১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার

খেলাপি ঋণ কমাতে ১ শতাংশ নগদ আদায় করতে হবে

-

ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এজন্য দ্রুত খেলাপি আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে আগামী ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে মোট খেলাপি ঋণের স্থিতির মধ্যে কমপক্ষে ১ শতাংশ নগদ আদায় করতে হবে। পাশাপাশি আদালতের বাইরে মধ্যস্ততার মাধ্যমে দ্রুত ঋণ আদায় করতে হবে। একই সাথে উভয় পক্ষকে ছাড় দিয়ে সমঝোতায় আসতে হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এক সার্কুলার জারি করা হয়েছে। সার্কুলারটি গতকালই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীকে অবহিত করা হয়েছে।
জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক খেলাপি ঋণ কমাতে একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে। এতে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে খেলাপি ঋণ ৮ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে গতকাল নতুন নির্দেশনা দেয়া হলো।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, খেলাপি ঋণ আদায়ে দীর্ঘসূত্রতা এড়ানোর লক্ষ্যে মধ্যস্থতার মাধ্যমে ঋণ আদায় বাড়াতে হবে। এ লক্ষ্যে খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য নোটিশে গ্রাহকের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা বা সদিচ্ছাকে বিবেচনায় নিয়ে কেস টু কেস ভিত্তিতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিতে হবে। ব্যাংকার ও গ্রাহক উভয় পক্ষের সম্মতিতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আর্বিটেশন সেন্টারসহ অনুরূপ প্রতিষ্ঠানে তালিকাভুক্ত দক্ষ ও অভিজ্ঞ মধ্যস্থতাকারী অথবা অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, আইনজীবী বা অন্য যেকোনো উপযুক্ত ব্যক্তি যাদের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে সফলতার ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে তাদের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নিয়োগ করা যাবে। মধ্যস্থতাকারী নিযুক্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিরোধীয় পক্ষ ও মধ্যস্থতাকারী পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে পারিশ্রমিকের পরিমাণ, পরিশোধকারী পক্ষ ইত্যাদি নির্ধারণ এবং যথাসময়ে তা পরিশোধ নিশ্চিত করতে হবে। মধ্যস্থতাকে সফল করা এবং খেলাপি ঋণ দ্রুত আদায়ের স্বার্থে প্রয়োজনে কেস টু কেস ভিত্তিতে বিদ্যমান নির্দেশনা মোতাবেক ব্যাংক কর্তৃক ছাড় দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা যাবে।

সার্কুলারে বলা হয়, ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ আদালতের মাধ্যমে আদায়ের প্রক্রিয়াটি দীর্ঘ সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। এ কারণে খেলাপি ঋণ কমানো যাচ্ছে না। খেলাপি ঋণ কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এর মধ্যে আগামী ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে মোট খেলাপি ঋণ স্থিতির কমপক্ষে ১ শতাংশ নগদ আদায় করতে হবে। বর্তমানে খেলাপি ঋণ প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা। এর ১ শতাংশ নগদ আদায় করলে কমপক্ষে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা নগদ আদায় হবে। এর বাইরে ঋণ অবলোপনসহ অন্যান্য খাত মিলিয়ে প্রায় ২ লাখ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ রয়েছে। এগুলো আদায়ের ব্যাপারে এতে কিছু বলা হয়নি। তবে এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক সার্কুলারে অবলোপন করা ঋণ আদায়ে ব্যাংকে আলাদা ইউনিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। বর্তমানে অবলোপন করা ঋণের পরিমাণ প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকা। পরিমাণ, পরিশোধকারী পক্ষ ইত্যাদি নির্ধারণ এবং যথাসময়ে তা পরিশোধ নিশ্চিত করতে হবে। মধ্যস্থতাকে সফল করা এবং খেলাপি ঋণ দ্রুত আদায়ের স্বার্থে প্রয়োজনে কেস টু কেস ভিত্তিতে বিদ্যমান নির্দেশনা মোতাবেক ব্যাংক কর্তৃক ছাড় প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করা যাবে।


আরো সংবাদ



premium cement