের লিফটের ভেতর থেকে উদ্ধার করেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা