১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সাংবাদিক শামসুজ্জামানের মুক্তি দাবিতে ঢাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

-

প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসের নিঃশর্ত মুক্তিসহ তিন দফা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করে তারা। এর আগে মধুর ক্যান্টিন থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
সমাবেশে বক্তারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল, বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ করা; র্যাব হেফাজতে নিহত সুলতানা জেসমিন হত্যাকাণ্ডের বিচার; এবং গ্রেফতারকৃত সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। বক্তারা বলেন, এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকদের নির্যাতন করা হয়। লেখক মোশতাককে মারা হয়েছে, ফটোসাংবাদিক কাজলকে নির্যাতন করা হয়েছে। এখন শামসুজ্জামানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই আইন বাতিল করতে হবে। র্যাব হেফাজতে নিহত সুলতানা জেসমিন হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার করতে হবে।
ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মিতু সরকার বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রধান দৃষ্টান্ত হলো মানুষকে গুম করে দেয়া, প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে রোধ করা, তাকে সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে মেরে ফেলা। এসবের বিরুদ্ধে আপনাদের সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে।
বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায় বলেন, ভোরবেলা যখন মানুষ ঘুমাচ্ছে তখন সাংবাদিকদের নির্যাতন করতে ধরে নিয়ে আসা হয়। এই ফ্যাসিবাদ সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন করে যেতে হবে। আমরা কথা দিচ্ছি যারা আমাদের কণ্ঠরোধ করতে চায় সেই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমরা আমাদের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে আন্দোলন করে যাবো।
মতিউর রহমানের গ্রেফতার দাবিতে সড়ক অবরোধ
এ দিকে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ‘অসত্য ও হলুদ সাংবাদিকতা’ করার অভিযোগ এনে তাকে গ্রেফতার ও তার বিচার দাবিতে শাহবাগে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’ এর ব্যানারে বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। ব্যানারে সাধারণ শিক্ষার্থী থাকলেও মূলত সবাই ছিলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। গতকাল সকাল ১০টা থেকে শাহবাগে জড়ো হতে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ইউনিটের নেতাকর্মীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগ মোড়ে দাঁড়িয়ে রাস্তা অবরোধ করেন তারা। এতে যান চলাচল স্থবির হয়ে পড়ে। তৈরি হয় দীর্ঘ যানজট। প্রায় এক ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ থাকার পর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সেখানে যান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত। এর কিছুক্ষণ পরে অবরোধ উঠিয়ে নেয়া হয়।
এ সময় সভাপতি শয়ন বলেন, ছাত্রসমাজ ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে। আমরা ছাত্রলীগ তাদের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। যেহেতু রমজান তাই বেশিক্ষণ এই মোড় অবরোধ করে জনদুর্ভোগ বাড়াব না।
সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, ১৯৭২ থেকে ’৭৪ সাল পর্যন্ত জাতির পিতাকে পরিবারসহ হত্যার যে পরিবেশ তৈরি করেছিল, এ দেশের সাম্রাজ্যবাদের একটি এশীয় দালাল এ কাজ করেছে। বর্তমান সময়েও এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। তিনি বলেন, প্রথম আলো ও সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ছাত্রলীগ একমত পোষণ করছে।
ঢাবি ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকুর রহমান অমি সাধারণ শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে বলেন, আজকে এ অবস্থান কর্মসূচিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সমবেত হয়েছি যাতে আগামীতে তথ্যসন্ত্রাস বা গুজবসন্ত্রাস ছড়িয়ে কোনো ব্যক্তি স্বার্থ হাসিল করতে না পারে। মহান স্বাধীনতা দিবস আমাদের জাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। প্রথম আলো এবং প্রথম আলোর মতো যারা হলুদ সাংবাদিকতা করে তাদের বয়কট চাই।


আরো সংবাদ



premium cement